ভাইরাস অণুগল্প -অজয় কুমার বিশ্বাস
“কোনও অসুবিধে হচ্ছে না তো ম্যাডাম, হেলমেটটা ঠিক করে”•••
“হ্যাঁ আটকেছি, থ্যাঙ্কস।”
“ওয়েলকাম, আমার সীটের পেছনে ধরে নিন এবার।স্টার্ট দিচ্ছি”। ক্যাব-বাইকটা গর্জে উঠে দৌড় শুরু করল।
ভাস্বতী, ‘অরবিট’ কোম্পানির বাইক বুক করে ওর হাসপাতালের ডিউটিতে যাচ্ছে।অন্যদিন বাসেই যায়। কিন্তু এই ভরদুপুরে আজ যে কোনও ভাবে ঠিক সময়ে পৌঁছতেই হবে। কোনও বিকল্প নেই।
“আপনি তো বেশ করোনা কনসাস দেখছি।তা’ ভালো।”
“না হয়ে উপায় কী বলুন? দু’বার হয়ে গিয়েছে তো তাই প্রোটেকটিভ থাকতেই হয়। হসপিটাল ডিউটিতে আপনাদের তো রিস্কফ্যাক্টর আরও বেশি, তাই না ম্যাডাম?”
বাইক চালকের মুখে পরপর দুটো ইংরেজি শব্দ ভাস্বতীকে অবাক করল।”হুঁ সে তো বটেই, কিন্তু এই মাস্ক-ডিপেনডেন্স কবে যে ঘুচবে, কে জানে!”
“কেউ জানে না ম্যাডাম।এমন কী হু পর্যন্ত নয়। অবশ্য এই ডোমেইনটা আমার নয়, এখানে নাক গলানো মানে নিজের নাক কাটা যাওয়া আর কী!”
“না না আপনার নাক কাটা যাওয়ার কোনও চান্সই নেই।আমি তো আমি, আমাদের সীনিয়র ম্যানেজাররা পর্যন্ত এ’রকমই বলেন,বুঝলি, কেউ জানে না কবে এই ভাইরাসটার ফাইন্যাল ডেথ হবে”••• “এ কী আপনি আমার কথায় হাসছেন যে, আমি হাসির কথা কী বললাম!”
“সরি, হাসি পেয়ে গেল। কলেজের এক প্রোফেসরের কথা মনে এল। সব ক্লাসের সব ছেলেমেয়েদের উনি বলতেন তোরা সব ভাইরাসের গুষ্টি”•••
“আপনি কি ব্রটআউট ই এ্যন্ড এম’ কলেজ থেকে পাস আউট”!
কী হলো ঠিক বলছি কি না, নীরবতায় সম্মতি, বলুন ?
“হ্যাঁ, কিন্তু আপনি”•••
“আপনার নামটা কাইন্ডলি বলবেন?”
“বুকিং-মেসেজে দেখেননি?”
“না দেখিনি।”
“খুব ভুল করেছেন”
“আমি জানি আমি কী করেছি, আমার দু’চাকার ক্যাবে চড়া প্রথম নয়।নামটা বলুন প্লীজ”
“অভিমন্যু”•••
“অভিমন্যু সেন তাই তো?•••”গাড়িটা এক্ষুণি থামা অভি”
“সে কী ম্যাডাম, এখনও তো আসেনি আপনার ডেস্টিনেসান, আই মীন আপনার হসপিটাল,”••• “এনি প্রব্লেম ম্যাডাম?”
“ক্যাবটা থামালে প্রব্লেমটা বলতে পারব।”
“শিওর,আমি থামাচ্ছি।”
ভাস্বতী এক ঝটকায় বাইক থেকে নেমে অভিমন্যু-র একদম সামনে চলে আসে, নিজের মুখের স্কারফটা এক টানে নামিয়ে নেয়।
বলে,– ভাস্বতী নামটা বেশ খটমট না? অভিমন্যু চমকে ওঠে,– “এ কী ভাসু, তুই!”
“দেখা হয়ে গেল তো!”
“হ্যাঁ তাই তো।”
“থ্যাঙ্কস টু অরবিট।পালাতে পারলি না তো?”
“সেরকম কোনও প্রচেষ্টা ছিল না তো”!
“ছিল।”•••শোন,ভালোবাসাও একটা ভাইরাস অভি, কোনওদিন মরে না।”
“জানলাম।তোর ফোন বাজছে।”
“হ্যাঁ হাসপাতাল থেকে, ডাকছে।তোর ফোনটাও তো কাঁদছে অভি।”
” আবার বাইক ছোটাতে হবে”•••
“আর হারাস না কোনও নতুন কক্ষপথে, আসিরে। ভালো থাকিস।”
বাইকে স্টার্ট দিতে দিতে নিজেকেই শোনাল অভিমন্যু, ‘কী করে ভালো থাকব রে তোকে ছাড়া’!
।। সমাপ্ত।।
ভাইরাস অণুগল্প – সমাপ্তি
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
দমকা হাওয়ায়
চা বাগানের জালিয়াত
পথশিশু