আজও ভালোবাসি ছোটো গল্প – উত্তম চক্রবর্তী
আজ এতবছর পরে অরিন্দমকে দেখে অবাক হয়ে ওর দিকে চেয়ে রইল পিউ। সেই কলেজ জীবনে ওর প্রথম ভালোবাসা , একসাথে ঘোরাঘুরি, সিনেমা দেখা, বাড়ির অমতে বিয়ে করা আর প্রায় দুই বছর ওদের লোণ নিয়ে কেনা যাদবপুরের ফ্ল্যাটে স্বপ্নের সংসার করার টুকরো টুকরো ছবিগুলি চোখের সামনে ভেসে আসছিল পিউর। একবছর পর ওরা ঠিক করেছিল এবার একটা সন্তান নেবে পিউ আর অরিন্দম। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও ডাক্তার যখন জানালো পিউ কোনদিনই মা হতে পারবে না, দিনে দিনে অরিন্দমের বদলে যাওয়া, চাপা অশান্তি, কথা প্রায় বন্ধ শেষে বিছানা পর্যন্ত আলাদা করে অবশেষে দুটি বছরের মাথায় ডিভোর্স হয়ে যাওয়া।
পিউ প্রথম থেকেই নিজস্ব স্বাধিনতায় বিশ্বাসী। ডিভোর্সের পর আর বাপের বাড়ি আসানসোল ফিরে যায়নি। পরিবর্তন শুধু প্রথমে একটা হোস্টেল, এই হাসপাতালে এক বছরের নার্সিং ট্রেনিং নিয়ে চাকরি, আজ চার বছর বাদে পাইক পাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে একা থাকার অভ্যাস হয়ে যাওয়া। জানতে পারেনি যে প্রাক্তন আবার বিয়ে করেছে ওর বান্ধবী লীনাকে। আর আজ লীনার সন্তানের জন্ম দেবার জন্য এসেছে ওকে এখানে ভর্তি করতে। পিউ ইচ্ছা করেই মুখ ঘুড়িয়ে পাশ দিয়ে চলে গেল ওর ঘরে। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানল লীনার বেড নম্বর।
লীনার ডেলিভারি হল একটা ফুটফুটে মেয়ে। কিন্তু সার্জারি কেস ছিল, আর তাই দু বোতল রক্ত দিয়ে বাঁচাতে হল লীনাকে। অরিন্দম বা লীনা কেউই কিন্তু জানতে পারল না যে সেই দুই বোতল রক্ত দান করে লীনাকে, ওর প্রাক্তনের বর্তমান জীবন সাথীকে বাঁচিয়েছে আর কেউ নয়, পিউ, এই হাসপাতালের এক সুন্দরী ডিভোর্সি নার্স। পিউ শুধু দুর থেকে পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে আশীর্বাদ করল ওর প্রাক্তন স্বামীর মেয়ে সন্তানকে, দু চোখ বেয়ে নেমে এলো স্নেহের রসে ভরা উষ্ণ জলের ধারা। পিউ যে আজও ভালোবাসে অরিন্দমকে।
আজও ভালোবাসি ছোটো গল্প – সমাপ্তি
যে কেউ তাদের লেখা জমা দিতে চান। অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা জমা দিন পৃষ্ঠায় জমা দিন এবং যারা লেখা জমা দিচ্ছেন। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
ভালোবাসার দেবালোকে
বিজয়া দশমী
এক চিলতে রোদ্দুর