কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

Home » পূজা সংখ্যা ১৪৩০ » প্রবন্ধ » শতরূপে সত্যজিৎ

শতরূপে সত্যজিৎ

শতরূপে সত্যজিৎ প্রবন্ধ – সৌমিক পাহাড়ী

 কিছু কথা:-

ক্লাস ফোর এ টিভি তে প্রথম দেখেছিলাম ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমাটি। 

তখন সত্যজিৎ রায় কে, তাও চিনতাম না। 

 তবে সিনেমাটি দেখে আনন্দ পেয়েছিলাম খুব।

 ক্লাস সিক্সে প্রথম দেখা “সোনার কেল্লা” ও ” জয় বাবা ফেলুনাথ”। ব্যাস, সেই থেকে ফেলুদার প্রতি ভালোবাসা শুরু।

ফেলুদাকে চিনতে গিয়ে, আমি এসে পড়লাম এক বিরাট সমুদ্রে, যার আসল গভীরতা আজও মেপে চলেছি। এই মাপার কাজ চলবে অনন্তকাল ধরে, কারণ সমুদ্রটি ছিল ঐশ্বরিক জলে পরিপূর্ণ। 

সমুদ্রটির নাম? 

হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। সাগরটির নাম সত্যজিৎ রায়। 

      মানুষটির জীবনী ও সিনেমা,সাহিত্য নিয়ে আমার চর্চা শুরু হয় ওনারই লেখা বিশ্ববিখ্যাত বই “একেই বলে শুটিং” পড়ে। বইয়ের প্রথম পার্টটাই যথেষ্ট ছিল মনটাকে উন্মুক্ত করতে,

 ” অপুর সাথে আড়াই বছর “।

 পড়লাম ও ভাবতে লাগলাম কি কষ্টই না সহ্য করতে হয়েছে মানুষটিকে প্রথম সিনেমাটি তৈরি করার জন্য। ছবিতে গান নেই বলে যখন প্রোডিউসার রা বাঁকা হাসির মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছিল, ” রিফিউজ ” শব্দটা, তখন ওনার মনে আঘাত টা ঠিক কতটা লেগেছিল তা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা  দুঃসাধ্য। কিন্তু ‘আশা’ জিনিসটার তো এত সহজে মৃত্যু হয়না। তাই একদিন সমস্ত বাধা কাটিয়ে তিনি কাল্পনিক নিশ্চিন্দিপুর কে করে তুললেন জীবন্ত।  চিত্রনাট্য পর্যন্ত না দেখে খাতায় শুধু মাত্র কয়েকটা স্কেচ করে তিনি ভালোবাসার ইঁট গাঁথতে শুরু করলেন বড়াল গ্রামের মাটিতে। সেদিন মানুষটির কষ্টের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলার গ্রাম, মেঠো রাস্তা, রেলগাড়ি ও কাশবন। যে সেলুলয়েডের রুপোলি পর্দায় নায়ক-নায়িকার যুগলবন্দী দেখতে অভ্যস্ত ছিল দর্শকরা ,সেই পর্দায় তিনি এইভাবে সৃষ্টি করলেন বিপ্লব। এসব ঘটনা পড়ে যতটা না শিহরিত হয়েছিলাম ততটাই চোখ থেকে জল পড়ে গিয়েছিল। 

আজও ভাবতে কেমন অবাক লাগে না,  যে সিনেমাটি তৈরির পেছনে  এত সব কান্ড হয়েছিল, সেই সিনেমাটি প্রথম রিলিজ হয়েছিল নিউ ইয়র্কের মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট এ। 

     এবার আসি অন্য একটা সিনেমার কথায়, গুপী গাইন বাঘা বাইন। আচ্ছা বলুন তো মানুষটি কি জাদুকর ছিলেন? হয়তো তাই । কারণ ওই সময়ে দাঁড়িয়ে, এরকম ভাবনাচিন্তা করে সিনেমা তৈরি করতে একমাত্র এক জাদুকরই পারতেন। সিনেমাটা করার পিছনে মানুষটিকে যে কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছিল তা ওনার খেরোর খাতা দেখলেই বোঝা যায়। সাদা কালো ফ্রেমের মধ্যে দিয়ে তিনি  দেখিয়ে গেছেন রূপকথার গল্প, যেখানে আছে ভূতের রাজা, ভূতের নৃত্য, ম্যাজিক, বাঁশ বনের মধ্যে বাঘ ও আরো কত কি। একদিকে আট ফুট লম্বা বাঁশের মাচার উপর থেকে  গুপী বাঘা লাফ মারছে বরফ এবং মরুভূমির মধ্য ও মাচার নিচে রিভার্স মোশানে চলছে ক্যামেরা। আর ঠিক এই রকম ভাবেই তিনি দর্শকদের নিয়ে চলে গেলেন হুন্ডি, ঝুন্ডী ও শুন্ডী তে, ভাবা যায়?

( জয় বাবা ফেলুনাথ সিনেমায়ও ঠিক এইরকম ভাবে রিভার্স মোশন এ ক্যামেরা চালিয়ে অর্জুনের  ছুরি ছোঁড়ার দৃশ্যটি শুট হয়েছিল।) 

তাছাড়া  হাজার উট ও হাজার সৈন্য নিয়ে যুদ্ধে যাওয়া, আকাশ থেকে মিষ্টির হাঁড়ি পড়া ওসব  কেবল স্বপ্ন ছিল তখন সেলুলয়েডের পর্দায়। 

আর যার মাথায় এত বুদ্ধি, তার সিদ্ধিলাভ হবে নাতো, আর কার হবে? 

    তখনকার বলিউড সিনেমায় ও যা ছিল অলীক কল্পনা তাকেও তিনি বাস্তব করে তুলেছিলেন, “সোনার কেল্লা” সিনেমার উট ও ট্রেনের দৃশ্যর মাধ্যমে। 

আচ্ছা, সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা গুলো এত হিট কেন? 

কারণ একটাই মানুষটি বক্স- অফিস হিট করার  ইঁদুর দৌড়ের জন্য সিনেমা বানাতেন না, বানাতেন নিজের মনের তৃপ্তির জন্য । 

সাহিত্য:

 সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায় ছিলেন অন্য এক মানুষ।ওই স্বত্ত্বা কে বিশ্লেষণ করার মতো ভাষা কিংবা ক্ষমতা আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে আবিষ্কার হয়নি।

 ওনার সাহিত্যের বেশিরভাগ চরিত্রগুলোই যে ওনারই প্রতিকৃতি তা নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হয় না। ফেলুদা, শঙ্কু, তারিণীখুড়োর কথা যতই বলব ততই কম পড়ে যাবে। 

লেখক সত্যজিৎ রায়ের এর প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৪১ সালে। অমৃতবাজার পত্রিকায় তিনি লিখলেন সেই সময় একটি ইংরেজি গল্প, ” Abstraction “। 

ঠিক তার পরের বছর   ওই একই অমৃতবাজার পত্রিকায় লিখলেন আরো একটি ইংরেজি গল্প, 

“Shades of Gray” । 

এরপরে এলো ১৯৬১ সাল। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সাহায্যে সত্যজিৎ রায়, “সন্দেশ” পত্রিকার আবার নতুনরূপে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন। 

 প্রথম সংখ্যায়েই সত্যজিৎ রায় লিখলেন এডওয়ার্ড লেয়ারের একটি ইংরেজি কবিতার লিমেরিক, “পাপাঙ্গুল”। 

পরবর্তী সময়ে আমরা ওনার কাছ থেকে উপহার পেলাম, “বঙ্কুবাবুর বন্ধু”, প্রফেসর শঙ্কু, ফেলুদা,তারিণীখুড়োর মতো ভিন্ন স্বাদের গল্পগুলি।

চিত্রনাট্যকার সত্যজিৎ এবং লেখক সত্যজিৎ ছিল দুই ভিন্ন মেরুর। 

যেই সত্যজিৎ রায় সিনেমায় নারীদের মনস্তাত্ত্বিক পরিচয় সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারছেন ঠিক সেই সত্যজিৎ এর লেখার সময় হয়ে পড়ছেন নারীবিদ্বেষী। 

তার কারণ একটাই। উনি চাইতেন শিশু-কিশোরদের গল্প হওয়া চাই নির্ভেজাল। 

জটিল মনোভাবের পরিচয় না থাকাটাই বাঞ্ছনীয়। 

যদিও বা আমরা পরবর্তী সময়ে দেখতে পাই ফেলুদার বেশ কিছু গল্পে কয়েকটি নারী চরিত্রের আবির্ভাব ঘটেছিল। 

   গল্পগুলির ভালো- মন্দ  বিচার করার দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দিতেন পাঠকদের হাতে। ওনার ছোট ছোট চরিত্রগুলোর মধ্যে দিয়েও তিনি দেখিয়েছেন মূল্যবোধ কাকে বলে ও গল্পের আড়ালে লুকিয়ে রাখতেন মানবিকতার কথা। আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে যেখানে আমরা ‘যশোলোভ- অর্থলোভ’ এর দিকে ছুটছি, সেখানে দাঁড়িয়ে পটলবাবু ,নকুড়বাবু, হারুন দা, ক্যাপ্টেন কৃষ্ণান, বঙ্কুবাবুরা শিখাচ্ছে বেঁচে থাকার মন্ত্র। 

মধ্যবিত্ত বাঙালিরা যে ঠিক কী করতে পারে তার উদাহরণ আমরা পাই বঙ্কুবাবুর চপেটাঘাতে, তারিণীখুড়োর ভ্রমণের নেশায়, লালমোহনবাবুর স্বভাবে, ফেলুদার বুদ্ধিতে ও শঙ্কুর আবিষ্কারে। মাত্রাহীন সন্দেহ করলে যে কী পরিণতি হতে পারে তা যেমন সাধন বাবুর মধ্যে দিয়ে দেখিয়েছেন ঠিক তেমনিভাবে ভালোবাসা কাকে বলে তা দেখিয়েছেন তুলসী বাবুর মধ্যে দিয়ে। 

      এর থেকে বোঝা যায় মানুষটি নিজের কাজকে কতটা ভালোবাসতেন তা না হলে কি আর প্রথম হার্ট অ্যাটাকের পর হসপিটালের বেডে শুয়ে ফেলুদার উপন্যাস কেউ লিখতে পারতেন? 

মাল্টিটেলেন্টেড:-

       তিনি একাধারে বিশ্ববরেণ্য পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সুরকার,সংগীত রচয়িতা অন্যধারে তিনি সাহিত্যিক, ‘সন্দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক ইলাস্ট্রেটর, প্রচ্ছদ ডিজাইনার ও আরো কত কি। নিজের গল্পের ইলাস্ট্রেশন এর পাশাপাশি তিনি ছবি আঁকতেন ‘সন্দেশ’ পত্রিকার বাকি লেখাগুলোর ও। 

নিজের সিনেমা পরিচালনার কাজের মাঝেও উনি বিন্দুমাত্র অবহেলা করেননি ওনার পরিবারের গৌরবের পত্রিকা ‘সন্দেশ’ কে। 

তাছাড়াও নানান বিষয়ে নিজেও করতেন প্রচুর পড়াশোনা। সমস্ত ভক্তদের,অনান্য সাহিত্যিকদের ও বিদেশের বিখ্যাত মানুষদের চিঠির উত্তর  দিতেন ও  লিখতেন। এমনও শোনা গেছে যে উনি নাকি প্রত্যেকটি চিঠির আগে একটি করে ড্রাফ্ট তৈরি করতেন যাতে মূল চিঠিতে কোন ভুল না থাকে। 

সূর্য বিদ্যা আয়ত্তে ছিল কিনা জানিনা তবে সময়কে হাতের মুঠোয় রাখতে জানতেন মানুষটি। মাল্টিট্যালেন্টেড এর  ব্যাখ্যা পাল্টে দিয়েছিলেন মানুষটি। 

ক্যামেরা আই :-

   মানুষটির পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা যে কতখানি  তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রত্যেকটি কাজের নানান খুঁটিনাটির উপর নজর রাখতেন তিনি। একবার যা জিনিস দেখতেন তা চিরকালের জন্য মাথায় গেঁথে রেখে দিতেন। এরকম দু-একটা উদাহরণ দিই- 

‘পথের পাঁচালী’ সিনেমার শুটিং চলছে। কানু বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছেন চুলের ছাঁট করে। তাকে দেখেই মানুষটি বলেছিলেন 

“একজন গেঁয়ো ব্রাহ্মণের ওরকম চুলের ছাঁট মানাবে না, ওটা চেঞ্জ করতেই হবে। ” 

সেই প্রসঙ্গে কানু বন্দ্যোপাধ্যায় পরে বলেছিলেন,

 ” অনেক পরিচালক দেখেছি এর আগে, কেউ কোনও বিশেষ চরিত্রের জন্য আমাকে চুল নিয়ে কিছু বলেননি, ইনি সত্যিকারের এক পরিচালক। “

তখন তিনি ব্যস্ত ‘অপরাজিত’ সিনেমার জন্য কিশোর অপুকে খুঁজতে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম এলেন ওনার বাড়ি। সিলেক্ট যদি হতে পারেন সেই আশায়।প্রথম দেখেই ওনাকে বলেছিলেন, 

“ইস, তুমি একটু বেশিই লম্বা”। বিষয়টার উপর কতটা জ্ঞান থাকলে এরকম মন্তব্য করা যায় তা সত্যিই  বিস্ময়কর।

“সোনার কেল্লা” সিনেমার শুটিং চলছে যোধপুরে। 

হঠাৎ দরকার পড়লো একটি পোস্টাল কার্ডের। সংগ্রহ করে আনাও হলো কার্ডটি। 

কিন্তু সত্যজিৎ রায় অবাক কারণ ওই কার্ডে ভারতীয় পোস্টাল স্ট্যাম্পই নেই। 

শুটিং ইউনিটের বাকি লোকজনের মাথায় পড়ল হাত। 

কিন্তু বিচলিত হলেন না কেবল সত্যজিৎ রায়। উনি সেই মুহূর্তেই একটি পেন নিয়ে ওই কার্ডের ওপর পোস্টাল স্ট্যাম্প এবং ভারতীয় সীলমোহরটি খুব নিখুঁতভাবে একে ফেললেন। 

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় পরে এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে শুটিং এর পর যখন ওরা আসল পোস্টাল স্টাম্পের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা পোস্টাল স্ট্যাম্পটি পর্যবেক্ষণ করেন, তখন ওনারা দেখতে পান যে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা পোস্টাল স্ট্যাম্পটির ডাইমেনশন আসল স্ট্যাম্পের সাথে সম্পূর্ণভাবে মিলে গেছে। 

   সবাই হয়তো সেদিন বিস্মিত হলেও এইটা বুঝে গেছিলেন যে মানুষটির মধ্যে নিশ্চয়ই কোন ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে। 

   মানুষ সত্যজিৎ:-

       এবার বরং আসি মানুষ হিসেবে সত্যজিৎ রায় কেমন ছিলেন সেই নিয়ে। খোসা ছাড়িয়ে আসল মানুষটিকে চেনা যে কি দুঃসাধ্য ব্যাপার তা আর বলে বোঝানো যাবে না। এত স্বনামধন্য পরিচালক হয়েও মানুষটি নিজের শিকড় কে ভুলে যাননি। নিজের ছায়াকে কখনো নিজের থেকে বড় হতে দেয়নি। মানবিকতা ও মনুষ্যত্ব বোধ মানুষটির মধ্যে যে কত পরিমাণে ছিল তার সত্যিই কল্পনার ও অতীত। ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় লেখা সিলেক্ট করার সময় তিনি সময় নিয়ে লেখাগুলির ভুল-ত্রুটি লিখে দিতেন সে যতই সামান্য লেখকের লেখা হোক না কেন। কখনো কাউকে ছোট ভাবতেন না তিনি। যেন পরিবারের মানুষ হয়ে থাকতেন ইউনিটের লোকজন ও অভিনেতাদের কাছে।

 একবার একটা গাড়ির মধ্যে শুটিং করছেন ‘সোনার কেল্লা’ সিনেমার একটা দৃশ্য। আচমকা একটা লরি চলে আসে গাড়িটার জানালার কাছে। ছোট্ট একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়।আরেকটু হলেই হয়তো সত্যজিৎ রায় গুরুতর আঘাত পেতেন। এক্সিডেন্ট এর পর ইউনিটের লোকজন যখন সত্যজিৎ রায় কে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন উনি খোঁজ নিতে জান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়,  ও সন্তোষ দত্তের যারা ওনার সঙ্গে তখন ওই একই গাড়িতে ছিল। ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমার সময় ইউনিটের যোগ দেয় টিনু আনন্দ। কিন্তু উনি বাংলা জানতেন না। তাই সত্যজিৎ রায় সকাল সকাল উঠে পুরো গল্পটার একটা ইংরেজি সংক্ষিপ্তসার করেন শুধুমাত্র একজন  সামান্য সহকারীর জন্য। 

এরকম একজন মানুষটিকে ভগবান বলবো না তো কাকে বলব। 

          নাঃ,ওনার  সিনেমা, সাহিত্য কিংবা অন্য সব বিষয়ের গুনাগুন নিয়ে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা আমার নেই। কারণ মানুষটির ভাবনা চিন্তা ছিল যুগের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। আমার কাছে সত্যজিৎ রায় হলেন স্বাধীনতার পরে বাংলা সংস্কৃতির পথপ্রদর্শক বা পথিকৃৎ। মানুষটি আমার জীবনের প্রতিটা মুহূর্তের অনুপ্রেরণা। কোনো বিপদে পড়লে মাথা ঠান্ডা রেখে ওই বিপদের মোকাবিলা করার অদম্য সাহস আমি সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে পাই। ডিসিপ্লিন এর মানেটাই পাল্টে দিয়েছিলেন মানুষটি। প্রতিটা কাজের পেছনে কতটা কর্মঠ হওয়া যায় তার শিক্ষক ছিলেন তিনি। কতটা বিদ্রুপ ও সমালোচনা মানুষটিকে শুনতে হয়েছে তার ঠিক নেই। তিনিও তো পারতেন ভেঙে পড়তে,  এত বিপদের মাঝে পথের পাঁচালী নাও করতে পারতেন । তবুও তিনি লড়ে গেছেন মাটি আঁকড়ে। সারা জীবনটাই স্ট্রাগল করে কাটিয়েছেন। “‘স্ট্রাগল’- বাঙালির প্রিয় একটি শব্দ। ” অবশ্য উনি সেটাকে স্ট্রাগল বলতেন না, বলতেন ” মগজ এর পুষ্টি, মাংসপেশির পুষ্টি ও মানুষ চেনার পথে প্রথম পদক্ষেপ। “

                  মহারাজা তোমারে সেলাম


তথ্যসূত্র:-

একেই বলে শুটিং – সত্যজিৎ রায় 

My years with Apu – সত্যজিৎ রায় 

অদ্বিতীয় সত্যজিৎ – মঞ্জিল সেন

শতরূপে সত্যজিৎ প্রবন্ধ – সমাপ্ত

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!