কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

Home » পুজো সংখ্যা ১৪৩১ » রাজবাড়ী রহস্য

রাজবাড়ী রহস্য

rajbari

রাজবাড়ী রহস্য ভৌতিক গল্প – রূপালী সামন্ত

দাদার মেজাজটা আজ বড় ফুরফুরে লাগছে, গাড়ি চালাতে চালাতে গুনগুন করে গান গাইছে। দাদার দিকে একবার আড়চোখে তাকিয়ে বললাম

–একটু জোরে হয়ে যাক। এই অধমের শ্রবণেন্দ্রীয় একটু আরাম পাক।

 মুচকি হেসে দাদা গলা চড়াল 

 –কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, 

মনে মনে মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা।

ভোরের মিঠে বাতাসে মনটা বেশ তরতাজা হয়ে গেল; তাই আমিও ওর সাথে গলা মেলালাম।

     ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আমরা দু’ভাই তপেন্দু আর শুভেন্দু চলেছি ইতিহাসের খোঁজে তমলুক রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে। দাদা গাড়ি ড্রাইভ করছিল। কলকাতা থেকে মাত্র ঘন্টা তিনেকের জার্নি। আমরা ছটা নাগাদ বেরিয়েছি, তখন ভোরের আলো ফুটলেও শীতের শেষ বলে প্রকৃতিতে কুয়াশার একটা আস্তরন ছিলই। তাতে অবশ্য পাকা ড্রাইভার দাদার গাড়ি চালাতে কোন অসুবিধা হয়নি।

    আমরা বাড়ি থেকে শুধু চা টুকু খেয়ে বেরিয়েছি। রাস্তায় এক বিখ্যাত ধাবায় দু’ভাই হালকা নাস্তা, তারপর একপ্রস্থ কফি খেয়ে আবার রওনা দিয়েছি রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে। বসন্তের আগমনে পথের দু’ধারে অল্পস্বল্প শিমুল পলাশের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে কালো পিচের মসৃণ রাস্তার উপর দিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। পথে রাধাচূড়া আমাদের অভিবাদন জানাল। অমলতাসের সোনালী হাতছানি মনকে আরও রঙিন করে তুলল। 

    ভোরের রাস্তা বেশ ফাঁকা থাকায় দাদা ভালোই স্পিড তুলেছে। তিন ঘন্টা হয়তো লাগবে না আমাদের পৌঁছতে। কাঁথি থেকে ডানদিকে মুড়ে রাস্তা ধরে মোবাইলে জিপিএস দেখে এগিয়ে গেলাম তমলুক রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে। আমাদের আগমন বার্তা তাদের কাছে ছিল তাই আমাদের দেখেই দারোয়ান বড় দরজা খুলে দিলে গাড়ি নিয়ে সোজা পোর্টিকোর নীচে পৌঁছে গেলাম। 

     গাড়ির আওয়াজ পেয়ে ভেতর থেকে একজন বেরিয়ে এলো। দরোয়ানও ততোক্ষণে দরজা লাগিয়ে এগিয়ে এসেছে। দুজনেই মালপত্র নামাতে লাগল। আমাদের সঙ্গে বিশেষ কিছুই নেই, দুজন জোয়ান ছেলে দুটো মাত্র রুকস্যাক; তাতেই আমাদের সর্বস্ব ঢুকে গেছে। 

    দাদা ইতিহাসে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে। এবার পিএইচডি করবার ইচ্ছা আছে। ইতিহাস দাদাকে বড্ড টানে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক জায়গাগুলো সময় পেলেই ঘুরে বেড়ায় আর আমিও বেড়ানোর লোভে আর গল্প শুনবো বলে ওর সঙ্গ নিয়েছি। গল্প শুনতে কে না ভালবাসে? আর রাজা মহারাজাদের জীবনেতো মনকাড়া গল্পের অভাব নেই। এইসব গল্প শুনতেও ভালো লাগে।

   আমরা এসেই রাজবাড়ীর বাইরে বাগানের দিকটা ও আশেপাশে একটু চোখ বুলিয়ে দেখছি। পেছনে একটা বেশ বড়ো পুকুর আছে, যদিও এখন অব্যবহারে অপরিষ্কার। পাতা লতায় ভরা পুকুরে যে এখনো মাছ আছে তা ঘাই মারা দেখেই টের পেলাম। একটু পরে ওদের ডাকে ভেতরে যেতেই হাত-পা ধুয়ে নেওয়ার জন্য একজন বয়স্ক ব্যক্তি এগিয়ে এসে আমাদের নিয়ে গেলেন। উপরের দক্ষিণ খোলা ঘরটা আমাদের জন্য রাখা ছিল, জিনিসপত্রগুলো ঐ ঘরেই রাখা হয়েছে।

   লুচি ভাজার গন্ধ পাচ্ছি। ফ্রেশ হয়ে নিচে যেতেই টেবিলের উপরে গরম ফুলকো লুচি, সাদা আলুর তরকারি, বেগুন ভাজা ও মিষ্টি সাজিয়ে দেওয়া হলো, যার সুন্দর ঘ্রাণ ওপর থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। 

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি রাজবাড়ীর বর্তমান এক শরিক দাদার বন্ধু। তারই আমন্ত্রণে আমরা দুই ভাই সেখানে গিয়েছি। সে যদিও সাথে আসেনি কিন্তু রাজবাড়ী দেখাশোনা করার দায়িত্বে যে মানুষটি আছেন তিনি সত্যিই অমায়িক এবং বিশ্বস্ত ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ নৃপেন’দা। আমাদের খুব যত্ন করে দাঁড়িয়ে থেকে খাওয়ালেন। পথে কোন অসুবিধা হয়েছে কিনা আগেভাগে জেনে নিলেন।

    খাওয়া শেষে আমরা গাড়ি নিয়ে একটু আশপাশ ঘুরে দেখতে বেরিয়ে পড়লাম। স্নান করে ফ্রেস হয়ে নিয়েছিলাম তাই নাচিন্দা মায়ের দর্শন সেরে নিলাম। দুপুরের রাজকীয় খাওয়া দাওয়ার পরে খানিকক্ষণ রেস্ট নিয়ে পুরো রাজবাড়ী নৃপেনদার সঙ্গে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। টুকরো টুকরো গল্প বলতে বলতে নৃপেন’দা আমাদের রাজবাড়ির ইতিহাস শোনাচ্ছিল। 

    পেছনের দিকের একটা মহলে দেখলাম তালা দেওয়া ধুলো পড়ে আছে। দেখেই বোঝা যায় ওদিকে কেউ যায় না। রহস্যঘন বাড়িটার আশেপাশে বেশ ঘাস লতা বেড়ে উঠেছে আর মহলের আঙিনাও মাকড়সার জালে আবৃত। জিজ্ঞেস করতে নৃপেন’দা বললেন 

 –ওদিকে যেওনা, ওদিকে আমরা কেউ যাইনা।

 বুঝলাম কিছু রহস্য আছে ঠিক সময়ে দাদা জেনে নেবে। 

   সুবিশাল প্রাচীন রাজবাড়ীর মাঝের বড় বড় মোটা থাম, খিলান ও দেওয়ালগাত্রে প্রাচীন শিল্পীদের হাতে তৈরি সুনিপুণ নকশা আজও কিছু জায়গায় অক্ষত রয়েছে। মাঝে মাঝে কিছু ইতিহাস দাদাও বলে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নামতেই নৃপেনদা আমাদের তাড়াতাড়ি করে মহলের সামনের দিকের অংশে নিয়ে চলে এলো আর বারবার বারণ করে দিল বেশি রাতে আমরা বাইরে বা রাজবাড়ীর অন্য কোন অংশে যেন না যাই। রহস্যের গন্ধ পেলাম। 

     কিছুক্ষণের মধ্যেই গোটা রাজবাড়ী অন্ধকারে ডুবে গেল, শুধু সামনের অংশে দুটো বড় হাইপাওয়ার বাল্বের আলো জ্বালানো রয়েছে, বেশকিছু হ্যাজাকও দেখলাম রাখা। দুটো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া আসার জন্য। বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ডাক ও  বিন্দু বিন্দু জোনাকির আলো পরিবেশকে আরো মায়াময় ও রহস্যঘন করে তুলেছে। দূর থেকে মাঝেমাঝেই শেয়ালের ডাক শোনা যাচ্ছে। আরও একটা অদ্ভুত শব্দ কানে আসতেই জিজ্ঞেস করলাম 

 –ওটা কিসের আওয়াজ রে দাদা?

দাদা অবলীলায় বলল “তক্ষক”।

    শুনেই তো আমার গা শিউরে উঠলো। অথচ দাদার চোখে মুখে একটা খুশির রেস খেলা করছে। বুঝলাম অন্ধকার রাতে রাজবাড়ীর পুরনো ইতিহাস শোনবার জন্য দাদা তৈরি। পাজামা পাঞ্জাবির উপরে একটা হালকা চাদর জড়িয়ে বড় পেয়ালা কফি হাতে নৃপেনদার পাশে বসলাম গল্প শোনবার আশায়। ক’দিন আগেই সরস্বতী পূজো গেছে, পূর্ণিমা খুব কাছাকাছি। জ্যোৎস্নার আলো তাই বেশ জোরালো কিন্তু শীতের বিদায় বেলায় কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে সে আলো পৃথিবীতে আসতে বাধা পাচ্ছে। একটা কেমন মায়াময় পরিবেশ জাল বিস্তার করেছে। সামনে রাখা হ্যাজাকের আলোটা একটু কমিয়ে নৃপেন’দা শুরু করলেন —

   বছর পাঁচেক বয়স থেকেই নৃপেনদা এখানে আছেন। ওনার বাবা তৎকালীন তাম্রলিপ্তের জমিদার উপেন্দ্র নারায়ণ স্যান্যালের যুবক পুত্র দ্বীপেন্দ্র নারায়নের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। উপেন্দ্র নারায়নের পিতা রাঘবেন্দ্র নারায়ন ইংরেজ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ওনাদের তোষামোদ করে *রাজা* উপাধি লাভ করেছিলেন। আসলে ওনারা এখানকার জমিদার ছিলেন। উপেন্দ্র নারায়ণের আমলে ইংরেজ রাজত্বের অবসান হলেও জমিদারী দাপট তখনও রয়ে গেছে। জমিদার উপেন্দ্র নারায়ন যেমন অত্যাচারী ও ভোগী ছিলেন, রানী সুশীলা ছিলেন তেমনি দয়াময়ী, মমতাময়ী ও বুদ্ধিমতী। তিনি যথেষ্ট শিক্ষিতা ছিলেন। তাঁর পুত্রকে তিনি এই পঙ্কিল দুনিয়া থেকে দূরে রেখে নিজের মনের মতন করে শিক্ষিত করেছিলেন। 

   সকালের দেখা ঐ বন্ধ মহলটা নাচ মহল, যেটা এখন চাপ চাপ অন্ধকার মেখে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। রাজা উপেন্দ্র নারায়ন নাচ মহলে প্রায়ই বেনারস ও লক্ষনৌ থেকে প্রচুর খরচা করে নামকরা বাইজী আনিয়ে নাচ গানে মেতে থাকতেন। একঘেয়ে হয়ে গেলে মাঝে মাঝে লোকলস্কর নিয়ে পাশের জঙ্গলে শিকারেও যেতেন। যে জঙ্গল এখন সরকার সুরক্ষিত সুন্দরবন নামে পরিচিত। 

   জল জঙ্গল ও বন্য পশুদের নিয়ে আপন খেয়ালে বেড়ে ওঠা সুন্দরবন তখন আরো ভয়ঙ্কর ছিল। জলে কুমির ডাঙায় বাঘ তো ছিলই। জঙ্গলে বাঘ ও কুমীরে খাওয়া অর্ধভুক্ত শরীর গুলোর সৎকার না হওয়ার ফলে অতৃপ্ত আত্মারাও সেই জঙ্গলের দখলদারি ভোগ করতো। রাজার অত্যাচারে দরিদ্র মানুষগুলো দু’মুঠো অন্নের জন্য জঙ্গলে গিয়ে হিংস্র শ্বাপদের ভোগ্য হত।

   একবার রাজা বজরায় করে সুন্দরবনের নদীতে ভেসে চলেছেন। হঠাৎ নারী কন্ঠের সুরে আকৃষ্ট হন। সন্ধ্যা লগ্নে এক সুন্দরী নারী অগভীর জঙ্গলে সুমিষ্ট কন্ঠে আপন খেয়ালে গেয়ে চলেছে। স্বভাবতই রাজা একাকী নারী তায় সুন্দরী দেখে কামনা করে তাকে পাওয়ার লোভে বজরা তীরে ভেড়াতে আদেশ দেন। মাঝি-মাল্লারা প্রমাদ গোনে। রাজাকে বারণ করলে তিনি কোন কথা শুনতে চান না। শেষে বাধ্য হয়ে মাঝিরা বজরা নোঙর করে সঙ্গে থাকা ছোট নৌকোয় উপেন্দ্র নারায়নকে তীরে নামালে সে মায়াবিনী চোখের ইশারায় রাজাকে আকৃষ্ট করে ক্রমশঃ গভীরে নিয়ে যেতে থাকে। মাঝি-মাল্লারা ততক্ষণে বুঝে গেছে ও মায়াবিনী। ওর খপ্পরে যে পড়েছে তার ইহ জীবন শেষ। মাঝি-মাল্লা ও সৈন্যদের শত বারণ অশ্রাব্য করে তিনি সেই কুহকিনীর ইশারায় ক্রমে আরো গভীরে এগিয়ে যেতে থাকলে সৈন্যরা আর এগোতে সাহস পায়না। 

   তারা স্পষ্ট বুঝতে পারে রাজা কোন না-মানুষের খপ্পরে পড়েছেন, বিপদ আসন্ন। এই ভয়াল জল-জঙ্গলে একাকী নারী এভাবে ঘুরে বেড়ানোর সাহস কখনোই পাবে না।  সৈন ও মাঝি-মাল্লাদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা। কিয়ৎক্ষণ পরে এক ভয়ঙ্কর গগনবিদারী চিৎকারে লোক-লস্কর বনবিবিকে স্মরন করে মশাল জ্বালিয়ে আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলে রাজার নিথর দেহ খুঁজে পাওয়া যায়।

   ভয়ঙ্কর চেহারা দেখে পরিষ্কার বোঝা যায় যে কোন জানোয়ারের আক্রমণের নয় অন্য জগতের বিচরণকারী কারোর দ্বারাই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘাড় মুচড়ে মাথাটা সম্পূর্ণ পিছন দিকে ঘোরানো, দেখে মনে হয় অসম্ভব ঘৃণায় কেউ এই কাজ করেছে। চোখ দুটো ভয়ে ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে। বুক থেকে পেট অবধি ফালা করা, রক্তে রাজপোষাক পুরো সিক্ত। বাঁ বুকে অর্থাৎ হৃদয়ের জায়গায় একটা গভীর ক্ষত, সেখান থেকে হৃদপিণ্ডঠা প্রবল আক্রোশে কেউ ছিঁড়ে নিয়েছে। আর তাকিয়ে থাকা যাচ্ছে না।

   বন্দুকধারী সৈন্যরা তাড়াতাড়ি রাজার দেহ সেখান থেকে তুলে নিয়ে বজরায় ফিরে আসে এবং বজরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজবাড়ী অভিমুখে এগিয়ে যায়। একসময় রাজবাড়ীর ঘাটে বজরা ভিড়লে রাজপুত্র দ্বীপেন্দ্র নারায়ণকে খবর পাঠানো হয়।  তিনি এগিয়ে এসে পিতার মৃতদেহ রাজবাড়ীতে নিয়ে যান। শক্ত মনের অধিকারীনি রাণীমা সামনে এসে দাঁড়ালে তাঁকে শুধু বিকৃত মুখখানাই দেখানো হয়। শোকগ্রস্তা, সদ্য বিধবা আতঙ্কে মুখ বিকৃতি করে তাড়াতাড়ি ওনাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন। 

    গল্প যখন রীতি মতন জমে উঠেছে, ভেতর থেকে বিকেলের নাস্তার ডাক পড়লো। নৃপেন’দা অপাঙ্গে নাচ মহলের দিকে একবার দেখে নিয়ে বললেন 

–এবার ভেতরে চলুন, এখানে  বেশিক্ষণ থাকা সমীচীন নয়। 

আমি তাড়াতাড়ি বললাম

–কেন? এখানেই তো বেশ লাগছে। এমন পরিবেশ আমরাতো শহরে পাইনা, এখানেই একটু বরং বসি।

নৃপেন’দা জলখাবারের অছিলায় আমাদের একরকম জোর করেই ভিতরে নিয়ে গেলেন। একটু পরেই খুব ক্ষীন নুপুরের নিক্কনের সাথে এক নারীর খিলখিল আওয়াজ পাওয়া গেল। মাংস ফোটার সুঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। রাতের রান্নার তোড়জোড় চলছে। দুপুরের খাবার তখনও ঠিক মতন হজম হয়নি। অল্প কিছু মুখে দিয়ে আবার একপ্রস্থ কফি নিয়ে গল্পে মজে গেলাম। 

   আবারো সেই নারী কন্ঠের আওয়াজ কর্নগোচর হলো। এবার সঙ্গে এক পুরুষালী কন্ঠও শোনা গেল। জিজ্ঞেস করতেই নৃপেন’দা খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলতে শুরু করলেন —

   ভোগী রাজা মৃত্যুর আগে যে নারী শরীর কামনা করেছিল তাকে পায়নি বলে তাঁর অতৃপ্ত আত্মা আজও রাজবাড়ীর চতুর্দিকে ঘুরে ঘুরে মরে। এখানে কোন কম বয়সী যুবতী আসলে তাকে আকর্ষণ করে। একবার এনাদের এক বন্ধু পরিবার তাদের যুবতী মেয়ে নিয়ে তমলুক রাজবাড়ী ও আশপাশ দর্শন করতে এলে যথা নিয়মে রাজবাড়ীতেই তাঁদের থাকবার ব্যবস্থা হয়। রাতে মৃত জমিদারবাবুর আত্মা যুবতীটিকে আকর্ষণ করে নাচ মহলের দিকে নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে তার অত্যাচারিত মৃত শরীর পাওয়া যায় নাচ মহলের  বারান্দায়। তারপর থেকে কোন নারীকে সন্ধ্যার পর এখানে থাকতে দেওয়া হয় না, রাত কাটানো তো দুর অস্ত। 

  এই ঘটনার পর থেকে মাঝে মধ্যেই তাদের অতৃপ্ত আত্মা নাচ মহলে ঘুরে বেড়ায়। বিশেষতঃ পূর্ণিমার আগে পিছের দিনগুলোতে। এসব শুনেই আমার গা ছমছম করতে শুরু করে, ভয়ে গলা শুকিয়ে আসে। আমি আরো দাদার কাছ ঘেঁষে বসলে দাদাও সেটা বুঝতে পারে। গল্পে গল্পে রাত অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে আমরা নির্দিষ্ট কক্ষে  গিয়ে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু ঘুম তখনো অধরা। এমন ভৌতিক গল্পের রেসেই হোক বা নতুন জায়গার জন্য, দেখলাম দাদাও জেগে আছে। 

   আজ চতুর্দশী, আগামীকাল পূর্ণিমা। তাই চাঁদ তার ভরা যৌবন নিয়ে পৃথিবীর বুকে জ্যোৎস্না ঢালছে। চারিদিক বড়ো মোহময়ী রূপে সজ্জিত। এমন মায়াময় জোছনাঢালা রাতের আকর্ষণে দাদা একটা সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। গাছগাছালি ভরা গ্রাম্য পরিবেশে যাবার মুখে শীত যাই-যাই করেও যেতে চাইছে না, আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। হঠাৎই নারীকন্ঠের আর্ত চিৎকারে আমি ভয় পেয়ে বিছানায় উঠে বসলাম। দরজা খোলা থাকবার জন্য দেখতে পাচ্ছি দাদা বারান্দা থেকে নাচ মহলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, কারণ আওয়াজটা ওপাশ থেকেই এসেছে মনে হোল। দাদা সিঁড়ির দিকে যাবার উদ্যোগ করতেই আমি ছুটে বাইরে বেরিয়ে দাদাকে ডেকে ওদিকে যেতে বারণ করলাম। দাদা একবার পেছনে তাকিয়ে বলল

–ওখানে কেউ আছে নিশ্চয়ই। আমি স্পষ্ট দেখেছি। দেখ আলো জ্বলছে।

তাকিয়ে দেখতে পেলাম নাচ মহলের বড় বড় জানালার রঙিন শার্শির আড়ালে ক্ষীন আলোর রেশ। আমি ছুটে গিয়ে দাদার হাত ধরে ওই অভিশপ্ত জায়গায় যেতে বাধা দিয়ে অনুনয় করলাম 

–দাদা যেওনা, কেন শুধু শুধু নিজের বিপদ ডেকে আনছ? নৃপেন’দা বারবার বারণ করেছে বাইরে না যেতে, এসবের মধ্যে না পড়াই ভালো। 

   ততক্ষণে ভয়ে আমার চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে। ভয়ে না শীতে জানিনা বেশ কাঁপছি। দাদা ঘরে এসে টর্চটা নিয়ে নাচ মহলের দিকে আলো ফেলতেই স্পষ্ট দেখলাম এক খোলা চুলের নারী শরীর সাঁত করে থামের আড়ালে চলে গেল। ততক্ষণে আমার পাজামা ভিজে যাওয়ার যোগাড়। হঠাৎ সিঁড়িতে কারো পদ শব্দ শুনতে পাচ্ছি, আতঙ্কে আমার গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোচ্ছে না। আমাদের কথোপকথনেই হোক বা আলো দেখে নৃপেন’দা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে এসেছে। আমাদের বাইরে দেখে দুজনকে জোর করে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা টেনে দিয়ে চলে গেল।

   এর বেশ কিছুক্ষণ পরে; তখনও আমার ঘুম ধরেনি। কতক্ষণ কেটেছে জানিনা হঠাৎ এক নারী কন্ঠের সুমধুর সুর শুনে জোর করে চোখ টিপে দাদাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি। মনে হল দাদাও ঘুমায়নি, উসখুস করছে। আচমকা খুব শীত করতে লাগল। বেশ ঠান্ডা লাগছে, এত ঠান্ডাতো ছিলনা! একটা খসখস শব্দ শুনে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি আমাদের মাথার দিকে জানালার উপরের অংশটা খোলা। আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি জানালা বন্ধ করে শুয়েছিলাম। তবে কি দাদা খুলল! কিন্তু জানালায় ঐটা কি! কি বিভৎস, কি ভয়ঙ্কর। দেখেই আমি আ—- করে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। আর কিছু মনে নেই।

  সকালে ঘুম ভাঙ্গলো বেশ বেলায়। গোটা ঘরে ঝলমলে রোদের আনাগোনা। কাল ভোরের দিকে বোধহয় ঘুমিয়েছি। এখন শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগছে। চোখ খুলতেই দাদাকে ঘরে পায়চারি করতে দেখলাম। আমাকে দেখেই জিজ্ঞেস করল

 –কিরে ঘুম ভাঙলো? শরীর ঠিক আছে এখন? আমি উঠে বসে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালাম। 

–তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়েনে, খেয়েদেয়ে একটু বেড়িয়ে আসি।

আমিও উঠে বাথরুমে গেছি, নৃপেন’দা এসেছে আমার খোঁজ নিতে। বাথরুম থেকেই শুনতে পেলাম দাদা বলছে 

–হ্যাঁ এই উঠেছে, বাথরুমে গেছে ফ্রেস হতে। মনে তো হচ্ছে ঠিকই আছে। তারপর আর কিছু হয়নি যদিও, বাকি রাত ঠিকঠাক ঘুমিয়েছে।

   এসব শুনে আমার কাল রাতের ভয়ঙ্কর কথাগুলো মনে পড়ে গেছে। আতঙ্কে বাথরুমের স্কাই লাইটের দিকে একবার তাকিয়ে দেখে নিলাম। সেখানে শুধুই নিস্পাপ সোনালী রোদের আনাগোনা। আলোঝলমল দিনের বেলা তেনাদের আনাগোনা নেই জেনেই নিশ্চিন্তে বাথরুমের কাজ সেরে বেরিয়ে জিন্স টি-শার্ট গলিয়ে রেডি হয়ে দাদার সাথে নীচে নামলাম। আজ সকালে আলুর পরোটা, বেগুন ভাজা আর ফুলকপির একটা ভাজা মতো তরকারি আর  ঘন দুধের পায়েস। এখানে এসে ইস্তক খাওয়াটা জব্বর হচ্ছে। রাজবাড়ী বলে কথা, খাওয়া দাওয়ায় রাজকীয়তা তো স্বাভাবিক।  তাও  বর্তমান শরিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তার ছোট ভাই বলে আপ্যায়নটা মনে হয় একটু বেশিই হচ্ছে। আমি অতো না ভেবে শুধু উপভোগ করছি।

   আমরা শহরবাসীরা  যান্ত্রিক কোলাহল আর ধূলো ধোঁয়ায় থাকতে থাকতে ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে গেছি। প্রাণ খুলে বাঁচতেই ভুলে গেছি। কটা দিনের ছুটিতে গ্রাম বাংলার নির্মল পরিবেশে ফুসফুস ভরে তাজা বাতাস টেনে বেশ ভালো লাগছে। টিফিন খাওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে নাচ মহলের দিকে তাকিয়ে কাল রাতের কথা মনে পড়তেই গাটা ছমছম করে উঠলো। দাদা লক্ষ্য করে বললো 

 –কিরে কি হলো?

আমি ভয়ে ভয়ে তোতলাতে লাগলাম

–কাল মাঝরাতে কি হয়েছিল তোর?

আমি দাদার আরো কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম 

–কাল রাতে হঠাৎ খুব শীত পেতে জানলাটা বন্ধ আছে কিনা দেখতে গিয়ে জানালার দিকে যেই তাকিয়েছি সেখানে একটা বীভৎস মুখ উঁকি দিচ্ছিল। দেখেই আমি ভয়ে তোকে ডাকতে গিয়ে আর কথা বেরচ্ছিল না। এ বাড়ি ঠিক নয় রে দাদা, চল আমরা খাওয়া দাওয়ার পরে মানে মানে বেরিয়ে পড়ি। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাই। নাহলে …

বলতে বলতেই ভয়ে চোখ দুটো বুজে নিলাম একবার। তাই দেখে আমাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে দাদা হেসে বলল 

–না হলে কি ? হ্যাঁ, বিজ্ঞানের যুগে তুই ভূতে ভয় পাচ্ছিস? 

–নারে দাদা সবসময় গোয়ার্তুমি ভালো নয়।

–দূর পাগল ছাড় এসব। তাছাড়া এখন দিনের বেলা, কোন ভয় নেই। কাল রাতে কি দেখেছিস ঠিক করে বল তো?

  ওই ভয়ঙ্কর রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে আমার গা শিউরে উঠছে। মনে সাহস এনে বলতে লাগলাম

  –উস্কোখুস্কো চুল, লালচে বড়ো বড়ো চোখ গুলো  ঠিকরে বাইরে বেরনো। ঘাড়টা মনে হলো ব্যাঁকা।গোটা মুখময় রক্ত মাখা, আমার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। অথচ আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি কাল জানালাটা বন্ধ করে শুয়েছিলাম। 

–হুমম।

–কি হুম?

–বুঝলাম কাল সন্ধ্যেবেলা ভূতের গল্প শুনে তোর মধ্যে তার রিয়াকশন হয়েছে। হা হা হা

ঐসব ভাবতে ভাবতে তোর অবচেতন মনে তার প্রতিচ্ছবি ধরা পড়েছে। 

    সেই মুহূর্তে আমি চুপ করে গেলাম। জানি দাদাকে প্রমাণ ছাড়া কিছুই বোঝানো যাবে না। কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি স্বপ্ন দেখিনি বা কল্পনাও নয়, আমি সত্যিই খোলা চোখে দেখেছি।

    খানিকক্ষণ কি চিন্তা করে দাদা বললো 

  –চলতো একবার নাচ মহলটা দিনের বেলা দেখে আসি। 

বলেই দাদা সে দিকে পা বাড়ালো। আমার একেবারে ইচ্ছে ছিল না ওদিকে যাওয়ার, অনিচ্ছা সত্ত্বেও দাদাকে একলা ছাড়বো না বলে ওর পেছনে পেছনে গেলাম। আগেই বলেছি চারিদিকে ধুলোয়, মাকড়সার জালে ভর্তি, দেখলেই বোঝা যায় বহুদিন এদিকে কেউ আসেনি। তবু দাদা মহলে পা দিতেই যেন মনে হলো এখানে কেউ আছে, এবং সে আমাদেরই অপেক্ষায় আছে। কোন আড়াল থেকে সে আমাদের ঠিক লক্ষ্য রাখছে।

   ভয়ে দাদার হাতটা খামচে ধরেছি। হঠাৎ কিছু একটা আমাদের গায়ে লাফিয়ে পড়তেই আমি ভয়ে এমন চিৎকার করে উঠেছি নৃপেন’দা কাছাকাছি ছিল; শুনেই ছুটে এসেছে। কোথা থেকে একটা বিড়াল আমাদের গায়ের উপরে আচমকা লাফিয়ে পড়তে টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেছি।

   নৃপেন’দা আমাদের খুব বকাবকি করে তখনকার মতো ওখান থেকে নিয়ে চলে এলো। কিন্তু দাদাকে কেমন অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে বুঝলাম দাদার মনে কিছু একটা চলছে। 

     আজ ভরা পূর্ণিমা, এটা মাঘী পূর্ণিমা। দাদা এবং নৃপেন’দা দুজনেই নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল। দাদার ইচ্ছা পূর্ণিমাতে এখানে কি হয় সেটা দেখবে। আর নৃপেন’দা আজ কড়া নজরে রেখেছে আমাদের। আজ রাতে কিছুতেই ঘর থেকে বেরোতে দেবেনা। 

  খাওয়ার শেষে আমরা উপরে আসবার পর নৃপেন’দা সিঁড়ির গ্রিলে কখন চাবি দিয়ে গেছে বুঝতে পারিনি। আমরা ঘরে গল্প করছি ঠিক রাত বারোটায় নিচের গ্র্যান্ডফাদার ক্লকে ঢং ঢং করে বারোটা ঘন্টা পড়তেই ওদিকে নাচ মহল থেকে খুব জোর চিৎকার ভেসে আসে। সেই আওয়াজ শুনে দাদা বাইরে আসতেই নাচ মহলে হালকা আলোর রেশ দেখা যায়। ওখানে কারা ছুটো ছুটি করে বেড়াচ্ছে। একজন মহিলা আছে যার নুপুরের ছমছম শব্দ শীতের রাত বলে এখান থেকে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। 

   দাদা বেরতে গিয়ে সিঁড়ির গ্রিলে তালা দেখে আফসোস করে। তখনি নাচ মহলের বারান্দার ঢালু ছাদে অবলীলায় এক মহিলা গাইতে গাইতে হেঁটে বেড়াচ্ছে। দাদা উত্তেজনায় আওয়াজ দিয়ে ফেলে 

–কে, কে ওখানে ? 

ততক্ষণে আমিও দাদার পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। আওয়াজ শুনে নারী মূর্তি গান থামিয়ে আমাদের দিকে কঠিন শীতল চোখে তাকাতেই আমাদের অবস্থা খারাপ। দাদাও বেশ ভয় পেয়েছে বুঝলাম। চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখা গেল কালো ভয়ঙ্কর রাগত মুখে আমাদের দিকে তাকিয়ে। আলুথালু বেশে খোলা চুলে উপর থেকে লাফ দিয়ে বাগানের দিকে অদৃশ্য হয়ে গেল।

   নীচ থেকে নৃপেন’দা আওয়াজ দিল

  –তোমরা ঘরে যাও দয়া করে। আর বিপদ বাড়িও না। 

আমি তাড়াতাড়ি দাদার হাত ধরে টেনে ঘরে এনে দরজা বন্ধ করে দিলাম। দাদা তখনও ভ্যাবলার মতন দাঁড়িয়ে আছে। অতো উঁচু থেকে কোন সাধারণ মানুষ লাফ দিতে পাঁচবার ভাববে। ওর বিজ্ঞান মনস্ক মন এসব কোনদিনই মানেনি, সেখানে খুব জোর আঘাত লেগেছে। জানলা দরজা চেপে বন্ধ করে দাদাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে গেলাম।

    পরদিন সকালে দাদা ঘুম থেকে উঠেই ব্রাশ নিয়ে নাচমহল ও বাগানের দিকে চলে গেছে। সেখানে আবিষ্কার করেছে কালকের দেখা সেই বিড়ালটার ঘাড় মটকান নিঃস্প্রান শরীর বাগানের ধারে পড়ে আছে। শরীরে এতটুকু রক্ত অবশিষ্ট নেই দেখলেই বোঝা যায়। দাদা চিৎকার করে নৃপেনদাকে ডাকতেই উনি এসে দাদাকে টেনে ঘরে নিয়ে গেছে। দাদা তখনও হতবাক! একজন পরে বাগানের একধারে মাটি কুপিয়ে মৃত শরীরটা চাপা দিয়ে দিয়েছে। 

   প্রাতঃরাশের সময় দাদার ফোনে রিং হতে তুলে দেখে দাদার বন্ধু; এ বাড়ির বর্তমান শরীক সৌরেন্দ্র’দা ফোন করেছে। কাল রাতের সব ঘটনার জন্য দাদাকে বেশ বকাবকি করে ফিরে যেতে বলছে। দাদা চুপ করে শুনছে। যদিও কাল মাঝরাতে সিঁড়িতে কারোর গজরানোর আওয়াজ পেয়েছি। বেশ কিছুক্ষণ এদিক ওদিক করে সে রাগে গরগর করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেল বুঝতে পেরেছি। যেটা আমি আর কাউকে বলিনি। সকালে তালাতে লাল সুতো জড়ানো দেখেছি। হয়তো নৃপেন’দা মন্ত্রপূতঃ সুতো বেঁধে দিয়েছিল বলে আমরা এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছি। তবে আমাদেরও আর ওখানে থাকবার ইচ্ছে ছিলনা। তাই দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। নৃপেন’দা সহ দু’তিন জন কর্মচারী এসব মানিয়েই টিকে আছে এখনো। বিজ্ঞানের যুক্তিতে আজও সেই রহস্যের সমাধান হয়নি। প্রমাণিত হলো সব রহস্যের সমাধান বিজ্ঞান করতে পারে না।

রাজবাড়ী রহস্য ভৌতিক গল্প – সমাপ্ত

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!