দৈত্যের ট্রেন ভৌতিক গল্প -দেবরাজ মেহেতা
এক দৈত্য ছিল যার কাছে নিজের একটা ট্রেন ছিল। সে তার ট্রেনটা রাতের বেলায়
চালাতো ও একটা ড্রাইভার সেজে রাতের বেলায় নিজের ট্রেনে মাল ভরে নিয়ে মজা করে
ট্রেন চালাতে ভালোবাসতো। ওর সব সময় একটা নিয়ম ছিল যে সে খুব জোরে চালাবে। এত
জোরের সাথে ট্রেন চালাত যে সেটাকে সাধারণভাবে বন্ধ করা মুশকিল হতো তাই যখনই
কোন স্টেশনে তাকে থামতে হতো সে ইমারজেন্সি ব্রেক লাগিয়ে ট্রেনটা থামাতো
কিন্তু মাঝে মাঝে ও ঠিক স্টেশনে থামতে পারত না। এর ফলে অনেকবারই এমন হয়েছে যে
ওর ট্রেনের ইঞ্জিন খারাপ হয়ে গেছে। একদিন এক রাতে ট্রেন চালাতে চালাতে ও
থেমে গেল কিছু একটা দেখতে পেয়ে।কিন্তু আশেপাশে বা সামনে কিছুই দেখতে পেল না।
তারপর ও কিছুক্ষণ পর দেখতে পেল দূরে একটা ছোট্ট বাচ্চা রেললাইন পার করছে।
যেহেতু দৈত্যদের সাধারণভাবে দেখা যায় না তাই বাচ্চাটাও খালি ট্রেন দেখতে পেল
কিন্তু তোকে দেখতে পেল না। আর এদিকে খালি ট্রেনের ইঞ্জিন দেখতে পেয়ে ছোট
বাচ্চাটি ইঞ্জিন এর মধ্যে ঢুকে পড়ল আর নিজে নিজে একটা আন্দাজ করে ট্রেনটা
চালিয়ে ফেলল। এই দেখে দৈত্য তো খুব মজা পেল সে ভাবলো বাহ! বাচ্চা ছেলে তো বেশ
চালায় আমি এর সঙ্গে বরং ভাব করতে পারি। তখন ও নিজের জাদু করল আর ওই জাদুর পরে
ওকে দেখা যাচ্ছিল। তখন এই বাচ্চা ছেলেটা তাকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করল ” তুমি
কে ?আর তুমি কখন ট্রেনে উঠলে? আমি তো তোমায় দেখতে পাইনি।” তখন দৈত্য বলল যে
“আমি অনেক আগে থেকে ট্রেনে উঠে গিয়েছিলাম।” সে আরও জিজ্ঞাসা করল “আচ্ছা তোমার
নাম কি?”তখন ওই ছেলেটি বলল “আমি দিমু। কিন্তু তুমি কে? তখন দৈত্য বলল “আমি
সিম্বা।” বাচ্চাটা নাম শুনে ওকে জিজ্ঞেস করল “আচ্ছা লা্য়ন কি্্ সিনেমাতে যে
সিম্বা ছিল তুমি কি সেই সিম্বা রোল করেছিলে?” তখন দৈত্য বলল “হ্যাঁ হ্যাঁ আমি
করেছিলাম। “দেখতে দেখতে দুজনের মধ্যে অনেক কথাবার্তা হতে লাগলো। আর অজান্তেই
দুজনের বন্ধুত্ব হয়ে গেল। তারপরে ছেলেটা দেখলো লাল আলোর সিগন্যাল দেখাচ্ছে
তাই ছেলেটিও আস্তে আস্তে করে ইঞ্জিন থামিয়ে দিল। এরপর সেই রাতে বেশ কিছুদূর
যাওয়ার পর দৈত্য তার বাড়ির ঠিকানা জেনে ওর বাড়িতে তাকে পৌঁছে দিল। তাকে
দেখতে পেয়ে তার বাবা, মা খুব খুশি হয়ে গেল। মাঝেমধ্যেই দৈত্য তার সাথে দেখা
করতো এবং এভাবেই ওদের বন্ধুত্ব দিনের পর দিন আরো বাড়তে লাগলো। হঠাৎ একদিন
দৈত্য খবর পেল যে দিমুর শরীর খুব খারাপ। দৈত্য নিজেকে সামলাতে না পেরে
তাড়াতাড়ি করে তার সাথে দেখা করতে গেল। সিম্বা মানে দৈত্যকে দেখে দিমু ভীষণ
খুশি হয়ে গেল। অনেকক্ষণ কথা বলতে বলতে সিম্বা তাকে বলল যে সে আসলে একটি
দৈত্য। দিমু সে কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইলো না আর শেষ পর্যন্ত বলল যে “
তুমি যদি দৈত্য হতে তাহলে তুমি আমাকেই মেরে ফেলতে।” দৈত্য বলল যে “না আসলে আমি
তো ভীষণ একা আমার কোন বন্ধু নেই তাই তোমার সাথে বন্ধুত্ব করে আমার ভীষণ ভালো
লেগেছে আর আমি যাকে বন্ধু বানাই তার তো আমি কখনো ক্ষতি করি না। তোমার সঙ্গে
বন্ধুত্ব করার জন্যই আমি সিম্বা বলেছিলাম নিজেকে। কারণ আমি জানতাম যে তুমি
সিম্বাকে খুব ভালোবাসো। আর আমার মনে হয়েছিল যে আমি তোমাকে সিম্বা নাম বলি
তাহলে তুমি আমার সঙ্গে তাড়াতাড়ি বন্ধুত্ব করবে।” দিমু কিছুটা সংকোচে বলল
“তুমি আমাকে খাবে না তো দৈত্য?”একথা শুনে সে বললো “কখনো না, তুমি আমার সব থেকে
ভালো বন্ধু এবং একমাত্র বন্ধু আমি কি তোমাকে খেতে পারি?”এরপর দৈত্য তার নিজের
জাদু দিয়ে দিমুকে ঠিক করে দিল। তারপর থেকে দুজন দুজনের বন্ধু হয়ে থাকল সারা
জীবনের জন্য।
দৈত্যের ট্রেন ভৌতিক গল্প -সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
রাজবাড়ী রহস্য
ব্রহ্ম দৈত্য
প্রত্যাবর্তন