কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

Home » পুজো সংখ্যা ১৪৩১ » বিভীষিকা

বিভীষিকা

বিভীষিকা ভৌতিক গল্প – শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়

২৫ শে অক্টোবর ২০৩০। ভাবিনি আমাদের দলের পরপর ১০ জন এভাবে মারা যাবে। ভাইরাস ওদের সবাইকে মেরে ফেলেছে। একেই মারন ভাইরাস গোটা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে  ছড়িয়ে পড়েছে। তার ওপর আবার এই ভাইরাসকে কায়েম রাখতে বেড়ে চলেছে অ্যান্ড্র হিউম্যোনাইড রোবোটের অত্যাচার। প্রায় দেড় মাস হতে চলল আমি আর আমার গোটা একটা টিম এই ভাইরাস ও রোবট নিধনের জন্য যাত্রা শুরু করেছি। আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু পরিমল ও ইসমাইল ও আমার এই অভিযানে সামিল হয়েছে। সত্যিই আমি ওদের কাছে কৃতজ্ঞ যে ওরা নিজের জীবনকে পরোয়া না করেও আমার সাথে  নিজেদের জীবনকে জড়িয়ে নিয়েছে। আমি অগ্নিশ্বর, প্রফেসর অগ্নিশ্বর বসু। আমি একজন সাইন্টিস্ট। আমি মহারাষ্ট্রের এনসিএল অর্থাৎ ন্যাশনাল কেমিক্যাল  ল্যাবরেটরিটরির  এইচ ও ডি অর্থাৎ হেড অফ দা ডিপার্টমেন্ট। ডিপার্টমেন্টএ আমার নামধাম ও খ্যাতি ইতিমধ্যেই বিশ্বের বেশ কিছু জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। লোকে বলে সবই আমার পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায়ের জন্য কিন্তু আমি বলব এর মধ্যে ঈশ্বরের আশীর্বাদ সবচেয়ে প্রধান। আমরা বিজ্ঞানের যে সমস্ত আবিষ্কারই মনুষ্য সমাজে নিয়ে আসি না কেন সবই তা ঈশ্বরের ইচ্ছায় কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা ছাড়া এই ধরনের আবিষ্কার মনুষ্য সমাজের পক্ষে সম্ভবপর নয়। বর্তমানে যে ভাইরাসটা দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং সয়ে-শয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে সেই ভাইরাসটা সাধারণত জল থেকে আসছে মানে এই ভাইরাসটা জলে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ভাইরাসটার নাম মেলেনাস্টিকটাস টুয়েন্টি টু ভাইরাস। সাধারণত পানীয় জলের সাথে বা অন্য যেকোনো জলের সাথে মিশে যাওয়ার পর সেই জলটা খাওয়ার পরেই মানুষের দেহের চামড়া কুনো ব্যাঙের মতো হয়ে যাচ্ছে এবং মানুষগুলো কয়েকদিন আক্রান্ত থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের আলোচনার মাধ্যমে উঠে এসেছে বুফো ম্যালেনাস্টিকটাস অর্থাৎ কুনো ব্যাঙ এর দেহজ  রোগ এই ভাইরাসে মিশে আছে। সুতরাং এটা আন্দাজ করা যায় যে এই ভাইরাসটা শয়ে শয়ে কুনো ব্যাঙের হত্যা এবং তাদের শরীরের বিষ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।  আমাদের দেশে গতকাল পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখেরও বেশি। শুধু আমাদের দেশ নয় এশিয়া মহাদেশের সমস্ত দেশগুলিতেই এই ভাইরাসের প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই সমস্ত দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে আমাদের দেশ।এই ভাইরাসটা সাধারণত কেউ ইচ্ছে করে ছড়িয়ে দিচ্ছে পানীয় জলের ও বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের  সাথে। সেই জল যারাই পান করছে এবং খাবার যারাই খাচ্ছে  তারাই হয়ে উঠছে আক্রান্ত এবং তাদের কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে নিশ্চিত মৃত্যু হয়ে উঠছে অবশ্যম্ভাবী। এই ব্যাপারটাr সূত্রপাত হয় একটা ঘটনা থেকে যে ঘটনা যে ঘটনা রাতারাতি এশিয়া মহাদেশে ছড়িয়ে দেয় মারন ভাইরাস। ১৯৮৪ সালে ভূপালের ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড কেমিকাল কোম্পানিতে যে ভয়াবহ ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি ঘটেছিল। সেই ঘটনাটা  মানুষের কাছে বা আপাতদৃষ্টিতে দুর্ঘটনা হলেও বেশ কিছুদিন আগে জানা গেছে তার পিছনে ছিল ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত। এই অ্যাক্সিডেন্টটা কমপ্লিটলি ম্যানমেড। কারণ গত বছর রাঁচিতে গড়ে উঠেছিল  কেমিক্যাল লিমিটেড নামে একটি কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি এবং সেই ফ্যাক্টরিটি মাস দুয়েক আগে একইভাবে কেমিক্যাল গ্যাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এবং এই ব্যাপারে বিশদে তদন্ত করে জানা যায় ১৯৮৪ সালের ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনার সাথে এই ঘটনাটার এক অস্বাভাবিক মিল রয়েছে এবং যারা ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ছিল এই গ্যাস দুর্ঘটনা পেছনে রয়েছে তাদেরই হাত। এই খবরটা রাতারাতি ছড়িয়ে পড়েছিল এশিয়া মহাদেশের প্রতিটি দেশে। এই বিষয়টা তদন্ত করে যিনি জানতে পেরেছিলেন তিনি হলেন আমাদের ন্যাশনাল কেমিকাল ল্যাবরেটরির বৈজ্ঞানিক উপাচার্য স্যার জন ওয়াটসন। তিনি ছিলেন আমার সিনিয়র তথা পি এইচ ডি গাইড। এই ঘটনাটা প্রচার হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই খুন হয়ে যান তিনি। প্রফেসর ওয়াটসন হয়তো নিজেও বুঝতে পেরেছিল যে এই ঘটনাটা প্রচারের পর তাকে হয়তো মরতে হবে তাই আমাকে উদ্দেশ্য করে তিনি একটা চিঠি লিখেছিলেন। আমি কিন্তু খুন হতে তাকে দেখিনি তবে তিনি খুন  হয়েছেন এই কথাই বলছি কারণ আমার কাছে প্রফেসরের মারা যাওয়ার দুদিন আগে ফোন এসেছিল তিনি আমাকে কিছু জানাবেন বলেছিলেন এবং তার জন্য একটা জায়গায় দেখা করতে বলেছিলেন। কিন্তু এইটা বলার পর যিনি যেদিন ডেট দিয়েছিলেন তার কিছুদিন আগেই তার গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যান তিনি।কিছুটা অনুমান করা যায় যে তিনি সম্ভবত খুন হতে পারেন। প্রফেসরের গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে সকলেই বলছি এরা এক্সিডেন্ট কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এটা খুন। পুলিশ ের বাড়ি তল্লাশি চালান ছিল প্রফেসরের মৃত্যুর তদন্ত করার জন্য তখন আমি প্রফেসরের  করে ড্রয়ার থেকে এই চিঠিখানা পেয়েছিলাম। ঘরের মধ্যে সার্চ করা চলছিল সেই ফাঁকে আমি এই চিঠিটা পকেটে পুরে নিয়ে চলে এসেছিলাম পরে চিঠিটা আমি খুলেছিলাম এবং পড়েছিলাম। চিঠিখানা হয়তো আমাকে উদ্দেশ্য করেই লেখা ছিল কারণ চিঠিটাতে লেখা ছিল,

আমার আয়ু আর বেশিদিন নেই। তাই পরের চিঠিটা লেখার সময় পাবো কিনা বলতে পারছি না। তাই হাতে সময় থাকতে থাকতে তোমাকে চিঠিটা লিখে যাচ্ছি। আমি একটা বড় ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়েছি আই অ্যাম ইন এ গ্রিপ অফ ফ্যাটাল ইন্ত্রিগিউ। ব্যাপারটা প্রথম থেকে তোমাকে বলি। কিছুদিন আগে আমাদের কেমিক্যাল লিমিটেড ফ্যাক্টরিতে যে ভয়াবহ কেমিক্যাল দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেই দুর্ঘটনা পিছনে কারুর হাত আছে সেটা আমি জানতে পেরেছি আর এরাই ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই ধরনের কেমিক্যাল ডিজাস্টারের এরা প্রায় অনায়াসে ঘটিয়ে থাকে অনেক ছোটখাটো ডিজাস্টার ও এরাই ঘটিয়েছে যেগুলো আমাদের নিউজ পেপারে অতটা অ্যাকিউট হয়ে আসেনি। আমি কিছুদিন আগে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে মানে যেখানে ডিসাস্টারটা হয়েছে সেখানে গিয়ে কিছু কিছু রেকর্ড কালেক্ট করি। এবং অ্যাকডিং টু দোস রেকর্ডs ক্লুস আই হ্যাভ জাম্পড টু এ কনক্লিউশন দ্যাট দিস অল কেমিকাল ডিজাস্টার্স আর ম্যান মেড। একটু একটু করে আমি এই ইনফরমেশন গুলো আমি কিছু কিছু প্রচার করতে থাকি। এবং তারপর থেকেই বুঝতে পারি আমার সামনে বিপদে উপস্থিত হয়েছে। প্রথমে একদিন ইনস্টিটিউট থেকে বেরিয়ে গাড়িতে স্টার্ট দিয়েই বুঝলাম আমার গাড়ির ব্রেকটা কেউ ফেল করিয়ে দিয়েছে। প্রথমে সন্দেহটা হয়নি কিন্তু ডাউটটা আরো ক্লিয়ার হয়ে যায়। একদিন আমার অফিসের সুইচ বোর্ডের সুইচটা লুজ করে দেওয়ার পর। আগের দিনও সুইচটা শক্ত ছিল কিন্তু পরদিন অফিস গিয়ে দেখছি পুরো সুইচ বোর্ড তাই কারেন্ট হয়ে আছে। ইলেকট্রিক শক দিয়ে আমাকে মারার ই প্ল্যান ছিল। পরিকল্পনাটা এমনভাবে করা হয়েছিল যেন আমার মৃত্যুতে প্রমাণিত হবে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু বা দুর্ঘটনা বসত মৃত্যু। এর ফলে কেসটা কিছুদিন পরই ধামাচাপা পড়ে যাবে। আরো অনেক ঘটনা আছে সেগুলো আমি আস্তে আস্তে লিখব। এবং আমার ছাত্র অগ্নিশ্বর কে আমি জানিয়ে যাব। আরো অনেক ঘটনা আছে যেগুলো আমি তোমাকে বলবো আমি একটা সত্যি জানতে পেরেছি সেইটা তোমাকে একদিন জানাবো।”

পাঁচই নভেম্বর আমরা আমাদের টিম নিয়ে রাজস্থানে  এসে পৌঁছেচি। এই জায়গাটা দেখে মনে হচ্ছে অনেকেই এখনো টিকে আছে। কারণ একটাই এই জায়গায় রয়েছে বিস্তীর্ণ মরুভূমি এখানে জলের পরিমাণ কম। তাই জলের মধ্যে ভাইরাস মিশে যাওয়ার ভয় নেই। এখানে মাটি থেকে ডিরেক্ট জল উঠে আসে পাম্পের মাধ্যমে এখানকার মানুষ সেই জলই পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করে। আমাদের এখানে একজন চেনা পরিচিত ছিল তারই বাড়িতে আমরা আশ্রয় নিলাম দেখলাম তার বাড়িতে ভাইরাস আক্রমণ করলেও তাদের পরিবারের এখনো পর্যন্ত কেউ মৃত্যুর কবলে পড়েনি। তবে এরা অ্যান্ড্র হিউম্যানয়েড রোবটের অত্যাচারের শিকার হয়েছে। এদের মুখেই  শুনলাম নাকি বেশ কয়েকবার এই কদিন অ্যান্ড্র হিউম্যানয়েড রোবটগুলো এসে তাদের বাথরুমে অথবা খাবার জন্য সংরক্ষণ করে রাখা জলে ভাইরাস মিশিয়ে দিতে এসেছিল। কিন্তু এই পরিবারের সমস্ত সদস্যের রোবটের বিরুদ্ধে সমবেত লড়াই রোবটদেরকে পরাজিত করেছিল এবং রোবট গুলো ভাইরাস ছড়াতে ব্যর্থ হয়েছিল।

আমরা তিনজন  পরিবারের কর্তাকে মানে যিনি আমাদের মূল পরিচিত। তাকে বলে তাদের বাড়িতে একটা ঘরের রাত্রি যাপনের বন্দোবস্ত করলাম। হাতমুখ ধোয়া বাস স্নান করার জন্য ঘরের সাথে অ্যাটাচ বাথরুমে একটা কংক্রিটের বাথটাবে পাম্পে তোলা জল নিয়ে এসে ঢেলে ভর্তি করলাম।

 হঠাৎই বাড়ির ভেতর থেকে চিৎকার এবং আহত হওয়ার আওয়াজ । পরিমল ছুটে চলে গেল বাড়ির ভেতর দিকে আর তখনই শুনতে পেলাম ধস্তাধস্তির শব্দ। দেখতে পেলাম  পরিমলের যুদ্ধ চলছে একটা এন্ড্রো হিউম্যানয়েড   রোবটের সাথে। ধস্তাধস্তিতে ওরা আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে জল ভর্তি করা বাথটা আপনার দিকে এই সময় আমার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। যখন অ্যান্ড্র হিউম্যান রোবট টা বাথটাবের প্রায় একদম কাছে চলে এসেছে ঠিক সেই মুহূর্তে আমি এক হাতে পরিমলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ডান পায়ে জোরে একটা এন্ড্রো হিউম্যানের রোবট তার বুকে লাথি কষিয়ে দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে রোবটটা বাথটাবের জলে ছিটকে গিয়ে পড়ল আর তৎক্ষণাৎ জল লেগে রোবটের ভেতরের  সমস্ত ইলেকট্রনিক্স ওয়ার গুলো ঝিমিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ল সঙ্গে সঙ্গে রোবটটা হয়ে উঠল অচল। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই রোবটটাকে নিস্তেজ অচল ভাবে বাথটাবটার জলে ভাসমান অবস্থায় দেখা গেল।

আমরা আবার পম্পে মাটি থেকে জল ততুলে বাথটাবে ভর্তি করলাম। সেই ভর্তি করা জলে স্নান খাওয়া সেরে পরের দিন আমরা বেরিয়ে পড়লাম।

দশই নভেম্বর আমরা এসে পৌঁছেছি লাদাখে। এখানেই তাবু খেলে থাকবো কিছুক্ষণ কিছুদিন। আর কতদিন যে আমাদের এভাবে ভবঘুরের মতো ভাইরাস আর রোবটের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে হবে সেটা স্বয়ং অন্তর্যামীই জানেন।

আমরা রাজস্থানের ওই পরিচিত বন্ধুর বাড়ি থেকে বেশ কিছু খাওয়ার নিয়ে এসেছিলাম সেই খাবারগুলোই খেয়ে এই কদিন আমাদের চলে যাবে।

 আমরা একটা তাবুতে ই কোনরকমে রাত্রি যাপন করছি এই কদিন। আমাদের সঙ্গে আরও তাবু খাটানোর সরঞ্জাম আছে।

ইসমাইল আমাকে  বলল,

” একটা পরিকল্পনা আছে যাতে এই ভাইরাস আর এই অজস্র এন্ড্রো হিউম্যান রোবটকে বিনাশ করা যেতে পারে,”

“কি পরিকল্পনা? আমি আর পরিমল দুজনেই শুনলাম কথাটা?”

“প্লানচেট”

*প্লানচেট?”

“কিন্তু প্ল্যানচেট করে কাকে ডাকবো?”

 আমার কথা শুনে পরিমল বললো,

 “ইসমাইল বোধ হয় প্ল্যানচেট করে প্রফেসর ওয়াটসনের সৌল কি ইনভোক করতে চাইছে”

আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম,

“কিন্তু স্যারের সৌল কে নামিয়ে আমরা করব টা কি?”

“তুমি বোধহয় বুঝতে পারছ না কি করব,” পরিমল কথাটা বলে আমাকে একটা ইঙ্গিত করল আর সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথায় ঢুকে গেল ওদের উদ্দেশ্য মানে কেন ওরা প্লানচেট করতে চাইছে

“তোমরা প্ল্যানচেট করতে চাইছো, স্যার এর সোল কে ইনভোkকরার জন্য যাতে স্যারের সোল এসে এই ভাইরাস আর এন্ড্রোহামনের রোবটকে বিনাশ করার উপায় বলে দেয়”

“এক্সাক্টলি,”

 ইসমাইল ওপর নিচে মাথা নারল এই কাজটা কিন্তু শুধু তোমাকে করতে হবে অগ্নিশ্বর।

“আমাকে?”

পরিমল বলল,

“হ্যাঁ অগ্নিশ্বর এই কাজটা একমাত্র তুমিই করতে পারবে, স্যার তোমাকে খুব ভালবাসে। তুমি স্যারকে ডেকে আনবে, মানে আহবান করে আনবে তুমি এটা যেখানে খুশি করতে পারো কিন্তু আমরা তোমার সাথে থাকবো না স্যার তোমাকে যে খুব ভালোবাসতেন ।তোমাকে স্যার সবকিছু বলবে। আমরা সবশেষে ভালই চাই। তোমার সাথে আমরা সব সময় আছি। আমার আর ইসমাইলের মনে হচ্ছে। মানে তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে প্রফেসর ওয়াটসন যখন এই তদন্ত করে মারা গিয়েছে তাহলে ওয়াটসনের কাছে নিশ্চয়ই এই ভাইরাস আর এন্ড্রো হিউম্যান রোবটের বিনাশ করার উপায় জানা আছে। কিন্তু বেঁচে থাকতে উনার কাছ থেকে আর এই উপায় জানা গেল না তাই এখন একমাত্র উপায় ওয়াটসনের মৃত সোলকে আহবান জানিয়ে তার থেকে সমস্ত কিছু জেনে নেওয়া”

ওদের কথা আমাকে অনেকটা ভাবিয়ে তুললো,

“আমাকে একদিন সময় দাও আমি সবটা ভেবেই জানাচ্ছি।”

ইসমাইল বলল,

“নিশ্চয়ই অগ্নিশ্বর তুমি সময় নাও না একদিন কেন দুদিন সময় নাও ভেবে চিন্তে তারপর আমরা এই কাজেই হব। মানে তুমি দ্বারাই এই কাজ হবে। একমাত্র তোমার সাথেই প্রফেসর ওয়াটসনের গভীর সম্পর্ক ছিল আমাদের তাই বিশ্বাস তুমি একমাত্র ওনার কাছ থেকে এই সমস্যা দূরীকরণের উপায় বা ওয়েটা বার করতে” ।

আমি বললাম

“তোমাদের কথা শুনে আমারও মনে হচ্ছে যে এই প্ল্যানচেটের মাধ্যমেই ওয়াটসন স্যারকে নামিয়ে হয়তো ওনার কাছ থেকে এই ড্রেডফুল প্রবলেমের সলিউশনটা হয়তো ওয়ে আউট করা যেতেও পারে।”

 দুদিন আমি নিজের ক্যাম্পে থেকে পরিকল্পনা করলাম যে কিভাবে আমি প্রফেসর ওয়াটসনের সোল কে ইনভোক করব।  প্ল্যানচেট করতে গেলেই ওইযা বোর্ড লাগে। আবার অনেক সময় উইজা বোর্ড ছাড়াও প্ল্যানচেট করা যায় তবে সেক্ষেত্রে প্ল্যানচ্যাটের পদ্ধতি হয় একেবারে অন্যরকম। সঙ্গে যেহেতু উইজা বোর্ড নেই সুতরাং মোবাইলে গুগলে উইযা বোড ছাড়া প্লানচেটেরপদ্ধতি সার্চ করতেই গুগল প্ল্যানচেট পদ্ধতির তথ্য সমুহের এক লম্বা লিস্ট মোবাইল স্ক্রিনে ফুটিয়ে তুলল। এর মধ্যে থেকে আমি একটা পদ্ধতি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিলাম। আমি ইসমাইল আর পরিমল কে জানালাম না যে কখন কোন মুহূর্তে প্লানচেট করব। আমি ঠিক করলাম ওরা ঘুমিয়ে পড়লে, যে কোন একদিন রাতে আমি আমার নিজের ক্যাম্পে নিঃশব্দে  প্রফেসর ওয়াটসন কে আহবান করতে পারব। তারপর ওনার থেকে এই ভাইরাস এবং রোবট নিধনের সমস্যা জেনে নিয়ে পরে আমি ইসমাইল ও পরিমলকে সময় মত জানাবো।

১৭ইiনভেম্বর রাত সাড়ে ১১ টা।অন্ধকার ক্যাম্পে একটা মোমবাতি জালালাম তারপর মোমবাতির শিক্ষা তার সামনে দুটো হাত রেখে বিড়বিড় করে একটা ইংরেজি মন্ত্র পড়তে লাগলাম আর চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে লাগলাম প্রফেসর ওয়াটসনের মুখটা। কিভাবে কতক্ষণ ছিলাম জানিনা হঠাৎ অনুভব করলাম আমার চারপাশের পরিবেশটা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে আসছে। বেশ ঠান্ডা হয়ে আসছে। হঠাৎ অনুভব করলাম আমার হাতের উপর অন্য একটা হাতের স্পর্শ। হাতটা বরফের চেয়েও ঠান্ডা। তারপর শুনতে পেলাম প্রফেসর ওয়াটসনের ঘ্যাঁস ঘ্যাঁশে ফিসফিসানি গলা,

“অগ্নিশ্বর হাউ আর ইউ অগ্নিশ্বর?”

আমি আস্তে আস্তে মন্ত্র পড়া থামিয়ে চোখের পাতা দুটো চেয়ে দেখলাম। আমার সামনে বসে আছে স্বয়ং প্রফেসর ওয়াটসন না স্বয়ং স্যার ওয়াটসন বলবো না  কারণ স্যারের ছায়ার মত শরীরট অবয়বের মত এতটাই পাতলা এবং স্থিত যে শরীরের মধ্যে দিয়ে আমার ক্যাম্পের ও ওপাশ টা দেখা যাচ্ছে। যেন বায়বীয় অবয়বের মত।

“কেমন আছো তুমি অগ্নিশ্বর? হাউ আর ইউ?”

 “নাথিং গুড ইজ গোয়িং অন স্যার।ভাইরাসের এফেক্ট বেড়ে গেছে, এর সাথে সাথে অ্যান্ড্র হিউম্যানয়েড  রোবটের টিরানিও বেড়ে গেছে।”

“ডোন্ট ওয়ারি অগ্নিশ্বর। চিন্তা করো না। হিস্ট্রিতে যখনই যখনই টিরানি বেড়ে গেছে চারিদিকে আনারকি চলছে কোন না কোন উপায় ঠিক বের হয়েছে এএই নারকি মিডিগেট করার জন্য।

আর তুমি আমাকে তো সেই কারণেই ডেকে এনেছো তাই না।  ইউ নো দ্যাট ডেড সোল ক্যান রিড পিপলস মাইন্ড। তুমি নিশ্চিন্তে থাকো, অগ্নিশ্বর আই উইল টেল ইউ দ্য ওয়ে টু ওভারকাম দ্যা কারেন্ট ডেডলি সিচুয়েশন।

আই উইল টেল ইউ সাম চান্ট। এন্ড ইউ হ্যাভ টু রিড ডিস চ্যান্ট আট লিস্ট টেন টাইমস ইনফ্রন্ট অফ অ্যান্ড আইডল।  আইডল টা একটা স্নেক গডের। তোমরা বাংলাতে একটা দেবীর নাম বলোনা কি মা মনসা। সেটারই কোন একটা মূর্তি।সেই মূর্তির সামনে এই চ্যাট গুলো রিপিটেডলি রিড করলে ও ফল পাবে তুমি । মূর্তিটা আছে আমার স্টাডি রুমের টেবিলের ওপর। প্লিজ। গো ফাস্ট এন্ড ডু দা জব এন্ড সেভ দ্যা ওয়ার্ল্ড ফ্রম দিস  আমার স্টাডি রুমে গিয়ে দেখবে আমার ট্রলি ট্রিপল এর গায়ে তিনটি ড্রয়ার আছে, একদম লাস্টের ড্রয়ার মানে তিন নম্বর তিন নম্বর ড্র একটা খুলবে ওর ভেতর রয়েছে সেই আইডলটা আর তার সাথে রয়েছে একটা চিরকুট চিরকুট টার মধ্যে লেখা আছে একটা চ্যাট মানে মন্ত্র। সেই মন্ত্রটা দশবার ওই আইডিয়াল টার সামনে চোখ বন্ধ করে সেন্ট করবে তারপর এই সব ঠিক হয়ে যাবে। ও রিমেম্বার ওয়ান থিং যখন তুমি আমার স্টাডি রুমে যাবে তখন তুমি সেখানে একটি স্নেকের কর্পস মানে সাপের মৃতদেহ নিয়ে যাবে মৃতদেহটাকে আই দলটির পাশে রেখে তারপর চিরকুটে লেখা মন্ত্রটা তোমাকে দশবার বলতে হবে। আমি তোমাকে স্নেকের ডেড বডি কেন নিয়ে যেতে বলছি তুমি জানো?”

“না স্যার”

কি ভাইরাসটা ছড়াচ্ছে ওই ভাইরাস টার নাম ম্যালোনস্টিকটাস 22 ভাইরাস অর্থাৎ ব্যাঙের দেহজো রোগ বহন করে চলেছে।। আমাদের পরিবেশের ফুড সার্কেল অনুসারে ব্যাঙের খাদক হল সাপ তাই তোমাকে সাপের মৃতদেহ নিয়ে যেতে বলছি সেই মৃতদেহতেই এই ভাইরাস দূর হয়ে যাবে।”

 কথাগুলো বলেই হঠাৎ প্রফেসর ওয়াটসনের সূক্ষ্ম অবয়বটা  অদৃশ্য হয়ে গেল।

আমি সারারাতটা ভাবনার ঘরে কাটিয়ে দিলাম। পরের দিন সকালে আমি পরিমল আর ইসমাইলকে গতকাল রাতের সমস্ত কথা বললাম

ইসমাইল বলল, ওয়েল ডান পরিমল। নাও ইউ হ্যাভ টু ডু ইট ফার্স্ট। আমরা তো আর জানি না তোমার স্টাডি রুমটা কোথায়? নাহলে আমরাও তোমার সাথে যেতাম। অবশ্য তুমিতো বলছো তোমাকে একাই যাবার নির্দেশ দিয়েছে তোমার স্যার তাহলে তুমি যাও গিয়ে তাড়াতাড়ি প্রবলেম সলভ করে এসো। এই সিচুয়েশন থেকে মুক্তি দাও আমাদের। মুক্তি দাও গোটা পৃথিবীকে।”

আমি বললাম,

“তোমাদের এইখানে আর বেশিদিন থাকাটা ঠিক হবে না তোমরা আস্তে আস্তে নেপালের দিকে এগিয়ে যাও। আমি বরঞ্চ ফিরে  যাব স্যারের ওখানে তারপর দেখি ঈশ্বরের কৃপায় কি করতে পারি। আমি সবকিছু স্যারের কথা মতোই করব”

একুশে নভেম্বর।পরিমল আর ইসমাইল বেরিয়ে পড়ল নেপালের উদ্দেশ্যে আর আমি চলে গেলাম কলকাতায়। কলকাতায় পৌঁছতে আমার দুদিন সময় লাগলো। 24 শে নভেম্বর সকাল দশটা, আমি এসে পৌঁছেছি কলকাতায়।প্রথমে গেলাম আমার বাড়িতে তারপর সেখান থেকে আমার অফিসে গিয়ে প্রফেসর ওয়াটসনের পারসোনাল লকারটা খুললাম স্যারের লকারের চাবি আমার কাছেই থাকে। লকার থেকে স্যারের বাড়ির স্টাডি রুমের ঘরের দরজায় চাবিটা নিয়ে  গেলাম স্যারের বাড়ি। স্যারের বাড়িতে গিয়ে সাড়ে স্টাডি টেবিলের তিন নম্বর ড্রাইভার থেকে মূর্তিটা বার করলাম বার করলাম। একটা ছোট পাথরের । মূর্তির সমস্ত দেহটা মানুষের এবং মাথাটা সাপের। এবং সেই মূর্তিটাকে কে  পেঁচিয়ে রয়েছে একটা বিরাট সাপ। সাপটা ফনা তুলে রয়েছে সাপের মাথায় দুটো বড় শিং। এটাই তাহলে মা মনসার একরূপ। এটা কি আমাকে উপাসনা করতে হবে। মূর্তিটাকে হাতে তুলে নিয়ে দেখলাম একবার। মূর্তিটা বহু পুরন ো সামান্য ধুলো পড়েছে সেটাই আমি পকেট থেকে আমার রুমালটা বার করে মূর্তিটা ভাল করে মুছে নিলাম। তাতে মূর্তিটার ধুলস ফ্লোরে গিয়ে সাপের চোখ দুটো আরো স্পষ্ট হয়ে গেল। শুধু দুটো চোখ যেন সম্পূর্ণ জীবন্ত লাগছে। যেন ওই চোখ দুটো দিয়ে সে আমাকে দেখছে। হঠাৎ মূর্তিটা হাতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর চারপাশের বাতাসটা কেমন যেন ভারি ভারি মনে হতে লাগলো। আমি মূর্তিটাকে নামিয়ে ঘরটা একটু পরিষ্কার করে নিলাম। উপাসনা কক্ষ সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হয় এইটাই নিয়ম। ঘরটা পরিষ্কার করে আমি আবার চাবি দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম ঠিক করলাম ঠিক আছে আজ রাত্রিবেলা উপাসনা করবো এই মূর্তি। আগে একটা সাপের মৃতদেহ জোগাড় করতে হবে।

কথামতো আমি জুলজিক্যাল মিউজিয়ামে গিয়ে আমার পরিচয় দিয়ে স্পেশাল রেফারেন্সে একটা মৃত সাপ নিয়ে এসে সন্ধ্যেবেলায় সোজা চলে গেলাম প্রফেসর ওয়াটসনের ফ্ল্যাটে।তারপর প্রফেসর ওয়াটসনের স্টাডি রুমের ড্রয়ার থেকে বের করে আনলাম একটা সাদা খাম। খামের ভেতর রয়েছে একটা চিরকুট চিরকুটে লেখা আছে একটা চান্ট। আমি মূর্তিটার পাশে মরা সাপটাকে রেখে চিরকুটের মন্ত্রটা চোখ একবার পড়ে নিলাম, মন্ত্রটা ইংরেজিতে লেখা।

“গড ও গড ডিসেন্ড ইনটু দ্য ওয়ার্ল্ড

শো ইউর পাওয়ার টু পাওয়ার গড ওহ snake গড কাম ডাউন কাম ডাউন এন্ড সেভ দ্যা ওয়ার্ল্ড। “

কিছুক্ষনের মধ্যেই আমি বুঝতে পারলাম আমার চারপাশের বাতাস ক্রমশ ভারী হয়ে আসছে।  একটা থমথমে স্তব্ধতা যেন টুটি টিপে ধরেছে বাতাসের।আমি প্রফেসর ওয়াটসনের কথামতো চোখ বন্ধ করে আরো কয়েকবার এই মন্ত্রটা জব করতে লাগলাম। যখন দশটা বার মন্ত্রটা পড়লাম। তখন অনুভব করলাম আমার চারপাশের বাতাস যেন আরো ভারী হয়ে উঠেছে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আমার। হঠাৎই যেন মনে হল চারপাশে কিসের একটা যেন নড়াচড়ার শব্দ । আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালাম আমি। আর তাকানো মাত্রই আমার সারা শরীরে একটা হিমশীতল স্রোত বয়ে গেল। আমি দেখলাম  মূর্তির পাশে পড়ে থাকা সাপের মৃতদেহটা এক বিরাট সাপের আকার ধারণ করেছে এবং সেটা জীবন্ত। আপনার মাথায় দুটো বড় বড় শিং। তার দেহ বর্ণনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। হঠাৎই সেই অতিকায় দানবাকৃতির সর্পটা তার লেজ দিয়ে আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে  জড়িয়ে ধরল। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না আস্তে আস্তে সাপটা চেপে ধরছে আমার বুকটাকে। ঠিক সেই মুহূর্তে দেখলাম মূর্তিটা আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে বিশাল বড় প্রায় ঘরের অর্ধেকটা অংশ দখল করে নিল মূর্তিটা। আমি নড়াচড়া করতে পারছি না আস্তে আস্তে দেখলাম  সাপের মুখটা আমার ঠিক মাথার উপরে নেমে এসেছে। ঠিক তখনই চোখ গেল দূরে একটা আবছা  অবয়বের দিকে সমস্ত শরীর মানুষের কেবল মাথাটা একটা সাপের। ফনা তোলা সাপের। বেশিক্ষণ সেটা দেখতে পারলাম না কারণ ততক্ষণে আমায় জড়ানো সাপটা আস্তে আস্তে আমার মাথাটা গ্রাস করতে শুরু করেছে। আমি বুঝতে পারলাম আমার প্রাণ প্রদীপ নিভে গেল।

১৭ই নভেম্বর বেলা বারোটা। ইসমাইল আর পরিমল দুজনে কলকাতা থেকে দূরে একটা বাংলয়ে চা খেতে খেতে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল।

 ইসমাইল বলল,

বোকাটা অ্যাপোফিশের  মূর্তিকে মা মনসার রূপ ভেবে তাকে আহবান জানিয়ে প্রাণটা বিসর্জন দিল। অ্যাপোফিস হল হল এক মিশরীয় অপদেবতা। এই দেবতাকে বলা হয় বিশৃঙ্খলার দেবতা। অর্থাৎ ইভিল গড অফ কেওস। শোনা যায় এই অ্যাপোফিস মিশরের দেবতাদের রাজা সূর্যের দেবতা রা কে গ্রাস করতে উদ্যোগ হয় এবং সর্ব রূপ ধারণ করে। রা এর চরম শত্রু এই অপদেবতা। গোটা সূর্যকে গ্রাস করতে চায় এই অপদেবতা আর সেখান থেকেই শুরু হয়েছে এই ভাইরাস এই ভাইরাসেরও উদ্দেশ্য সমগ্র সূর্যের আলোয় আলোকিত হওয়া পৃথিবীকে ভাইরাসে আক্রান্ত করে গ্রাস করে ফেলা।

তবে আমাদের পরিকল্পনা কিন্তু সফল হয়েছে। আমরা ওকে আমাদের ফাঁদে ফেলতে পেরেছি। আমার তৈরি প্রজেক্টর প্রফেসর ওয়াটসনের বায়বীয় ছবিকে এমন ভাবে উপস্থাপিত করেছ করেছে যে দেখলে যেন মনে হবে স্বয়ং প্রফেসরের আত্মা অপার্থিহ জগত থেকে পাঠিব ও জগতে নেমে এসেছে। অগ্নিশ্বর ভাবলো ও প্ল্যানচেট করে প্রফেসরের আত্মাকে ইন ভোগ করে নামিয়ে এনেছে। আর প্রফেসরের ওই  বলা কথাগুলো তো আমাদেরই কথার নকল আমি আর তুই তো প্রফেসরের গলা করে বললাম যে ওই মূর্তির সামনে চ্যান্ট গুলো রিপিট করতে যাতে মূর্তিপ্রসন্ন হয়। ও ভেবেছিল এই মন্ত্র গুলো উচ্চারণ করলে হয়তো ভালো ফল পাবে কিন্তু ও তো জানত না এই মন্ত্রগুলো আসলে অপদেবতা অ্যাপফিসকে জাগানোর মন্ত্র। আসলে ওই চ্যাট গুলো ছিল ডিমানিক গড অ্যাপোফিস কে জাগানোর মন্ত্র যে মন্ত্র উচ্চারণ করার ফলে স্বয়ং এপিস বিরাট সর্পরূপে এসে অগ্নিশ্বর কে গ্রাস করেছে। অপদেবতার প্রকোপে  অগ্নিশ্বর প্রাণ হারিয়েছে।  বলা হয় কোন মূর্তিকে পুজো করার আগে সেই মূর্তি সম্বন্ধে ভালোভাবে জেনে নিয়ে তার উপাসনা করতে হয় নয়তো সেই মূর্তির দেবতা ভুল ভাবে পূজিত হলে নেমে আসে তার প্রকোপ। বেচারা অগ্নিশ্বর টা সব জানতেও পারল না যে প্রফেসর এর দুর্ঘটনার তো আমরাই দায়ী  প্রফেসরের গাড়ির ব্রেক ফেল  আমরাই করিয়ে দিয়েছিলাম কারণ প্রফেসর আমাদের কথা জানতে পেরে গেছিল জানতে পেরে গিয়েছিল যে আমরাই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম এই  মেলেনস্টিকটাস  টোয়েন্টি টু ভাইরাস। আমরা মিশরের অপদেবতা অ্যাপোফিস এর পূজারী। যে এপোফিস হলো অপদেবতা। এবং যে সর্প দেবতার আরাধনা তেই আমরা পেয়েছি তার খাদ্য অর্থাৎ ব্যাঙের লালারস থেকে তৈরি ভাইরাসএর উপাদান যে উপাদানগুলো আমরা মিশিয়ে দিয়েছিলাম সমস্ত জায়গায় জলে খাবারে এবং অন্যান্য সমস্ত জায়গায়। প্রফেসর ওয়াটসন কে মরতে হতো না যদি সে আমাদের সমস্ত কথা জানতে না পেরে যেত। উনি জানতে পেরে গিয়েছিলেন যে আমরা অ্যাপোফিসের পূজারী, আমরাই ভাইরাস এবং অ্যান্ড্র হিউম্যানয়েড প্রকোপ ছড়িয়েছি এবং আমরাই কেমিক্যাল লিমিটেডে নিউক্লিয়ার অ্যাক্সিডেন্টটা ঘটিয়েছি।”

পরিমল বলল, “এবার তাহলে করনীয়,”

অট্টহাস্য করল ইসমাইল,

“এবার?এবার তাহলে ভাইরাস আর রোবটকে আরো শক্তিশালী করে তোলাই আমাদের করনীয় যাতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পৃথিবী তলিয়ে যায় সম্পূর্ণ ধ্বংস গর্ভে। দুজনে নেই হাসছে এবার তাদের অট্টহাসিতে গমগম করে উঠছে পারিপার্শ্বিক প্রকৃতি।

বিভীষিকা ভৌতিক গল্প – সমাপ্ত

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!