ভুতুড়ে বাড়ি ভৌতিক গল্প – নিবেদিতা মুখার্জী
তপেনদের বাড়ীতে আজকে বিরাট হইহই রব,ওরা তিনভাই মিলে যাবে বেড়াতে কুসুমপুরে,কিন্তু এত জায়গা থাকতে কুসুমপুর গ্রাম কেন,আসলে তপেনের পছন্দ একটু গ্রাম্য জায়গা।যাইহোক,যাওয়ার দিন স্থির হয়ে গেল,চারদিনের ট্যুর,ওখানে একটা বাড়ী ভাড়া করা হবে স্থির হলো,কারণ কোনো ভালো হোটেল ওখানে নেই,হলিডেহোম নেই,ওদের কোনো আত্মীয়ের বাড়িও ওখানে নেই,ওদের কোনো আত্মীয়ের বাড়ীও ওখানে নেই,যেখানে চারটে দিন থাকতে পাবে।
যাইহোক নির্দিষ্ট দিনে ওখানে গিয়ে একটা বাড়ীভাড়া নেয়া হলো,বাড়িওয়ালা এক মুসলমান রমণী,ঘরঘরে গলায় কথা বলেন,গলার স্বরটা কেমন যেন অদ্ভুত,যেন অনেক দূর থেকে ভেসে আসছে মনে হয়!যাইহোক,বাড়ীতে ঢুকে তপেন ভাবলো স্নানটা সেরে নেয়া যাক।বাথরুমে যেই ঢুকেছে,অদ্ভুৎ সব কান্ড!কোথায় যেন শকুনের ডাক,ঘুঘুর ডাক,দূর থেকে নাকিসুরে কান্নার আওয়াজ,বাথটবে স্নান করতে গিয়ে দেখে ,সাংঘাতিক কান্ড,রক্তে ভাসছে বাথটবটা।আবার যেন উবে গেল রক্তটা, দেখা গেল বাথটবটা আর নেই!ভয়ে চিৎকার করতে গেল তপেন,পারলো না,কে যেন তার গলা চেপে ধরেছে,মনে হলো টিপে ধরেছে,তবু কষ্ট করে খুললো বেরোতে গিয়ে মনে হলো,কে যেন পা টেনে ধরছে।যাইহোক,কোনোক্রমে চলে এলো,কিন্তু আসতে গিয়ে মনে হচ্ছে,বারবার একই জায়গায় ফিরেফিরে আসছে, কি গা ছমছমে পরিবেশ!কোথাথেকে শোনা যাচ্ছে নূপুরের রিনরিন শব্দ,একটানা ঝিঁঝিঁ ডেকেই চলেছে,বাড়ির উঠোনে একটা দোলনা দেখা গেল এমনি এমনি দুলছে।তপেনের মনে হলো কে যেন ওখানে বসে আছে,একটা বউ না!হাওয়ায় মিলিয়ে গেল যেন,একটা ছায়ামূর্তি মনে হলো যেন সামনে দিয়ে চলে গেল।হঠাৎ তার অন্য দুই ভাইকে দেখতে পেলো ভয়ে দৌড়ে আসছে,তারা হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,তারা একটা ঘরে কতকগুলো রক্তমাখা লাশ পড়ে থাকতে দেখেছে।কিন্তু ওই ঘরে গিয়ে কিছু পাওয়া গেলো না,কিন্তু তপেনের মনে হলো কে যেন ঘরঘরে গলায় বলছে,”আমি মেরেছি ওদেরকে।”
পরদিন বাড়িওয়ালি ভদ্রমহিলার কাছে জানতে পারলো,ওই বাড়ীর মালকিন ভালোই অবস্থাপন্ন ছিলেন,তার ছেলে ভালোবেসে বিয়ে করে এক গরীবের মেয়েকে,বিয়েতে পঞ্চাশহাজার টাকা পন দাবী করেন তিনি,যা তারা দিতে পারেনি,তার জন্য বৌমাকে যতপরোনাস্তি অত্যাচার করতেন তিনি,সারাদিন খাটাতেন তাকে,ঠিকঠাক করে খেতে দিতেন না,গালিগালাজ,মারধর করতেন,ছেলে কর্কট রোগে মারা যাওয়ার পর অত্যাচার আরও বেড়ে যায়,এর কিছুদিন পর ওর শ্বাশুড়িও গায়েব হয়ে যান,তার হদিশ পাওয়া যায়নি,সেই থেকে এ বাড়ি ভুতুড়ে বাড়ী!
তপেনরা আতকে উঠলো এই গল্প শুনে।তারা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করলো তিনি এত কথা জানলেন কি করে,ওই বোরখাপরা ভদ্রমহিলা তখন বোরখা তুললেন,ওরে বাবা!কি বীভৎস রক্তমাখা মুখ তার!”ওরে,বাপরে”বলে চিৎকার করে ওঠে তপেনরা,ভয়ে মূর্ছা যায় আর কি,মহিলা মুহূর্তে অদৃশ্য যায়,পরে যাকে কয়েকফোঁটা রক্তবিন্দু,কি সাংঘাতিক!তপেনরা ঠিক করে,এ বাড়িতে আর নয়,মানে মানে কেটে পরাই ভালো,এখুনি পালাতে হবে,বাক্সপ্যাটরা গুছিয়ে তারা তখুনি যাত্রা করলো বাড়ির উদ্যেশ্যে।
ভুতুড়ে বাড়ি ভৌতিক গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
রাজবাড়ী রহস্য
ব্রহ্ম দৈত্য
প্রত্যাবর্তন