জ্বর প্রেমের গল্প – উৎপল চক্রবর্তী
“কী রে, কী হল তোর? সকাল থেকেই আজ খুব চুপচাপ?”
“না, তেমন কিছু না।”
“তেমন কিছু না, মানেও তো কিছু!”
“হ্যাঁ মানে শরীরটা কাল রাত থেকেই…”
“বুঝেছি খারাপ লাগছিল। তাতে কী হয়েছে? তাই বলে মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে রাখতে হবে?”
“রাতে একবার জ্বরও এসেছিল।”
“জ্বর? সেকি! আমাকে ডাকিসনি কেন?”
“আসলে–“
“বুঝেছি। সারাদিন হাসপাতালে পেশেন্ট দেখে ক্লান্ত মনে করে তুই একটা এত বড় একটা বিষয় চেপে গেছিস। দেখি দেখি, কাছে আয়তো!”
“না, না। আমাকে ছুঁস না তুই। যদি আমার থেকে তোর কিছু…”
“কিছু হয়ে যায়, তাই তো? তা হোক। কিছু হয়ে যাক আমারও তোর সাথে।”
এই বলে শোভন হাত ধরে কাছে টেনে নিল প্রিয়াঙ্কাকে। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে বলল, “একী, তোর গা যে একেবারে পুড়ে যাচ্ছে! দেখি দেখি, থার্মোমিটারটা কোথায়?”
শোভন তাপ মেপে দেখে ১০২।
প্রিয়াঙ্কাকে জড়িয়ে ধরে সে বলল, “কি হয়েছে বল তো? বিয়ের সময় ঠাকুরমশাই যে ঘটা করে আমাদের দুজনের কাপড়ের খুঁট বেঁধে দিয়েছিল গত বছর, তা কি শুধু একদিনের জন্য?”
প্রিয়াঙ্কা জোর করে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, ”সে জন্যই তো এখন দূরে থাকতে চাইছি রে।”
আগের দিন বাজারে গিয়ে অন্তত সাত আট দিনের জন্য বাজার গুছিয়ে রেখেছিল শোভন। দুধ গরম করে কর্নফ্লেকস এগিয়ে দিয়ে বলল, ”নে এটা খেয়ে নে তো! আর চটপট তৈরি হয়ে নে।”
শোভন নিজেই ওকে চামচে করে খাওয়াতে গেলে, ও বাধা দিল। বলল, ”তুই চার চামচ আগে খেয়ে নিয়ে আমাকে দে। আমার এঁটো এখন কিছুদিন তুই খাস না।”
অগত্যা তাই করতে হল শোভনকে। বেরতে হবে। কখন ফিরবে জানা নেই। তাই সামান্য কিছু দুজনেরই খেয়ে নেওয়া প্রয়োজন ছিল। মনে মনে এসব ভাবতে ভাবতেই শোভন স্নান সেরে নিল। আর প্রিয়াঙ্কাকে একটা প্যারাসিটামল খাইয়ে দিয়ে নিজে চট করে তৈরি হয়ে নিল।
প্রিয়াঙ্কার গা স্পঞ্জ করতে করতে শোভন বলল, ”যা হবে আমরা দুজনে মিলেই সব সামলাব। তুই চিন্তা করবি না একদম।”
একটা উবের আগেই ডেকে নিয়েছিল সে। ওঠার সময় ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করল, “দাদা, ভাল করে স্যানিটাইজ করা আছে তো?”
“হ্যাঁ আছে দাদা। নিরাপদে উঠুন।”
“চলুন সোজা বেলেঘাটা আইডি।”
ড্রাইভার একটু যেন থমকে গেল। কিন্তু কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট করে দিল। মাস্কের মধ্যে তার মুখের চাহুনি কিন্তু শোভনের বুঝতে অসুবিধা হয়নি। মাঝপথে নামিয়ে দেবে না তো! গাড়ির কিছু একটা খারাপ হয়েছে সেই অজুহাতে? যদি সরাসরি থানায় ঢুকিয়ে দিয়ে বলে অ্যাম্ব্যুলেন্স ডাকতে! এখন কোনো অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যায় না।
যা হোক শেষপর্যন্ত কিছুই আর হল না।
আইডিতে পৌঁছতেই লম্বা লাইন দেখে প্রিয়াঙ্কা আঁতকে উঠল। কোনও-না-কোনও চেনাশোনা জুনিয়র ডাক্তার বেরিয়ে গেলে অবশ্য লাইনের প্রশ্ন নেই। কিন্তু ওদের সেসব চিন্তা নেই। কোনো সুযোগ কখনও নেয়নি ওরা। আর নেবেও না সেটা প্রায় জানা। তাই যদি না হতো তাহলে গোল্ড মেডেলিস্ট ডাক্তার দুজনই কেন কোনো প্যাথলজি সেন্টার থেকে কোনো কমিসন নেয় না। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের টাকায় বিদেশ ভ্রমণের বহু সুযোগ অনায়াসে এড়িয়ে যেতে পারে। ওষুধের প্রয়োজন না হলে, কোনো রোগীকেই প্রেসক্রিপশন লেখে না। বুঝিয়ে বলে দেয় কী ভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে সাধারণ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। উপায়ান্তর না দেখে দুজনেই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ল।
অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা বড্ড কষ্ট পাচ্ছিল। মাথায় ছাতা ধরে রাখতে শোভনেরও খুব কষ্ট হচ্ছিল।
কিন্তু কিছু তো করার নেই! প্রতিদিন সংক্রমন যে হারে বাড়ছে, তাতে করে ওরও যদি হয়ে যায়! ভগবান না করুক। কিন্তু টেস্ট তো করাতেই হবে। যা দিনকাল! আর এই করোনার রূপ যে কিছু আগে থেকে বলা যায় না। তবু যদি আগে ভাগে জানা যায়,
তাহলে ট্রিটমেন্ট কিছু না থাকলেও কিছু সাবধানতা তো নেওয়া যেতে পারে।
মনটা একটু অন্যদিকে নিয়ে যেতে শোভন শুরু করল, ”আচ্ছা বলতো, লোকে যে ভগবান ভগবান বলে, তা কি ভগবান সত্যিই আছে? মানুষের কষ্ট তাহলে কি তাঁর কানে ঢোকে না?”
দুজনেই ভগবান বিশ্বাস করে। কিন্তু এখন যেন ভাইরাসকেই ওদের ভগবান মনে হচ্ছে। ভগবানের স্বরূপ ঠিক কেমন তা যেমন কেউ বলতে পারে না, তেমনি এই ভাইরাসের কী যে রূপ তা বিজ্ঞানীরা আতস কাচে বেঁধে, ল্যাবে টেনে ধরেও বুঝতে পারছে না।
এইসব আলোচনা করতে করতে অনেকটা সময় গড়িয়ে গেল। তারপর ডাক আসতেই প্রিয়াঙ্কা ঝটপট এগিয়ে গেল। টেস্ট সেরে ফেরার জন্য আবার গাড়ি বুক করল শোভন।
ফিরতে ফিরতে কত কথাই যে আলোচনা হল, তা সবই এই একটা অসুখ নিয়েই। যেন করোনা ছাড়া মানুষের আর কোনো অসুস্থতা নেই। আর সত্যি এই তিন মাসে যেন ক্যান্সার রোগও ভয়ে পালিয়েছে। পেট ব্যাথা, দাঁতের যন্ত্রণা তো দূরস্থ।
কিন্তু যতই ওরা নিজেদের ভোলানোর চেষ্টা করুক, টেনশন তো আছেই। পজিটিভ রিপোর্ট এলে ওরা যে কি করবে ভেবে পেল না। বাড়িওয়ালা যদিও ভাল, কিন্তু যদি মিউনিসিপ্যালিটি থেকে স্যানিটাইজ করতে আসে! আর তখন তো লোক জানাজানি হবেই। যদি স্থানীয় মানুষজন এসে বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে দেয়!
এইতো কিছুদিন আগের ঘটনা। ম্যূর এভিনুয়ের এক বাড়িতে এক নার্সের করোনা হয়েছে জেনে একদল লোক এসে তার বাড়ির গেট বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। এমনকি বাইরে থেকে যাতে কেউ তাদের খাবার সাপ্লাই না দিতে পারে তাই তারা সেখানে পাহারাও বসিয়েছিল। তারপর পুলিশের সাথে কি মারামারি! পুলিশ বুঝিয়ে, লাঠি চালিয়েও কাউকে শান্ত করতে পারেনি। থানার সবাই চলে গেলে বাড়িওয়ালা আর স্থানীয় লোকজন মিলে তাকে বাড়ি ছাড়া করেছিল। সোস্যাল মিডিয়া প্রায় চুপ। দুচার জনের কলম গরজে উঠলে কী হবে? আমজনতা তো আর কবি সাহিত্যিক নন। আর এইসব কথা ভাল মনে করে পড়তেও আসবেন না। ফলে সমাজের বৃহত্তর অংশের কোনো পরিবর্তন হবে না। যত দিন যাচ্ছে মানুষ যেন আর মানুষ থাকছে না। জল, বাতাস, গাছ, রোদ থেকে শুরু করে পশুপাখি পর্যন্ত তাদের নিজস্ব ধর্ম বজায় রাখে। কখনোই বিচ্যুত হয় না। শুধু মানুষ এমন উন্নত প্রাণি যার কোনো ধর্ম নেই। নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে! যেকোনও অপরাধের তাৎক্ষণিক সুব্যাখ্যাও তৈরি করে দিতে পারে। এইসব ভাবতে ভাবতে ওরা কখন যে বিরাটির ভাড়া বাড়ির কাছে এসে উঠল বুঝতেই পারল না।
বাড়ি ফিরে ফ্রিজ থেকে আগের দিনের রান্না গরম করে দুজনে খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়ল এক বিছানায়। অনেক বারন সত্ত্বেও শোভন অন্য ঘরে গেল না। অবশ্য যাওয়া গেলেও হয়তো শোভন যেত না। দুজন দুদিকে মুখোমুখি শুয়ে পড়ল। প্রিয়াঙ্কার একটু চেস্ট প্রবলেম বরাবরই আছে। জোরে হাঁটলে শ্বাস কষ্ট হয়। তাছাড়া পিপিই আর মাস্ক পরে দিনের পর দিন ডিউটে করে ওর কষ্টটা যেন একটি বেড়েছে। তাই ভয়ে সে প্রায় গুটিয়ে এসেছে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, “যদি আমার পজিটিভ আসে?”
শোভন বলল, “দেখা যাবে। অক্সিমিটার, আর অক্সিজেন পাফতো আনাই আছে। বেশি অসুবিধা হলে নার্সিং হোমে ভর্তি করে দেব। এখন তো তুই থাম।”
”আমার খুবই দুর্বল লাগছে রে। গলা ব্যাথা আর শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।”
করোনার সব লক্ষণগুলো আছে বুঝেও শোভন চুপ করে থাকল।
১.৫ অ্যালজালম একটা করে খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল দুজনেই।
পরদিন সকালে জ্বর মেপে দেখল আবার ১০২। মনে মনে নিজের বাড়ির প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের দেবীকে স্মরণ করে শোভন সাহস সঞ্চয় করল। তারপর আরো একটা প্যারাসিটামল খাইয়ে দিয়ে, ওর জন্য দুধ গরম করতে গেল। মনে মনে ও কোভিড মোকাবিলার জন্য তৈরি। প্রথমের দিকে যখন ভাইরাসটা এল, তখন সবার মতো ওরও খুব টেনশন ছিল। তাই বেলেঘাটা আইডিতে পোস্টিং পাবে জেনে একটু মুষড়ে পড়েছিল। সেটা কিছুটা ওর দিদি ছাড়া আর কেউ জানতে পারেনি।
এবারেও রাতে যখন প্রিয়াঙ্কার রিপোর্ট পজিটিভ এল ও ঘূনাক্ষরেও কাউকে জানতে দিল না।
বরাবরই চাপা স্বভাবের ছেলে শোভন। কিছুতেই নিজের সমস্যা প্রকাশ্যে আনবে না। ছোটবেলার হাড় জিরজিরে রক্ত দেখে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এই মেধাবী ছেলেটির এত সাহস যে কোত্থেকে আসে কে জানে! এইতো গত বছর যখন ওর ডেঙ্গু হল, ও কোনো ডাক্তার দেখায় নি। শুধু যে প্যাথলজি সেন্টারে ও গরিবদের বিনাপারিশ্রমিকে চিকিৎসা করে সেখান থেকে প্ল্যেটলেট কাউন্ট জেনে নিত। সারাদিন মশারির মধ্যে কাটিয়ে ওর কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা দেখে অনেকেই স্তম্ভিত হয়েছিল।
সন্ধের দিকে পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর প্রিয়াঙ্কার বহু নিষেধ সত্ত্বেও শোভন ওর কাছে একই বিছানায় শুয়েছে।
কবে বেড পাবে কেউ জানে না। করোনা রোগী বাঁচিয়ে নিজেই এখন আক্রান্ত। আর বেডের জন্য হাপিত্যেস। এদের তো আগে দেখা দরকার। তবেতো সমাজ বাঁচবে! কে কাকে বোঝাবে!
রাতে খবর এলো যে প্রিয়াঙ্কার এক কোলিগ প্রায় সেরে উঠেছে। ওর বেড খালি হতেই কতৃপক্ষ একটা ব্যবস্থা করে দেবে।
বেশ কিছুদিন আইডিতে ডিউটি দেওয়ায় শোভনের সংক্রমণ আগে হওয়া উচিত ছিল। হতে পারে ও এসিমটোম্যাটিক। ওর থেকেই প্রিয়াঙ্কার ছড়িয়েছে। কারণ প্রিয়াঙ্কার ডায়রেক্ট এক্সপোজার কিছু হয়নি। ওর কোভিড ওয়ার্ডে ডিউটি পড়েনি। শোভন ক’দিন চেম্বারে রুগী দেখাও শুরু করেছিল।
তবু প্রিয়াঙ্কার মনে একটুও অনুযোগ নেই যে, তার স্বামীর থেকে সংক্রমণ হতে পারে। এসিমটোম্যাটিক হলেও সাত খুন মাপ নয়। প্রিয়াঙ্কা তার অশক্ত শরীরে মনে মনে বাবার কথা স্মরণ করল। ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়ে খুব কষ্টে থাকতো সে। সেই কথা মনে পড়তেই তার জ্বরের কষ্টটা যেন কীভাবে বিবর্ণ হয়ে গেল।
‘ব্রেকফাস্ট করেছিস?’ ওদিক থেকে ফোনে মেসজ ভেসে এল।
‘হ্যাঁ আজ সব খেয়ে নিয়েছি।’
বেশ কিছুদিন ভোগার পর ও যেখানে চাকরি করে সেখানে একটা বেড পেয়েছে। সাত দিন বাদে আজ ও একটু খেতে পেরেছে আর সুস্থ বোধ করছে জেনে শোভনের খুব আনন্দ হল।
আজ টেস্ট হয়েছে আবার। রিপোর্ট যাই আসুক ও বাড়ি
চলে যাবে ভাবল। ১৪ দিন তো হয়ে এল প্রায়।
সবজি ও মুদিখানার কিছু মালপত্র শোভন অনলাইনে অর্ডার দিয়ে রেখেছে। আজ বিকেলেই পৌঁছে যাবে। এই
এমন সময় আইডি থেকে ফোন, “ডাক্তারবাবু আপনার কিন্তু পজিটিভ।” শোভন জানত ও পজিটিভ হবে। কিন্তু সিমটম কিছুই প্রায় নেই, একটু দুর্বলতা ছাড়া।
বাড়িতে সবাই খুব চিন্তা করবে ভেবে শোভন পজিটিভ হওয়ার কথা জানাল না। বাতাসেরও কান আছে। যদি একান সেকান হতে হতে ওদের পাড়ায় পৌঁছে যায়! যদি স্যানিটাইজ করতে লোকজন ছুটে আসে! সাধারণ লোক তো বুঝবে না কীভাবে সাবধানে ওরা থাকে।
মানসিক ভাবে খুব শক্ত ও মনে মনে ভাবল, ” ঠিক আছে। আমার যদি হয়েই থাকে, কিছুদিনের মধ্যেই এন্টিবডি তৈরি হয়ে যাবে। আমি ২ মাস বাদে একটা টেস্ট করে নেবো।”
কিন্তু একী? দুদিন যেতে না যেতেই ঘটল এক বিপদ। হ্যাঁ বিপদই তো! গত বছরের বিবাহবার্ষিকীর ছবি ফিরিয়ে দিয়েছে ফেসবুক।
প্রিয়াঙ্কা শেয়ার করেছে সেটা।
ক্যাপশনে লিখেছে–“যত দূরেই থাকো, বাড়িয়ে দিয়ো হাত।”
শোভন পোস্টটা পড়ে থম মেরে গেল। এই পরিস্থিতি না হলে ওরাতো কোথাও একটা বেড়াতে যেতোই। ভেবেছিল প্রিয়াঙ্কাকে সে একটা সারপ্রাইস দেবে। কিন্তু কী যে সব হয়ে গেল! ওর চোখটা ভিজে এল। কিছু একটা লিখতে গিয়েও থমকে গেল। মনে মনে ভাবল এ কী করল প্রিয়াঙ্কা? যদি কেউ সন্দেহ করে! যদি বুঝতে পারে সবাই! এই পাড়ার কেউ যদি ফেসবুক ফ্রেন্ড থেকে থাকে! যদি জানতে পারে কাজের মেয়েটিকে আসতে বারন করেছি! ও তো বাড়িওয়ালার এক আত্মীয়ের বাড়িতেও বাসন মাজে! এই তো সেদিন দিদি খাবার পাঠিয়েছিল। খাবারটা দূরে রেখে বিকাশদা যখন একটু উচ্চ স্বরে বলেছিল, “এখানে রেখে গেলাম। নিয়ে নিও”, তখন যদি উনারা শুনে থাকেন! আবার বাইরের গেটটাতেও জোরে শব্দ হয়েছিল। যদি বাড়িওয়ালার কানে গিয়ে থাকে! এতসব ভাবতে ভাবতে
শুনতে পেল দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। এবারে শব্দটা বেশ জোরালো বলে মনে হল। বাড়িওয়ালা নয় তো? তবে কি ওরা স্যানিটাইজ করতে চলে এলো? একটু ভয় তো পেয়েছেই ও আজ। ধীরে ধীরে আইহোলে চোখ রাখল শোভন। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না।
“আরে তুই?”
ভূত দেখার মতো সবিষ্ময়ে শোভন জিজ্ঞেস করল।
“তোকে ছেড়ে দিল?”
” আরে হ্যাঁ। ওরা তো ছাড়তে পারলেই বাঁচে। আর তাছাড়া আমার সিমটম তো আর কিছু নেই। তো চল লেটস সেলিব্রেট দ্যা ডে।”
“আরে দাঁড়া দাঁড়া। একটু দূরে দূরে থাক। আমার থেকে তোর আবার যদি?”
“ছাড় তো। আমার এন্টিবডি এত ঠুনকো নয়। বুঝলি?”
“আয় কাছে আয়” বলতে বলতে প্রিয়াঙ্কা শোভনকে গভীর
আলিঙ্গনে কাছে টেনে নিল।
কাজিরাঙার জঙ্গলে চারণরত এক শৃঙ্গ গণ্ডারের পিঠ ছুঁয়ে দুটো বসন্ত বউরী তখন গান গাইতে গাইতে আকাশে চক্কর কাটতে থাকল।
জ্বর প্রেমের গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
ভুবন যায় ভুবন আসে
প্রেম চিরন্তন
ভালোবাসা ডট কম