ভুট্টা এবং ক্ষিদের গল্পটা অণুগল্প – দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়
সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্যায় কোর্টে আসা। কোর্টের সামনের রাস্তার দোকানে চায়ের উষ্ণতা মাখতে মাখতে চলমান জীবন দর্শন।ছুটে চলা বাস, ট্রাফিক কনস্টেবলের ব্যস্ততা, পদাতিক পথচারী –সময় কাটানোর নতুন ছল। আমার চোখের তারায় হঠাৎ ফ্লাইওভারের নীচের প্রান্তিক সংসার। ছিন্ন মলিন সংসার আগলে প্রাত্যাহিকীর রান্নায় ব্যস্ত এক মা।ইট পেতে কাঠের আগুনে রান্না করে চলেছে অভাবী দিনযাপনে। ছোট্ট ছেলেটা ঘ্যানঘেনে গলায় কেঁদে চলেছে।খালি গা, একমাথা কোঁকড়ানো চুল। মায়ের মারে মাঝে মাঝে থামছে।হাতের উল্টোপিঠে কান্নার জল মুছে আবার শুরু করছে। হয়তো পেটের ক্ষিদে ওর তরল কান্না হয়ে বেরিয়ে আসছে !উল্টোদিকের ফুটপাতে ভুট্টাওলার আসর। গরম ভুট্টা নুন লেবু মাখিয়ে খদ্দেরের হাতে তুলে দিতে দিতে চিৎকার করে পথচলতি মানুষ ডাকছে। বাচ্ছা ছেলেটা বোধহয় ভুট্টা খাবার তাড়নায়। হঠাৎ একটা বাইক ভুট্টাওলার সামনে।গরম ভুট্টায় কামড় দিতে দিতে উদাসীন যুগল গল্পে মশগুল। ছোট্ট ছেলেটা একদৃষ্টে দেখে চলেছে ওদের ভুট্টা খাওয়া। এভাবেই হয়ত ক্ষিদের জ্বালা মেটাচ্ছে। খাওয়া শেষে ওরা অবশিষ্ট ভুট্টা ছুঁড়ে ফেললো রাস্তার কোণে। হঠাৎ চোখের সামনে উসেইন বোল্ট যেন ! একছুটে ফেলে যাওয়া ভুট্টা কুড়িয়ে বাচ্চাটার অবশিষ্টে কামড়। চোখে মুখে স্বর্গীয় হাসি ! চিৎকার করে আনন্দে উল্টোদিকে মাকে কিছু বলছে খুশি ভেজা।ওর মাও হাসিমুখে। চোখের সামনে আমার গরীব ভারতমায়ের মুখ। “আছে” আর “নেই” এর পার্থক্য চোখের তারার আয়নায় ! ভেজা হয়ে উঠতে লাগলো চোখের কোণ। হাসিমুখে ভুট্টা খেতে থাকা আমার ঈশ্বরকে দেখতে থাকলাম প্রাণের প্রৈতিতে !
ভুট্টা এবং ক্ষিদের গল্পটা অণুগল্প – সমাপ্তি
যে কেউ তাদের লেখা জমা দিতে চান। অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা জমা দিন পৃষ্ঠায় জমা দিন| এবং যারা লেখা জমা দিচ্ছেন। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
বাংলার রূপের সাত সতেরো
সাগর দেখার স্বপ্ন
বেড়ানোর টুকিটাকি – টিউসানের সাইকেল টুর থেকে স্কুটিতে দার্জিলিং