ও চোখে প্রেমের গল্প – সান্ত্বনা ব্যানার্জী
“তাহলে ওই কথাই রইল অমল, আমার দাদার বিয়েতে বরযাত্রী যেতে হবে, তাই আগের দিন আসবি, ঠিক আছে?” দেবুর কথায় মনে মনে খুশি হলেও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে বললাম, “যাওয়ার ইচ্ছে তো আছে, তবে সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি, ক্লাস করে….”। দুহাত নেড়ে দেবু বললো,”ও সব শুনছি না, তোর যাওয়া চাই ই চাই। এখন চললাম, না হলে ট্রেন পাবো না।” বলেই ব্যাগ কাঁধে তুলে ও বেরিয়ে পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে গেলাম ওকে একটু এগিয়ে দিতে। বিয়ের আগের দিন ব্যাগে সব গুছিয়ে নিয়ে পৌঁছে গেলাম ওদের বাড়ী।বাড়ী ভর্তি লোকজন, একদল বাচ্চা ছেলে মেয়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, লাফালাফি করছে। মেয়ে বউরা সব সাজসজ্জা করে সুধীরদার গায়ে হলুদ দেওয়ার জোগাড় করতে ব্যস্ত।হঠাৎই চোখে পড়লো, দুই বিনুনী করা কাজলকালো চোখের একটু ভীতু চাহনীর মেয়েটির দিকে।চুপ করে একা দাঁড়িয়ে আছে এক পাশে। শ্যামলা রঙ, ভারি শান্ত স্নিগ্ধ মেয়েটি তো! দেবুকে জিজ্ঞেস করতে ও বললো, ওর এক মামার মেয়ে, ভালো ছাত্রী, ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল। তারপর চোখ নাচিয়ে বলল,” কি রে! পছন্দ নাকি?”খুব রাগ হলো, বললাম,”এত বাজে বকিস, ছোটো পুঁচকে একটা মেয়ে, খুব জোর ক্লাস সেভেন কি এইট। আর আমি কলেজ স্টুডেন্ট। যত সব বাজে কথা তোর। দে, আমায় তোর ঘরটা খুলে দে,একটু বিশ্রাম নিতে হবে”। হাসতে হাসতে দেবু আমায় নিয়ে চললো ওর ঘরে। ব্যাগ রেখে বাথরুমে ঢুকলাম, ফ্রেশ হয়ে দেবুর খাটে টান টান হয়ে শুয়ে পড়লাম একটু ঘুমিয়ে নেবো বলে। চোখ বুজতেই কি আশ্চর্য! ওই মেয়েটির মুখ ভেসে উঠলো!নিজেকেই নিজে ধমক দিলাম,”এ কি অমল! এ সব কি!তুমি না কলেজ স্টুডেন্ট! ওই ছোটো মেয়েটাকে এত ভালো লেগে গেলো!এটা আবার হয় নাকি!” দরজা খুলে ঢুকলো দেবু, সঙ্গে ওই মেয়েটি! একটা ট্রে তে করে জলখাবার আর চা নিয়ে এসেছে আমার জন্য। দেবু বললো, “এই দেখ রিনি, এ আমার প্রাণের বন্ধু অমল, লেখাপড়ায় খুব ভালো, তোর মত। “আমি খুব উদাসীন ভঙ্গী তে ট্রে টা নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,”কোন ক্লাসে পড়িস?বড়ো বড়ো চোখ সামান্য তুলে বললো, ক্লাস এইটে উঠেছি।”আরও গম্ভীর হয়ে বললাম, কোন সাবজেক্ট বেশি ভালো লাগে?” মুখ নামিয়ে বললো, “বাংলা, তারপর ইংরেজী, বিজ্ঞান ও ভালো লাগে, ইতিহাস ভালো লাগে না।” বেশ ধমকের সুরে বললাম,” সেটা বললে হবে? সব সাবজেক্টই ভালোবেসে পড়তে হবে, সবেতেই ভালো নম্বর পেতে হবে। ঠিক আছে, যা, মন দিয়ে পড়াশোনা করবি। “চুপচাপ চলে গেলো। দেবু মুচকি হেসে বললো,”জলখাবার খেয়ে নিচে আয়, এখন অনেক কাজ, ঘটকালিটা পরে করা যাবে”। আচ্ছা ঝামেলা তো! কি যে বাজে বকে দেবু। জলখাবার খেয়ে একটা সাদা পাঞ্জাবী গলিয়ে নিচে নামার সময় বড়ো আয়নার দিকে চোখ পড়ে গেলো। আরে বাঃ!বেশ লাগছে তো আমাকে! রঙটা আমার সত্যিই খুব ফর্সা, চুল সামান্য কটা হলেও বেশ কোঁকড়ানো। আর টিকলো নাক। চোখ যদিও ছোটো, তবে সব মিলিয়ে বেশ একটু অন্য রকম, একটু বিদেশী ছাপ আছে, বলেও অনেকে। নিজেই নিজের বাঁ কাঁধটা একটু চাপড়ে দিলাম। বেশ খোশ মেজাজেই সিড়ি দিয়ে নামলাম। দেবুর বোন রানু আমায় দেখেই হই হই করে উঠলো, আর আমায় পাশের ঘরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো। সেখানে ওর সব বন্ধু আর তুতো ভাই বোনেরা জড়ো হয়েছে, ফাংশন হবে। আমাকে পরিচালনা করতে হবে। রিনি ও দেখি ওদের মাঝেই বসে আছে।আমি একটি চেয়ারে বসে এক এক জনকে নাম জিজ্ঞেস করে যে যা পারে তাই করতে বললাম। কেউ বা কবিতা, কেউ দু কলি গান । তারপর সব চুপচাপ। বাধ্য হয়ে আমাকেই লেকচারে নামতে হলো। মরীচিকা কাকে বলে, কেমন করে হয়, আলেয়ার আলো আসলে কি, রামধনু কখন দেখা যায়, এসব নিয়ে বেশ শিক্ষক সুলভ ভঙ্গীতে বোঝাতে লাগলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি সব নিজেদের মধ্যে গল্প করতে শুরু করে দিয়েছে ফিসফিস করে। শুধু রিনি সেই বড়ো বড়ো কাজলকালো চোখ তুলে একাগ্র চিত্তে আমার দিকে তাকিয়ে শুনছে হাঁ করে। অগত্যা ওকেই জিজ্ঞেস করলাম, বুঝতে পারলি?” ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললো। আশ্চর্য্য!যা যা প্রশ্ন করলাম সব ঠিকঠিক উত্তর দিয়ে দিলে! না!বেশ ভালো ছাত্রী বটে! পরদিন নানা কাজ, দেবুর সঙ্গে পরিবেশন, এসব করতেই সময় কেটে গেলো। এবার বর, বরযাত্রী বেরোবে, সবাই তৈরী হতে ব্যস্ত। সারাদিন রিনিকে আর দেখিনি। অনেকটা দূর বলে বাচ্চারা নাকি যাবেনা, দুচার জন মহিলা যারা যাবে, পরদিন বরকনে নিয়েই ফিরবে। কি আর করা যাবে! বেচারা ছোটরা যেতে পাবে না। কে জানে কেনো বরযাত্রী যাওয়ার উৎসাহ যেন আর নেই। যেতে তো হবেই দেবুর সঙ্গে। না, ধারে কাছে কোথাও রিনিদের দেখতে পেলাম না। যথারীতি বর, বরযাত্রী সব বেরিয়ে পড়লো। আমিও গাড়িতে উঠলাম দেবুর সঙ্গে। বিয়ে, খাওয়া দাওয়া, বাসর জাগা সব মিলে একটা রাত কেটে গেল। পরদিন বেশ একটু বেলায় ফেরা হলো। বড়ো ক্লান্ত লাগছিল, তাই সোজা দেবুর ঘরে গিয়ে শুয়ে পরলাম তলিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে। ঘুম ভাঙলো রানুর ডাকাডাকিতে,”ও অমলদা, ওঠো গো!চান করে নাও, দুপুরের খাওয়া শুরু হয়ে গেছে।” তাড়াতাড়ি উঠে বসে দেখি, রানুর সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে রিনি। একমাথা কোঁকড়ানো চুল, হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে আটকানো, সুন্দর লেশ দেওয়া হলুদ রঙের একটা ফ্রক পরে আছে, ভারি মিষ্টি লাগছে তো!”কি গো অমলদা, আমাকে তো দেখতেই পাচ্ছো না, শুধু হাঁ করে রিনির দিকেই তাকিয়ে আছো!” রানুর কথার ঝড়ে কেমন থত মত খেয়ে গেলাম। তবুও গম্ভীর হয়ে রানুকে ধমক দিলাম,” হাঁ করে দেখার আবার কি আছে? যা, পাকামি করিসনা, তোদের খাওয়া হয়ে গেছে?আমি চান করেই যাচ্ছি।” রানু রিনির হাত ধরে নাচতে নাচতে চলে গেলো। নিজের ওপর এবার রাগ হচ্ছে আমার। সত্যিই আমি ওকে হাঁ করে দেখছিলাম! ওই টুকু একটা মেয়ে, তাও আবার ভীতু, ভীতু, শান্ত। ওকে এত দেখার আছেটাই বা কি! কিছুতেই বুঝতে পারছি না, কেন এমন হচ্ছে! সত্যিই তো আমার চোখ দুটো সারাক্ষণ ওকেই খুঁজছে!দেখতে পেলেই কেমন যেন একটা…. এতো বেশ মুশকিল হলো! দূর বাপু!তাড়াতাড়ি চান করে নিচে নেমে গেলাম। নতুন বউকে নিয়ে সবাই খুব ব্যস্ত। বউভাত অনুষ্ঠান চলছে। সুধীরদা পায়েসের বাটি ধরে আছে আর নতুন বৌদি সবার পাতে পায়েস দিচ্ছে। বিয়ে বাড়ী একেবারে জমে উঠেছে। সন্ধ্যের পর নতুন বৌদিকে নিয়ে বসলো ঘরোয়া জলসা। নতুন বৌদি বেশ স্মার্ট। হারমোনিয়াম নিয়ে গুছিয়ে বসে বেশ দুলে দুলে গান ধরেছে……যৌবনে মৌ ঝরে গুঞ্জরণে, রঙ ঝরে অন্তরে কি কারণে…..। আত্মীয় পরিজন নিয়ে বেশ খানিকক্ষণ চললো গান, গল্প, কবিতা। দেবুর মামা,অর্থাৎ রিনির বাবার সঙ্গে আলাপ হলো। উনিও ভালো গান করেন, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। দেবু হটাৎ এসে তবলা নিয়ে বসে গেলো আর রিনিকে বললো,”এই মেয়ে একটা ভালো দেখে গান ধর, আমি বাজাবো।” ও বাবা!মেয়ে আবার গানও জানে! প্রথমে রাজি হয়না, পরে রাশভারী বাবার আদেশে গান করলো…..কি গাবো আমি কি শুনাবো আজি আনন্দ ধামে। অপূর্ব! কি মিষ্টি কণ্ঠ!আর নিখুঁত সুর! অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু ওই যে স্বভাব!বিশেষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা আমার ধাতে নেই। সবাই যখন,খুব সুন্দর হয়েছে, বলে প্রশংসা করতে লাগলো, আমি রিনির উৎসুক চোখের থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে দেবুকে বললাম,” ভালই আসর হলো, এবার শেষ কর, কাল তো প্রচুর কাজ।”মামার হাঁক ডাকে হারমোনিয়াম উঠে গেলো। রাতের খাওয়া দাওয়া শুরু হলো। আমিও খাওয়া সেরে দেবুর খাটে আশ্রয় নিলাম। ঘুম আসছে না। মনে গানও চলে এলো!….নিশিরাত বাঁকা চাঁদ আকাশে, চুপি চুপি বাঁশি বাজে বাতাসে বাতাসে….. বাতাসে নয়, আমার মনে, কথা নেই বার্তা নেই বাঁশির সুর বেজেই চলেছে! একি হলো রে বাবা! কিছুই বুঝতে পারছি না! থাক। আর দেবুর ঘটকালি করার দরকার নেই। ঠিক করে নিলাম ওই কাজলকালো শ্যামলা মেয়েটিকেই আমি বউ করবো, সে যতই আট নয় বছরের ছোটো হোক। তবে কিচ্ছুটি এখন বলা যাবেনা, বুঝতেই দেওয়া যাবে না। এখন পড়াশোনা করুক, বড়ো হোক। আমিও পড়া শেষ করে চাকরি বাকরি পাই, তারপর রয়ে সয়ে বললেই হবে। ব্যাস নিশ্চিন্ত। পরদিন দেবুর সঙ্গে নানা কাজে ব্যস্ত। ফুল আনতে যাওয়া, খাট সাজানো, আলোক সজ্জা, পুকুরে মাছ ধরানো, এসব করতে করতে দিন কেটে গেল। মনটা আজ বেশ ফুরফুরে! ডিসিশন নেওয়া হয়ে গেছে, ব্যাস। রাতের খাওয়া সেরে লাস্ট ট্রেন ধরে বাড়ী। সবাই অনেক করে থাকতে বললেও থাকলাম না। রিনি ছিলো রানুর সঙ্গে। আসছি রে…. বলে চলে এলাম একবারও পিছন ফিরে না তাকিয়ে। কানে এলো মাইকে গান বাজছে….. ও চোখে আমায় দেখো না, কখনো ভুলেও ডেকো না, আমি যে তোমায় ভালোবেসে ছিলেম মনে রেখো না……। মনে মনে হাসলাম। এতো মনে রাখারই বা কি আছে, ভালোবাসারই বা কি আছে!ঠিক তো করেই ফেলেছি। ডিসিশন পাক্কা। কোনো চাপ নেই। গোকুলে বৃদ্ধি হোক দুজনের। এরপর দেবুদের বাড়ী গেছি কোনো কোনো অনুষ্ঠানে। কখনও রিনি এসেছে, কখনো আসেনি, সে সব মনে নেই। নিজের পড়া শেষ। পৈতৃক ব্যবসা দেখছি আর চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। হটাৎ একদিন দেখতে পেলাম রিনিকে স্টেশনে। আমি আপ প্লাটফর্মে আর ও ডাউন প্লাটফর্মে। সেই দুই বিনুনী করা ,বড়ো বড়ো চোখ, শুধু পরনে লালপাড় সাদা শাড়ী, কলার দেওয়া ব্লাউজ এর কাঁধে ক্লিপ দিয়ে আটকানো আঁচল। ডান কাঁধে একটা বইয়ের ব্যাগ। বুকের রক্ত ছলাত করে উঠলো!কিন্তু সাবধান অমল! ভাব ভঙ্গীতে যেনো একটুও প্রকাশ না হয়ে পড়ে। একটু খানি সাইড করে ঘাড় ফিরিয়ে খুব ব্যস্ততা দেখিয়ে এই প্লাটফর্ম থেকেই বললাম,” কি রে ভালো আছিস?বাড়ীর সব খবর ভালো তো?” বলতে বলতেই একটু হাত নেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। চোখের মধ্যে কিন্তু দুই বিনুনী, ভাসা ভাসা চোখ বিহ্বল দৃষ্টি গেঁথে গেলো! সে যাক। আমার দুর্বলতা বুঝতে না পারলেই হলো। ঠিক তো করেই রেখেছি মনে মনে।শুধু একটা চাকরী পাওয়ার অপেক্ষা। বাড়ী ফিরে চিঠি লিখে ফেললাম একটা। না, কোনো খামে নয়, পোস্টকার্ড। সংক্ষিপ্ত চিঠি…… কেমন পড়াশোনা চলছে? ভালো রেজাল্ট করতে হবে, বাড়ীর সবাই ভালো আছে তো? ….. ইত্যাদি ইত্যাদি। যথারীতি সে চিঠির কোনো উত্তর পাইনি। হঠাৎই সুখবর! চাকরী পেয়ে গেছি! কেন্দ্রীয় সরকারী চাকরি! রিনি এখন কলেজ স্টুডেন্ট। দেখা হয়নি অনেক দিন। তাতে কি! চলে গেলাম ব্যাগ গুছিয়ে দিল্লী। ফিরলাম তিনমাস পর। ফিরেই সোজা মিষ্টি নিয়ে দেবুর মামার বাড়ী। মামা মামীমা খুব খুশি হলেন। কত দিন পর দেখলাম রিনিকে! কত যেন বড়ো হয়ে গেছে। আরও মিষ্টি লাগছে ওকে। সেই শান্ত স্নিগ্ধ বড়ো বড়ো চোখ, কেবল এক পিঠ খোলা চুল, রঙ যেন অনেকটা উজ্জ্বল। আমার জন্য চা মিষ্টি টেবিলে রেখে প্রণাম করলে আমায়। গাম্ভীর্য বজায় রেখে বললাম,”চাকরি করছি, বাইরে থাকতে হয়, বাড়ীতে বিয়ের কথা বলছে। তুই রাজি থাকলে আমায় একটা চিঠি লিখিস, তারপর এগোনো যাবে”। রিনি সেই কাজলকালো চোখ তুলে এবার পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে! কি ছিলো সে দৃষ্টিতে! বিস্ময়!ক্ষোভ! উপেক্ষা!অভিমান! এই চোখ তো আগে কখনও দেখিনি! আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। কেমন বিভ্রান্ত হয়ে বাড়ী ফিরলাম। কোনো কাজে মন নেই, ঘুম নেই, শুধু একটি চিঠির অপেক্ষা….! এলো সেই বহু কাঙ্ক্ষিত চিঠি! না, কোনো খামে নয়, পোস্টকার্ড….!
পূজনীয় অমলদা, আশা করি সবাই ভালো আছো। আমাদের গ্রামে দোল দেখতে এসো। জেঠু জেঠিমা কে প্রণাম জানাই। তুমি আমার প্রণাম নিও। ছোটদের স্নেহাশিস জানাই। ইতি তোমার স্নেহের বোন রিনি। হ্যাঁ, একদম এই চিঠি!আমি একাই এই স্বপ্ন গড়ে ছিলাম!সেই ভীতু ভীতু ডাগর চোখে কি সত্যি কোনো ভালো লাগার , প্রেমের ছোঁয়া ছিলো না! এতটাই ভুল করলাম আমি! নাকি সব বুঝেই এই প্রতিশোধ নিলো! ওকে যে আমি বুঝতেই দিইনি, সযত্নে এড়িয়ে গেছি, এতটুকুও প্রেমের চিন্হ রাখিনি আমার আচার ব্যবহারে। এমন কি মজার ছলে একটু চুল ধরে নেড়ে ও দিইনি গু কোনোদিন! ঠিক শাস্তি হয়েছে আমার। এতো খানি ঔদাসীন্য, পৌরুষের অহংকার ভেদ করে শান্ত মেয়েটি ভালোবাসার স্পর্ধাই পায়নি। একবার ভাবলাম চলে যাই, বুঝিয়ে বলি সব। পাড়লাম না। সেই বাধ সাধলো পুরুষমানুষ হওয়ার অহংকার!আজ সেই গানের কথা গুলো যেন চাবুকের মত আমার কাছে ফিরে এলো……. ও চোখে আমায় দেখো না! কখনও ভুলেও ডেকো না!আমি যে তোমায় ভালোবেসে ছিলেম মনে রেখো না!…না…না…না…না! অনেক বছর হয়ে গেল, রিনি অন্যের ঘরনী। কাজের জগতে ব্যস্ত থেকে কেটে গেলো আমারও অনেক গুলো বছর। সংসারী হয়েছি আমিও। তবুও আজও অবসরে চোখের ওপর ভেসে ওঠে সেই কাজলকালো চোখ। মনে মনে আজও জিজ্ঞেস করি ….. সত্যিই একটুও ভালো বাসিসনি আমায়! …..এই কথাটা অজানাই রয়ে গেল!
ও চোখে প্রেমের গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
জ্বর
ভুবন যায় ভুবন আসে
প্রেম চিরন্তন