ভানুপ্রিয়ার আশ্চর্য ঘোড়া রূপকথার গল্প – মিঠুন মুখার্জী
বহু বছর আগের এক কথা। জীবনপুর নামে এক রাজ্যের প্রজাদের দুরবস্থার সীমা ছিল না। রাজ্যের রাজা অনন্ত বর্মা মারা যাওয়ার পর রানী বিশ্বরূপা সিংহাসনে বসেন। যেহেতু রাজদম্পতীর কোন সন্তান ছিল না, সেহেতু রানীই দায়িত্বভার তুলে নিয়েছিলেন। রাজা যতটা প্রজাহিতৈষী ছিলেন, রানী একেবারে তার উল্টো। তিনি প্রজাদের উপর জোর জুলুম করতেন। খাজনা দেড়গুন-দ্বিগুণ নিতেন। প্রজারা দিতে না পারলে জমি বাড়ি সব কেড়ে নিতেন। রাজা অনন্ত বর্মা মারা যাওয়ার পর রানীর তিন ভাই ও মামা জীবনপুরে আসেন এবং রানীর থেকেও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন। জীবনপুর থেকে প্রজারা ভয় পেয়ে চলে যেতে থাকে। অশ্ব গুপ্ত, শ্রুত গুপ্ত ও চন্দ্রগুপ্ত রানীর তিন ভাই ও মামা প্রতাপ সিংহ। প্রজাদের উপর এদের অত্যাচারও ক্রমে বেড়ে যেতে থাকে।
রানী বিশ্বরূপার বউ হয়ে আসার অনেক আগে রাজা অনন্ত বর্মা রূপনগর নামক এক রাজ্যের একটি জঙ্গলে শিকারে গিয়েছিলেন। রূপনগরের রাজা অর্জুন বর্মা অনন্ত বর্মার খুব প্রিয় বন্ধু ছিলেন। দুজনে মিলে শিকার করতে যেতেন। সঙ্গে থাকতেন সেনাপতি ও কিছু সৈন্য। একবার শিকার করার সময় হঠাৎ অনন্ত-বর্মার সামনে একটি বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে। বন্দুক থেকে গুলি বের হলেও তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। ঠিক তখন একটি ঘোড়া জঙ্গলের দিক থেকে হঠাৎ এসে বাঘটির সামনে দাঁড়ায়। ঘোড়ার দুই চোখ থেকে জ্যোতি বের হয়। বাঘটি মুহূর্তের মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এই দৃশ্য দেখে সকলে অবাক হয়ে যান। তারা বুঝে উঠতে পারেন না মুহুর্তের মধ্যে কি হলো। এমন সময় এক অপরূপা সুন্দরী নারী সেই ঘোড়ার পিঠে চেপে তাঁদের সামনে আসেন। রাজা অনন্ত বর্মা তার পরিচয় জানতে চান। তখন সেই নারী বলেন— “আমি আপনাকে রক্ষা করেছি। আমার আশ্চর্য ঘোড়ার অসীম ক্ষমতা। যার কাছে এই ঘোড়া বশ হবে তাঁর কথামতো সব অসম্ভব কাজ সম্ভব করে দেবে। আমি এই জঙ্গলের এক জোংলি রাজার মেয়ে।নাম ভানুপ্রিয়া। এই জঙ্গলে যে সমস্ত মানুষ বিপদে পড়েন তাদের আমি রক্ষা করি। আমার পবন নামের এই ঘোড়াটি সময়ে পাখা মেলে উড়তেও জানে। যাকে বলে পঙ্খিরাজ ঘোড়া। এটি আমার আগে আমার বাবা রাজা দোবরুপান্নার বশ ছিল। তিনি গত হয়েছেন পাঁচ বছর হয়েছে। তখন থেকেই ও আমার বশ। আমার কথামতো ও সব করে।” ভানুপ্রিয়া নিজে যে জাদুবিদ্যা জানেন, সেটা কারকে জানান না। সে নিজেও অসীম শক্তির অধিকারিণী।
ভানুপ্রিয়াকে দেখে অনন্ত বর্মার খুব ভাল লেগেছিল। তাছাড়া ঐ আশ্চর্য ঘোড়াটির প্রতি লোভও হয় তাঁর। তিনি তখন ভানুপ্রিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ভানুপ্রিয়া বলেন— “আপনারা আমার দাদা বিনয় পান্নাকে গিয়ে বলুন। যদি সে রাজি হয়, তাহলে আমিও রাজি। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে। বিয়ে আমি করবো কিন্তু আমার এই জঙ্গল ছেড়ে আমি যেতে পারব না। আপনাকে হয় আমার সঙ্গে এই জঙ্গলে থাকতে হবে, নতুবা আপনি বিয়ে করে আমাকে এখানে রেখে যাবেন। আপনার সময় বিশেষে এখানে আসবেন।”
অনেক ভেবেচিন্তে রাজা অনন্ত বর্মা রাজি হলেন। তারপর বন্ধু অর্জুন বর্মাকে নিয়ে বিনয় পান্নার সঙ্গে কথা বলেন এবং নিয়ম মেনে রাজকুমারী ভানুপ্রিয়াকে বিবাহ করেন।অর্জুন বর্মা বুঝতে পেরেছিলেন অনন্ত-বর্মা মূলত ঘোড়াটার জন্যই ভানুপ্রিয়াকে বিয়ে করেছিলেন। একরাত্রি সেই জঙ্গলে ভানুপ্রিয়ার সঙ্গে কাটিয়ে পরদিন নিজ রাজ্যে ফিরে এসেছিলেন রাজা। ভানুপ্রিয়াকে কথা দিয়েছিলেন, প্রতি মাসে সে দুইদিন করে জঙ্গলে এসে থাকবেন। কিন্তু সে তাঁর কথা রাখেননি। জীবনপুরে ফিরে আসার পর তিনি গভীরভাবে চিন্তা করেন— “এভাবে সম্পর্ক থাকে না। এক জায়গায় চাষ আর এক জায়গায় বাস সম্ভব নয়।” তিনি যেহেতু ভানুপ্রিয়ার শর্ত মেনেই বিয়ে করেছিলেন, সেহেতু তাঁর ওপর জীবনপুরে আসার জন্য জোর খাটাতে পারেননি। ফলে পিতা-মাতার দেখা বিশ্বরূপাকে বিবাহ করেন। বিবাহের সময় অনন্ত বর্মার পরিবার বুঝতে পারেননি, বিশ্বরূপা খুব লোভী এবং তাঁদের পরিবারে এসেছেন তাঁদের সম্পত্তির জন্য। ভাইগুলো এক একটা শয়তান। তাছাড়া এরা সকলেই ডাইনি
ভানুপ্রিয়া ও রাজা অনন্ত বর্মার সম্পর্কের কথা রাজা বিশ্বরূপাকে কখনো জানাননি। রানীও কারোর কাছ থেকে জানেন নি। রাজা অনন্ত বর্মাকে রানী ছলনা করে হত্যা করেছেন বলে শোনা যায়। কিন্তু রানীর ও রানীর ভাইদের ভয়ে কেউ এই সত্য উন্মোচন করার সাহস দেখান না।
এদিকে ভানুপ্রিয়া মাসের-পর-মাস রাজা অনন্ত-বর্মার অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু রাজা আর সেখানে যাননি। তাই মনে মনে কষ্ট পান তিনি। মন ভারাক্রান্ত হলেও মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করার কাজ সে প্রতিনিয়ত করে যান। একদিন দুজন কাঠুরিয়াকে একটা হাতি তাড়া করে নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ পবন ঘোড়াটি হাতিটার সামনে এসে দাঁড়ায় এবং হাতির থেকেও অনেক বড় হয়ে যায়। তারপর সামনের পা দুটি দিয়ে হাতিকে লাথি মারে। ফলে হাতিটি মহাশূন্যে উড়ে যায় এবং নিচে পড়ে মারা যায়। আরেকদিন একটি ডাকাতের দল নতুন বিয়ে করে যাওয়া এক দম্পতির সোনাদানা বন্দুক দেখিয়ে লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন তাদের কান্না শুনে ভানুপ্রিয়া ঘোড়াটি নিয়ে সেখানে যান এবং ঘোড়াটি ডাকাতদের সামনে পাঁচিল হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তারপর দড়ির মতো তার লেজ অনেক বড় হয়ে যায়। লেজে ডাকাতদের বেঁধে নিয়ে মহাশূন্যে উড়ে যায় এবং উপরে গিয়ে লেজের বাঁধন শিথিল করে দেয়। নিচে পড়ে ডাকাত গুলো সব মারা যায়। দম্পতির সমস্ত কিছু ভানুপ্রিয়া ফিরিয়ে দেন।
কিছুদিন পর আর একটা ঘটনা ঘটেছিল। বনের মধ্যে একটি বাচ্চা কান্না করছিল। ভানুপ্রিয়া কান্না উদ্দেশ্য করে গিয়ে দেখেন— একটি সাত-আট বছরের বাচ্চা।বাবা-মার সঙ্গে জঙ্গলে ঘুরতে এসে হারিয়ে গিয়েছিল সে। বাবা-মাকে না দেখতে পেয়ে ভয়ে কাঁদছিল। তার কান্না শুনে একটা বাঘ তার দিকে এগিয়ে এসেছিল। ঠিক তখনই ভানুপ্রিয়ার কথামতো ঘোড়াটি মুখ দিয়ে আগুন বের করে।ভয় পেয়ে বাঘটি তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তারপর বাচ্চাটিকে নিয়ে ভানুপ্রিয়া ঘোড়ায় করে তার বাবা-মাকে খুঁজে বার করেন এবং বাচ্চাটিকে তাদের হাতে তুলে দেন।
একদিন পবনকে নিয়ে ভানুপ্রিয়া রাজার খবর নিতে জীবনপুরে যান।ঘোড়াটি জীবনপুরে ঢুকেই জোরে জোরে ডাকতে থাকে। ভানুপ্রিয়া বিপদের ইঙ্গিত পেয়ে আর এগোয় না। সেখানকার এক চাষীর কাছ থেকে তিনি সবকিছু জানতে পারেন। রাজার মৃত্যুর জন্য কে দায়ী, রানীর অত্যাচার, তাঁর ভাইদের নিষ্ঠুর আচরণ—- সব জেনে যায় সে। জীবনপুরের কারো কাছে নিজের পরিচয় সে দেয় না। সেদিনকার মতো রূপনগরের জঙ্গলে ফিরে আসেন তিনি। রাজার মৃত্যু সংবাদে মনটা ভারাক্রান্ত হয় তাঁর। বিধবা নারীর সমস্ত নিয়ম পালন করেন সে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, তাঁর স্বামীকে যারা ছলনা করে হত্যা করেছেন তাদের তিনি উচিত শিক্ষা দেবেন। তাঁর অধিকার সে পুরোমাত্রায় বুঝে নেবেন।
এরপর একদিন সকালবেলা ভানুপ্রিয়া তাঁর পবনকে নিয়ে জীবনপুরে পাড়ি দেন। বিনয় পান্না তাঁর দলবল নিয়ে জীবনপুর ও রূপনগরের সীমানায় আশ্রয় নেন। প্রথমেই তাঁরা সরাসরি যুদ্ধ করতে চান নি। এদিকে ভানুপ্রিয়া প্রাসাদের বাইরে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন সন্ধ্যা হওয়ার অপেক্ষায়। রাতে যখন রানী ও তাঁর ভাইরা যে যার ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তখন সে পবনের পিঠে চড়ে উড়ে-উড়ে রানির ঘরে প্রবেশ করেন। ডাইনি বিশ্বরূপাকে ঘোড়ার পিঠে তুলে নিয়ে যখন প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে আসছিলেন, তখন রানীর ঘুম ভেঙে যায়। হঠাৎ সে নিজের রুপে ফিরে আসেন। রানী বিশ্বরূপা আসলে একজন ডাইনি। সে তাঁর জাদুবিদ্যা ভানুপ্রিয়ার উপর প্রয়োগ করার আগেই ভানুপ্রিয়া তাঁর জাদুবিদ্যায় তাকে বন্দি করে ফেলেন। তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলেন। ডাইনি বিশ্বরূপা তাঁর কাছে জানতে চান— ‘কে সে? কি চান? তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? কেন নিয়ে যাচ্ছেন?’ ডাইনির প্রশ্নের উত্তর স্বরূপ ভানুপ্রিয়া তাঁর ও অনন্ত-বর্মার সম্পর্কের কথা তাঁকে জানান। ডাইনি এরপর হাসতে থাকে আর বলেন— “রাজা অনন্ত বর্মাকে আমি হত্যা করেছি দু’বছর আগে। ভালোই হয়েছে, তখন না মারলে আজ তো মরতই। তুইও আমার হাতে মরবি।” এরপর ভানুপ্রিয়া বিশ্বরূপাকে বলেন— “রাজাকে তুই কেন মারলি বল? ও তো তোকে বিশ্বাস করত।” এই প্রশ্নের উত্তরে ডাইনি বলেন— “ওকে আমি প্রজাদের জন্য ভাবতে অনেকবার বারণ করেছি, কিন্তু আমার কথা শোনে নি। আমার ভাইদের জীবনপুরের সিংহাসনে পদ দেওয়ার কথা বলেছিলাম, কিন্তু ও রাজি ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে নিজের আসল রূপে ফিরে এসে ওকে হত্যা করতে হয়েছে। আমি সিংহাসনে বসে খুব খুশি।” এই কথাগুলো বলে বিকট হাসি হাসেন বিশ্বরূপা। ভানুপ্রিয়া বিশ্বরূপার এই ডাইনি রূপ দেখে কিছুটা অবাক হন। ডাইনি আরো বলেন— “শুধু রাজাকেই নয়, আমি এই রাজ্যের অনেক প্রজার রক্ত পান করেছি এযাবত। তাছাড়া রাজা অনন্ত-বর্মার পিতা-মাতা আমার বিপক্ষে যাওয়ায়, ওদেরও হত্যা করে আমি রক্ত পান করেছি।” এই কথা শুনে ভানুপ্রিয়া প্রচন্ড রেগে যান। জাদুবিদ্যা দ্বারা ডাইনিকে ছোট করে দেন। তারপর পবন পা দিয়ে ডাইনির বুকের উপর বারবার আঘাত করে। কিন্তু ডাইনি মরে না।
এরপর ভানুপ্রিয়া তাঁর জাদু আয়না বের করেন। ডাইনি ও তার ভাইদের মৃত্যু রহস্য আয়নার মধ্যে দেখতে পান। জীবনপুরের রাজপ্রাসাদে দুটি খাঁচার মধ্যে মোট পাঁচটি পাখি আছে, সেই পাখিগুলোর মধ্যে এদের প্রাণ লুকিয়ে আছে। এরপর বিশ্বরূপাকে একটা বোতলের মধ্যে পুরে ফেলেন তিনি। তখন সবাই ঘুমাচ্ছিলেন, পাখিগুলো ঝিমোচ্ছিল। ভানুপ্রিয়া খাঁচা থেকে পাখি গুলো বের করে একটা একটা করে মুন্ডুচ্ছেদ করতে থাকেন, আর রানীর ভাইরা ও মামা তাদের ঘরে দাপাদাপি ও রক্তাক্ত হয়ে চিৎকার করতে লাগে। ধীরে ধীরে তারা মারা যান এবং অদৃশ্য হয়ে যান। কিন্তু যে পাখিটির মধ্যে ডাইনির প্রাণ ছিল, সেটিকে ধরতে গেলে ঠোকর দিয়ে উড়ে যায়। পাখি উড়ে গেলে ভানুপ্রিয়ার নির্দেশ মতো পবন পাখা মেলে ভানুপ্রিয়াকে নিয়ে তার পিছু নেয়। অনেকক্ষণ উড়ার পর অবশেষে ভানুপ্রিয়া পাখিটিকে ধরে ফেলেন। এরপর পাখিটিকেও হত্যা করেন। সঙ্গে সঙ্গে বোতল পেটে ডাইনি মাটিতে পড়ে যান ও ছটপট করতে করতে মারা যান। মুহূর্তের মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে যান।
জীবনপুরকে ডাইনিদের হাত থেকে মুক্ত করে ভানুপ্রিয়া নিজে রাজ সিংহাসনে বসেন। রূপনগর থেকে দাদা বিনয় পান্নাকে জীবনপুরে নিয়ে আসেন। তাঁর ওপর দায়িত্বভার অর্পণ করেন। কিভাবে চলে যাওয়া প্রজারা পুনরায় জীবনপুরে ফিরে আসবে তার ব্যবস্থা করেন। প্রজাদের জমি,অর্থ,ধান দান করেন। চলে যাওয়া প্রজারা রানীর উদারতা দেখে পুনরায় জীবন পুরে ফিরে আসেন। রানী ভানুপ্রিয়া অনন্ত-বর্মার একটা স্ট্যাচু নির্মাণ করেন। তাঁর মহৎ নীতির কথা দেশ-দেশান্তরে ছড়িয়ে দেন। তাঁকে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে আশ্চর্য ঘোড়া পবন। পবনের চেষ্টায় অসম্ভবকে সম্ভব করেন তিনি। অনন্ত-বর্মার মতো রানী ভানুপ্রিয়ার সুশাসনে প্রজারা আবার সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে থাকে।
ভানুপ্রিয়ার আশ্চর্য ঘোড়া রূপকথার গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
শ্রাবণ সন্ধ্যা
শাস্তি
তিতির কান্না