ট্রেন ভৌতিক গল্প – জিনিয়া কর
রবার্ট বনরক্ষী হিসেবে মাত্রই চাকরিতে যোগ দিয়েছে, পশ্চিম সিংভূমের সিমডেগা বনাঞ্চলে। রাতের বেলা রুটিন গস্ত লাগাতে গিয়ে ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়ে দ্রুত গতিতে
একটা ট্রেনকে চলে যেতে দেখে তৎক্ষণাৎ ফোন করলো হেড অফিসে। স্যার একটা যাত্রীবোঝাই ট্রেন রোরো নদীর ভাঙ্গা ব্রিজের দিকে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে। কিছু করুন স্যার, বিশাল একটা অঘটন হবে না হলে।
অফিসার হালকা গলায় বললেন শান্ত হও রবার্ট। ওই রেলপথটা পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে ইংরেজ আমলেই। ওই পথ দিয়ে কোন রেল যাতায়াত করে না এখন আর ।তুমি যা দেখেছো ওটা একটা ইল্যুশন মাত্র। ওই পথে যারা যায়, তারা অনেকেই দেখেছে ওই ট্রেন টা। ।
এর পেছনে একটা লোকমুখে প্রচলিত গল্প আছে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, তখন ইংরেজ আমল । এলাকার খনি অঞ্চল থেকে খনিজ পদার্থ, ঐ লাইনে মালগাড়িতে করে দুর্গাপুর রানীগঞ্জের কারখানায় যেতো।
খনি মালিক ইংরেজরা আদিবাসী খনি শ্রমিকদের সাথে মানবেতর ব্যবহার করত । একবার খনি শ্রমিকরা এই নিয়ে আন্দোলন করে, কয়েকজন গোরা কে পিটিয়ে মেরে ফেলে, আর তাদের পরিবারের সাথে দুর্ব্যবহার করে । কোম্পানি সাহেব কি ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ? মশা মারতে কামান দাগার মতন কান্ড করলো ওরা । সশস্ত্র সেনা নামিয়ে দিল বনাঞ্চলে। নারকীয় হত্যাকান্ড শেষে গ্রাম কে গ্রাম আগুন লাগিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরতে রাতের ট্রেনে উঠে বসে গোরা সৈনিকেরা । সেই ট্রেন নাকি আর কখনোই তার গন্তব্যে পৌঁছায়নি। যাত্রীবোঝাই একটা ট্রেন কোথায় যে হাওয়া হয়ে গেল তার কোন হদিস মিলল না। সেই ট্রেনটাকেই নাকি মাঝে মাঝে দেখে লোকে । গাল গল্প বলে উড়িয়ে দিতে পারতাম। যদি না, আমি নিজেও দেখতাম ট্রেনটা। তবে ভয়ের কিছু নেই। কাজ সেরে ফিরে এসো
ট্রেন ভৌতিক গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
শ্রাবণ সন্ধ্যা
শাস্তি
তিতির কান্না