দুনিয়ার রকমফের সায়েন্স ফিকশন গল্প – সাহানা হাজরা
দুনিয়ার রকমফের
এক
মহালয়া কি মিথ্যে মা? সরস্বতীর এই প্রশ্নে মা দুর্গার চক্ষুচড়ক গাছ।- কি বলছিস রে?মহালয়া না হলে আমাদের আগমনের নিউজটা সকলে পাবে কিভাবে?- টেথিস্কোপ ঘোরাতে ঘোরাতে সরস্বতী বলল– তবে বলছো মা মহালয়া যেমন হয় তেমন হবে?
- হ্যাঁ হবে।হতেই হবে। আমাদের আগমন বার্তার একটা বড় অনুষ্ঠান তো আর বন্ধ হতে পারে না!
-নিশ্চিন্ত হলাম। বুঝলে মা তবে যাই বাবার কাছে।বাবার শরীরটা একটু চেক করে আসি।কাল থেকে বাবার শরীরটা ভালো নেই।
-হ্যাঁ, ভালো করে চেষ্টা করিস। কে জানে দিনরাত গাঁজা টেনে আবার কোনো রোগ বাঁধানো কিনা।
-বাবা দেখি তোমার কোথায় অস্বস্তি হচ্ছে।
- অস্বস্তি??? ধুৎ আমার কিচ্ছু হয়নি।
- তা তোমার কিছু হয়নি বললে তো শুনবো না। আমার নিউ টেকনোলজির টেথিস্কোপ ! তোমাকে দিয়েই শুরু করব বাবা বুঝলে। যদি কিছু রোগও থাকে ধরা পড়বে। জোরে শ্বাস নাও তো দেখি।
- সরস্বতী, এই সব টেকনোলজি আমার কাছে তুচ্ছ ব্যাপার। আমি তোকে দেখাতে পারি…….
- আহ্ বাবা আমাকে চেকআপটা করতে দাও। গাঁজা খাওয়া তোমার বন্ধ। এখন মর্ত্যের পরিস্হিতি খুব খারাপ।
- আমার গাঁজা খাওয়া অটুট থাকবে। তবে তোর কথায় কয়েকদিন বন্ধ রাখতে পারি। আর হ্যাঁ মর্ত্যের অবস্হা আমি ধ্যানে জেনে গেছি। সরস্বতী দুচোখ ওপরে তুলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
দুঘণ্টা পরে……..
- আমাকে তো বল্ নিউনর্মাল টেকনোলজি থেকে তোরা চার ভাইবোনে কি শিখলি?মা দুর্গার কথায় সরস্বতী বলল — মা অনেক কিছু !!! তোমাকে আমি সব বুঝিয়ে দেবো।তোমার বানানো ল্যাবরেটরীতে তো আমিই সর্বেসর্বা।বাবা আবার বলছে গাঁজা নাকি মাত্র কয়েকদিনের জন্য বন্ধ করবে।
- ঐ একটা মানুষ। রোগ বাঁধলে যে কি হবে সেটার জ্ঞান তো নেই।
- এখন ছাড়ো মা এইসব কথা। আজকে রাত্রে বিশ্বকাপটা দেখতেই হবে। এই বলে সরস্বতী একটা ব্যাডমিন্টন হতে তুলে নিল।
-ও হ্যাঁ বিশ্বকাপ তো আমিও দেখব। আজকে তো ব্রাজিলের খেলা। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মধ্যে। কে জিতবে বলত?
-তুমি কিছু বোঝ না, জান না মা! খেলার তুমি কি বোঝ?এটা তোমাকে বলতে হবে? ব্রাজিল মা ব্রাজিল।
দুই
- করোনার আবহে টেকনোলজির এত উন্নতি যা কিনা মঙ্গলগ্রহে বানানো ল্যাবরেটরীকেও হার মানায়।বুধে এই উন্নততর টেকনোলজি এসে পৌঁছোয় নি।এখন তবে কিভাবে বুধকে তার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যাবে?এই সমস্ত ইনফরমেশন মঙ্গলে যেন না পৌঁছোয় বুঝলেন ক্লিভ?মার্কারের কথার উত্তরে ক্লিভ বললেন– হুম, টেকনোলজির যদি এতই উন্নতি সাধন করতে হয় তবে মঙ্গল আর শুক্রের সাহায্যের তো প্রয়োজন পড়বে।
- আপনি ব্যাপারটা বুঝছেন না মার্কার।আমাদের অপ্রাকৃতিক জগতে এ্যালিয়ানদের তো একটা প্রেস্টিজ আছে।মনুষ্যপ্রজাতি এত উন্নত।আমরা হলাম এ্যালিয়ান।আমাদের উন্নতি কে হার মানাচ্ছে এই ‘মানুষ’ নামক প্রজাতি।এরা আমাদের থেকেও উন্নত এটা মানতে পারছেন?
- রবার্টকে একবার ডাকতে হচ্ছে।ও না এলে মানুষের তৈরি জিনিসের রহস্যটা উদঘাটন সম্ভবপর হচ্ছে না।
- ইয়েস, আপনি ভুল কিছু বলেন নি।মানুষের কাছে আমরা হেরে যাব?প্রেস্টিজের ব্যাপার।
- একটা গোলে বাজিমাত।
এই কথা বলতে বলতে রবার্ট ঘরে ঢুকল।
-একি এ তো মেঘ না চাইতেই জল!!! মার্কারের এই কথা শুনে রবার্ট বলল কেন???আমাকে মনে করা হচ্ছিল নাকি!!! কি ব্যাপার রবার্ট?আর কেন?
-তোমাকে ডাকার কথাই বলা হচ্ছিল। কেন? সেটা না হয় তোমায় ক্লিভ বলবে। আগে তো বলো তুমি কি বলছিলে? তুমি কোন ম্যাচের কথা বলতে বলতে ঢুকলে???
-ইয়েস মার্কার ব্রাজিল জিতেছে হুররে!!!
-হুররে!!!
মার্কারও এক্সাইটেড হয়ে পড়ল।
-ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা? আমিও দেখেছি কালকে ম্যাচটা। এক গোলে ব্রাজিল মারমার কাটকাটভাবে জিতে গেছে। জানিনা ক্লিভ কি করেছে কালকে। ম্যাচটা মিস করেছে। ও তো এখন ‘মানুষ’ নামক প্রজাতিকে নিয়ে ব্যস্ত।
এই বলে ক্লিভের দিকে তাকাল মার্কার।
তিন
- বুঝলে পৃথ্বিশ নতুন জিনিস আবিষ্কারের পর একটা সেলিব্রেশন তো হবেই।তোমার এই আবিষ্কার !!! ভ্যাকসিন !!! কত বড় ব্যাপার !!!
- না, একদম না কাজল। সামান্য ভ্যাকসিনই আমি আবিষ্কার করেছি।বিশেষ কিছু করিনি।পৃথিবীকে করোনা মুক্ত তো করতে পারিনি।
- তা হলেও পৃথ্বিশ একটা সেলিব্রেশন……..
- ওকে কাজল। তুমি যখন এতই ফোর্স করছো তাহলে………
- বলছো? ওকে থ্যাঙ্ক ইউ।অ্যারেঞ্জমেন্ট করতে হবে।
-আজকে আর এইসব নিয়ে কথা নয়। ম্যাচটা আজকে মিস করতে চাই না। সানু কোথায়?
-ওহো ,ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ আছে আজকে। এতো জানা ম্যাচ ব্রাজিল জিতবে।
-তাহলে কাজল ডবল সেলিব্রেশনের জন্য তুমি রেডি?
-ইয়েস বস। - আজ থেকে তোমার গাঁজা খাওয়া বন্ধ।
- কি বলছো উমা?
- হ্যাঁ, ঠিকই বলছি। অ্যাই গনেশ এদিকে আয় তো।
- হ্যাঁ, বলো মা।
- দেখো গনেশকে নিউসার্জারি করে পাঠিয়েছে।আমাদের মর্ত্যবাসীরা ওর শুঁড় নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল।মাস্ক পরতে পারছিল না।তোমার তো সে ব্যাপারে কোনো ভ্রূক্ষেপই নেই।
- তা তো দেখতেই পাচ্ছি।শুঁড়ের বদলে গনেশ এখন মাস্ক পরছে।
- তোমার জন্যও নতুন মাস্ক পাঠিয়েছে।
- কে পাঠিয়েছে?
- আমার বাড়ির লোকেরা।সেটাও বুঝছো না?
- আমি তো মাস্ক পরবো না উমা।
- জানি যেহেতু ওখান থেকে পাঠিয়েছে তাই তুমি পরবে না বলছো।দেবতা বলে কি………
- ব্যাস থামো।
- বাবা একটা পারমিশন নিতে এলাম।সরস্বতীর এই কথায় শিব বলল — কি পারমিশন?
- আমাদের যে নতুন ডাক্তারখানা তৈরি করতে চলেছি সেখানে অশ্বিনী দাদাদের ডেকে নেব।
- না, নতুন ডাক্তারখানা তৈরি করার মত জায়গা নেই।
- কী বলছো বাবা? তুমি আমাদের কৈলাসের উন্নতি চাও না?আমাদের তো নতুন – নতুন ইনফরমেশন নিয়ে ল্যাবরেটরিকে আরও উন্নত প্রযুক্তিযুক্ত করতে হবে।
- না, আমরা দেবতা। গনেশ এটা মাথায় রাখো।আমরা মানুষের মত করতে পারি না।চাইলেও পারি না।
- তাহলে আমার বানানো ল্যাবরেটরির কি হবে স্বামী?
- তুমি চাইলেই সেই জায়গাকে পুনরাবস্হায় ফিরিয়ে আনতে পারো দূর্গা।তোমার বানানো জিনিসের আমি প্রশংসা করি।তবে ভুলে যেও না মানুষের নকল আমরা করতে পারি না।আমাদের দেবত্ব আছে সেটা ভুলে যেও না।
-তুমি ঐ নিয়েই থাকো। আমি তো ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার ম্যাচটা দেখব আজকে।বিশ্বকাপ বলে কথা। ওরা তো এখন থেকেই টিভির পর্দার সামনে বসে গেছে। দুর্গার এই কথায় শিব বলল – টিভি না কি একটা বললে ওটাও তো মর্ত্যবাসী তোমার জন্য পাঠিয়েছে। - হ্যাঁ ঐ জন্য তুমি ম্যাচটা আর দেখো না ওরা পাঠিয়েছে বলে। তুমি বরং ধ্যানে দেখে নিও।
দুর্গার এই কথায় শিব কিছুটা লজ্জাবোধ করে বলল – এমনিতেও আমার চোখটায় কিছু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যা রঙীন টিভি তোমার!!!
-ঠিকই বলেছ টিভি টিভি।
এই বলে পার্ব্বতী ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেল। - রবার্ট তাহলে তোমার বানানো ‘গোপনাস্ত্র’ কি তুমি পৃথিবীর বুকে নিক্ষেপ করলে?
- হুম, করেছি।ক্লিভ।কিভাবে এত তাড়াতাড়ি ‘মানুষ’ নামক প্রাণী আমাদের টেক্কা দিয়ে এই দুর্বিষহ পরিস্হিতিতে এগিয়ে যাচ্ছে?ওদের বাইনোকুলার, বায়োস্কোপের কাছে আমাদের যন্ত্রপাতি হার মানছে কিভাবে?
- হ্যাঁ এত তাড়াতাড়ি শিক্ষাব্যবস্হাকে অনলাইনে নিয়ে চলে এল কিভাবে?বলতে পারেন মার্কার?
- ক্লিভ আপনি উত্তেজিত হবেন না।মানুষের মস্তিষ্ক উন্নত।এই শিক্ষাব্যবস্হা আগেও ছিল।ভ্যাকসিনও আবিস্কার করছে।ওদেরকেই তো শ্রেষ্ঠ জীবের তকমা দেওয়া হয়েছে।
- না, মার্কার আমি পারছি না মেনে নিতে কিছুতেই।একমাত্র আমরাই বায়োস্কোপ,বাইনোকুলারে গোটা বিশ্ব দেখতে পেতাম।আবিষ্কার করেছিলাম।আজ মানুষ কিভাবে আমাদের থেকে এগিয়ে যেতে পারলো?
- ক্লিভ তো ভুল কিছু বলছেন না মার্কার।আমরাই বেশী শক্তিশালী।মানুষ নামক প্রজাতি নয়।ওরা তুচ্ছ।এই বলে রবার্ট টেবিলে তার হাতের দু-চার ঘা বসিয়ে দিয়ে বলল- “আই ক্যানট টলারেট হিউম্যানবিং।আই জাস্ট ক্যানট বিলিভ দ্যাট।দে ডিসকভার ভ্যাকসিন।আই ওয়ান্ট এভরি ইনফরমেশন অ্যাবাউট দ্যাট ডিসগাসটেড হিউম্যানবিং।উই আর দ্য বেস্ট,এভার অ্যান্ড ফরএভার উই উইল বি দ্য বেস্ট।”
-আপনি চিন্তা করবেন না ক্লিভ। আমরা আর্জেন্টিনার মত নয় ব্রাজিলের মত খেলব। মানুষরা আর্জেন্টিনা আর আমরা ব্রাজিল। আমরাই জিতব। দেখে নেবেন আপনি।
রবার্টের এই কথায় ক্লিভ বলল – আপনি সেই বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ নিয়ে আসছেন। বিশ্বকাপ নয় রবার্ট এটা আমাদের প্রেস্টিজের ব্যাপার।
-এইভাবেই আমরা মানুষের থেকে এগিয়ে যাবে বলছেন? তবে তাই হোক। আমাকেও বিশ্বকাপ দেখতে হবে।দেখি এবার মানুষরা আমাদের থেকে কিভাবে এগোয়।
মার্কার বলল – মানুষরাই তো ওদের বুদ্ধি দিয়ে ম্যাচটা জিতছে ক্লিভ। আমাদের মত ম্যাচটা ওরা খেলে না।বুদ্ধি আছে ঐ প্রজাতির এটা মানতেই হবে বুঝলে ক্লিভ। - এই কাজল শুনছো? সংক্রমণ অনেকটা কমেছে।বেশ ভালো লাগছে।
- তোমার ভ্যাকসিন অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
- জানো সানু আজকাল কেমন কল্প বিজ্ঞানের জগতে চলে গেছে।ও অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে রিসার্চ করছিলো না?
- হ্যাঁ সে তো করছিলো।- জানো কাজল ও বলছিলো……..
- এই যে সানু তোমার কথাই হচ্ছিলো।তুমি যে রিসার্চ করছিলে সেটা কি কমপ্লিট?
- না পৃথ্বিশ দা এখনও সেটা কমপ্লিট হয়নি।তবে একটা ঘোরতর সর্বনাশের আশঙ্কা আছে।
- কোন্ সর্বনাশের কথা বলছো সানু?
- দেখ্ সানু খুলে বল্।তোর এই সব আবিষ্কারে আমার ভয় করে।
- না দিদি।কিচ্ছু হবে না।তুই জিজুকে নিয়ে সেলিব্রেট কর্।
তিন দুনিয়ার জীব।
- প্রথম দেবতা, যারা কিনা নিজেদের দেবত্ব ঘোচাতে নারাজ।কিছুতেই মানুষের সমতুল্য নিজেকে ভাবতে পারে না।অথচ মানব রূপেই তাদের মিথ গুলো আমাদের পাঠ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।শিব,উমা/দূর্গা,সরস্বতী এঁনারাই মূর্তিরূপে পূজ্য।এঁনারাই দেব-দেবী রূপে পূজিত হয়ে থাকেন।এঁনাদের অহংকার আর দৈবশক্তির কাছে আমরা মানব জাতি তুচ্ছ।আমরা মানুষ।পাপকে লাঘব করবার জন্য আমরাই এই দেব-দেবীর দ্বারস্হ হই।
- দ্বিতীয় এ্যালিয়ান,এরাও নাকি বেশী শক্তিধারী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম জীব অপেক্ষা।কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না মানব প্রজাতির উন্নতিকে।নিজেদের ক্ষমতার দম্ভকে এরা কিছুতেই ভুলে যেতে পারেনা।এরা মানুষেরও আগে।এটাই প্রমাণ করার তাগিদে এতটাই আক্রোশ এদের।
- তৃতীয় মানুষ,এরাই শ্রেষ্ঠ জীব।এদের নিয়েই যত মাথাব্যাথা দুই দুনিয়ার জীবের।
“হিউম্যানবিং আর কলড দ্য বেস্ট.
নাথিং ইস হ্যাপেন্ড হোয়েন
হিউম্যান’স ক্রিয়েশন হ্যাজ ফলেন ডাউন,
দে আর দ্য বেস্ট.
দিস ডিসগাসটেড হিউম্যানবিং
দ্যাট ইস কলড বাই দ্য এ্যালিয়ানস,
দে লিভ ইন দ্য ওর্য়াল্ড,
দে ক্যান এভরিথিং.
এভরিথিং ইস পসিবল বাই দ্য হিউম্যানবিং.
হিউম্যানবিং ক্যান এভরিথিং.
দে ক্যান ক্রিয়েট রোবট.
ইফ দে ওয়ান্ট গুড ফর এভরিওয়ান দে ডু,
ইফ দে ওয়ান্ট ব্যাড ফর এডরিওয়ান দে ডু.
নোবডি ক্যান চেঞ্জ হিউম্যান’স ডেসিশন.”
মানুষেরা তাই কোরাসে গাইতে পারে-
“উই আর দ্য হিউম্যানবিং.
উই ক্যান ডিসকভার এভরিথিং.
নাথিং ইস ইমপসিবল টু আস.
উই নো এভরিথিং.
উই ক্যান ক্রিয়েট এনিথিং.”
দেবতাদের গান –
“আমরা পূজো নিতে পারি
দিতে পারি না।
মানুষের সমতুল্য হতে পারিনা। নিজেদের জায়গা ছেড়ে,
মানুষকে সে জায়গায় বসাতে পারিনা।
মানুষ হবে শ্রেষ্ঠ সেটা ভাবতে পারিনা।
আমরা দেবতা,আমরা দেবতা,
আমরা দেবতা।
এটাই হল আমাদের একমাত্র মন্ত্র।”
‘জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।’মানুষের এই মূল মন্ত্রকে এই দেবতাগণ মেনে নিতে নারাজ।
এ্যালিয়ানদের গান –
” হোয়াই?হোয়াই?অ্যান্ড হোয়াই?
হিউম্যানবিং’স ব্রেন সো ফাস্ট?
হোয়াই?
উই নো এভরিথিং,
উই ক্যান ক্রিয়েট ল্যাবরেটরি অলসো
উই ডিসকভার,
উই ক্যান সি এভরিথিং.
উই আর দ্য বেস্ট.”
প্রতীকি দুনিয়ায় কল্পবিজ্ঞানগত কতকিছুই মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত।সবকিছুর আবিষ্কারক হতে চায় মানুষ।আবিষ্কার করছেও।
কল্পনাকে বাস্তবে রূপায়িত করছে মানুষই।পক্ষীরাজ ঘোড়া সেটাও তো রূপকথার এরোপ্লেন।আর যেটা বাস্তবে মনুষ্যসৃষ্ট হেলিকপ্টার বা এরোপ্লেনের প্রতীক হয়ে উঠেছে এই পক্ষীরাজ।
দেবতাদের দুনিয়ায় বিচরণ করলেও তো কার্তিকের ময়ূরও তো বাস্তবের এরোপ্লেন।আর রূপকথার সেই বিখ্যাত লায়লা-মজনুর মাদুর সেটাও তো প্লেনের থেকে কম কিছু নয়।তৎক্ষণাৎ যত্রতত্র যাতায়াত করা যায়।শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘পাগলা গনেশ’-এর বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো এই সবই অলীকজগতের হলেও কনসেপ্টে প্লেনেরই বাস্তবায়িত রূপ মনুষ্য সৃষ্ট এরোপ্লেন /উড়োজাহাজ।
- হাতে কাগজের তৈরি এরোপ্লেন থেকে বিশাল পাখাওয়ালা এরোপ্লেন বেশ ভালো জানিস তোতন?
- হ্যাঁরে বুলবুলি।আমি বড় হয়ে ঐরকম এরোপ্লেন বানাবো।
- হাহাহা তোতন তুই কি সব বলছিস?আমি তো বুঝতেই পারছি না।মা শোনো তোতন বলছে এরোপ্লেন বানাবে।
- হ্যাঁ সেতো বানাতেই পারে।বড় হয়ে তোতন তাহলে পাইলট হবে।
- আইজ্যাক নিউটন কি আবিষ্কার করেছিল কে বলতে পারবে আমাকে?
- আমি।
- বুলবুলি বলবে?বলো।
- মাধ্যাকর্ষণ শক্তি।
- এবার বলো সেটা একটা ফল দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল।সেটা কোন্ ফল?
- আপেল।
- তোতন ইস রাইট।
কল্পবিজ্ঞানগত মস্তিষ্কপ্রসূত অনেক ধারণারই বাস্তব রূপায়ণ মানুষ ঘটিয়ে ফেলেছে।মস্তিষ্কপ্রসূতই তো কার্টুনের কথোপকথন।যার মাধ্যমে একটা সমাজচিত্রকেও তুলে ধরা যায়।সত্যজিৎ রায়ের ছয়টি শ্রেণিচিত্রণের নিদর্শন সেই ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন।’এই সবই তো কল্পনাপ্রসূত।
- তাহলে ল্যাবরেটরি হচ্ছে না?
- না হচ্ছে না।বাবা পারমিশন দেয়নি।
- তাহলে আয়ুর্বেদই কি এই কৈলাসে চিরস্হায়ী হবে সরস্বতী?
- ইয়েস অশ্বিনীদ্বয় দা।আমার বানানো কেমিস্ট্রির বন্ডিং,কেমিক্যাল বন্ডিং এই সবই জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বাবা।
- কী বলছো সরস্বতী?জ্বালাবে কেন?
- হ্যাঁ একটুও লিকুইড যাতে মাটিতে না পড়ে।তাহলেই এখানকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘনিয়ে আসবে।
- এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন তোমার বাবা শিব?
- হ্যাঁ।- মাতা কি চান?
- মাতাও তো মেনে নিয়েছেন।আমিও মানতে বাধ্য।
- আমরা তাহলে সেখানে কোন্ ছাড়্।ভোলানাথের কথাই সর্বগ্রাহ্য।
- আমাদের আর একসাথে কাজ করা হল না।(কাঁদো – কাঁদো গলায় দ্বিতীয় অশ্বিনীকুমার)।
- ইয়েস ড্রপলেটস্।ইয়েস,ইয়েস,ইয়েস।
- হোয়াট ইস দিস্ রবার্ট?(বড় বড় চোখ পাকিয়ে ক্লিভ)।
- দিস্ ইস কলড ড্রপলেটস্।
- হাউ ডু ইউ নো?
- ইয়েস মার্কার আমি মানুষের কথা শুনেছি।ওরা এই জিনিসটাকে ‘ড্রপলেটস্’ বলছে।
- ওহ্ আই সি !!!
- ইয়েস ফার্স্ট অফ অল ফিভার হচ্ছে।মারাত্মক শ্বাসকষ্ট।দেন কাশি।
- কাশি মিনস্?
- কাফ,কাফ মার্কার কাফ।
- ওহ্ আই সি !!!
- মানুষ মরছে মার্কার।
- হোয়াট?এটা হতে পারেনা?ওদের মরতে দেওয়া যাবে না।আমাদের হারিয়ে ওরা মরে জিতে যাবে?এটা হতে পারে না।
- ক্লিভ ইউ ডোন্ট বি এক্সসাইটেড।উই আর ট্রায়িং টু ডু সামথিং।
- উই আর নট ডক্টরস্।উই আর সাইনটিস্ট।
- নো মার্কার।স্টপ ইট।ইউ জাস্ট টেল মি এভরিথিং অ্যাবাউট দিস্ ডিজিজ।
- ডোন্ট বি এক্সসাইটেড ক্লিভ।ডোন্ট বি।আমরা বিশ্বকাপে মানুষের সাথে ব্রাজিলের মতই খেলব।
- ওয়েট কাম ডাউন অ্যান্ড লিশন টু মি ভেরি কেয়ারফুলি।
- একটা মারাত্মক কিছু ঘটতে চলেছে।আমার আশঙ্কা যথাযথ।
- কী বলছো তুমি সানু?তুমি কি সেই এ্যালিয়ানদের হদিশ পেলে নাকি?
- ইয়েস পৃথ্বিশ দা।
- হোয়াট ইস্ দিস্ সানু?
- ওরা এখানে ওদের তৈরি যন্ত্র পাঠিয়েছিল।একজন এসেওছিল।
- হোয়াট?
- ইয়েস।
- ওরা অ্যাকচুয়্যালি কি জানার চেষ্টা করছে?আর ওদের অস্তিত্ব আছে?হাউ ইস্ দিস্ পসিবল সানু?
- সেটাই তো এখন আমার একটা বড় পরীক্ষা বলতে পারো।যেদিন পুরোপুরি ইনফরমেশন পাবো সেদিন থিসিস কমপ্লিট হবে।
- এরা কি ক্ষতি করে?
- করলে তো যখন এসেছিল তখনই কিছু একটা করে যেতে পারতো।বাট করেনি।
- তাহলে কি এদের হৃৎপিণ্ড আছে?
- এ্যালিয়ান জিজু এ্যালিয়ান।সেই রিসার্চ টাই চলছে। মানুষের ভেতরেই দেবত্ব আরোপিত।মানুষই বিভিন্ন জিনিস আবিষ্কার করে নানারকম ভয়ানক সংকেত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।মানুষই তাই শ্রেষ্ঠ জীব।
কনগ্র্যাচুলেশন সানু।
- থ্যাঙ্ক ইউ জিজু।
- তোর থিসিসের সাকসেসের জন্য যে পার্টিটা রেখেছি সেখানে দুটো সেলিব্রেশন একসঙ্গে হয়ে যাবে।
- দুটো মানে?
- তোর জিজুর চায়নার সঙ্গে ডিল ফাইনাল করার নিউজটা এখনও তুই পাসনি?
- না কাজল এখনও ওকে বলিনি।
- কনগ্র্যাচুলেশন জিজু।
- থ্যাঙ্ক ইউ সানু।তোমার থিসিসের লাস্ট রিসার্চ পেপার কি ছিল?
- একজনের গোটা বডির স্ক্যান রিপোর্ট।
- গোটা বডির স্ক্যান?
- ইয়েস জিজু।সঙ্গে আরও দুজন ছিল।তাদের মধ্যে একজন ‘ক্ষমাচিহ্ণ’ রেখে গেছে।
- ‘ক্ষমাচিহ্ণ’?হোয়াট ইস্ ‘ক্ষমাচিহ্ণ’?
- ইয়েস জিজু।টেকনোলজিতে জানা গেছে ওরা আমার রিসার্চ জানতে পেরে গিয়েছিলো।আরও অনেকেই এটার রিসার্চার ছিল।সৌভাগ্যবশত আমারই রিসার্চের ডিভাইসে ধরা পড়েছে একটা লেখা।যেটার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্ষমাচিহ্ণ’।
- কি লেখা?
- ‘ফরগিভ ক্লিভ’।
- তার মানে ক্ষমাপ্রার্থনা করছে?
- ইয়েস জিজু।
- বাট ওরা কি ক্ষতি করলো?
- কিছুই না।তবে ক্লিভ কিছু করার চেষ্টা করেছিলো।সাকসেস হয়নি।’ফরগিভ ক্লিভ’ লিখে গেছে।
- এই ক্লিভেরই কি বডির স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়া গেছে?
- না,জিজু।তিনজন ছিল জানা গেছে।একজনের বডির স্ক্যান।তবে এটা ক্লিভেরই নিজের লেখা কিনা মানে ওটা ক্লিভ ই ছিল কিনা জানা যায়নি।বাকি দুজনের কোনো স্ক্যান ধরা পড়েনি।
- ওহ্ আই সি !!!- আই অ্যাম ভেরি হ্যাপি টুডে তোমাদের দুজনের সাকসেসে।
- থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাডাম।(দুজনে একসাথে)।
-তুমি তো এশিয়াড গেমকেও হার মানাচ্ছো সানু। কিপ ইট আপ এগিয়ে যাও।
পৃথ্বিশের কথা শুনে সানু মনে মনে প্রাউড ফিল করল।
মানুষ পারেনা এমন কোনো কাজ নেই।এ্যালিয়ানদের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে ফেলেছে।মানুষই টেকনোলজির প্রণেতা।তারাই তো যত ফোন,ল্যাপটপ,ট্যাব জাতীয় জিনিস গুলোর আবিষ্কর্তা।কমিউনিকেশনের সুবিধায় এত কিছু আবিষ্কার মানুষের দ্বারাই সম্ভব।তাই তো আজ চায়না দুনিয়াকে মুঠোর মধ্যে ধরে ফেলছে।
- তাহলে চিনে প্রথম এসেছিল করোনা ভাইরাস।কোন্ দেশে কে বলতে পারবে?
- হুবেই প্রদেশে।
- বুলবুলি ইস্ রাইট।
- বুলবুলি বড় হয়ে কি হতে চায়?
- আমি পাখিদের নিয়ে রিসার্চ করতে চাই।
- বাহ্ ভালো জিনিস।- পাখিদের কিচিরমিচির ডাক আমার বেশ ভালো লাগে।সেটা নিয়ে রিসার্চ করবো।
- ওহ্ তা বেশ ভালো।
- তাহলে আমাকে তুমি বলো সিংহের গর্জনকে কি বলে?
- রোর।
- আর ইউ সিওর?
- ইয়েস ম্যাডাম।
কল্পবিজ্ঞানের জগতে বিচরণকারী সকলেরই মস্তিষ্কপ্রসূত নতুন-নতুন ভাবনা,নতুন-নতুন আবিষ্কার আজ সারাবিশ্বকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছে।
খাদ্যদ্রব্যাদির দুনিয়া :
- স্বামী আজকে ফলাহার ছাড়া কিছু জুটবে না।- সেকি !!! বাড়িতে চাল নেই?
- না, একটা দানাও নেই।
- তাহলে এখন উপায়?
- উপায় বলতে আমার বানানো ল্যাবরেটরির কিছু জিনিস ছিল।তুমি তো সব জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলে।
- ল্যাবরেটরিতে ঐসব বানানো যেত?
- আজ্ঞে না।আমার বাড়ির লোকেরা কিছু মালপত্র পাঠিয়েছিল।
- সেগুলো জ্বালিয়ে দিলে?
- তুমি তো জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলে।সেখান থেকে কিছু জ্বালানি গ্যাস সংগ্রহ করা গেছে আর কিছু নয়।
- আমি কাঁচামাল জ্বালাতে কখন বলেছিলাম তোমাকে পার্ব্বতী?বুদ্ধি নেই তোমার?
- ও এবার বুঝেছি।ওদের পাঠানো মাস্ক পড়বে না,অথচ ওদের পাঠানো জিনিস খাবে।নিজে বেরোবে না বলে?
- জ্বালানি গ্যাস খাবো শুধু?(রাগে গড়গড় করতে করতে)।
- তাহলে তোমার মন্ত্রবলে আলু,ফুলকপি,বাঁধাকপি ক্রিয়েট করো না।
- ভালোই ইংরাজী বলতে শিখেছ দেখছি।ঐ সব আমার মন্ত্রে ক্রিয়েট হয়না।
- কালোযাদু কিনা।
- পার্ব্বতী !!!
- অবাক হওয়ার কিছু নেই তোমার ব্ল্যাকম্যাজিক ছাড়া আর কিছু নেই।আমি তোমাকে ডিভোর্স দিতে চাই।
একসাথে এতদিন আছি এবার কেমন খিদে খিদে পাচ্ছে।মার্কার।
- মানুষরা রোজ খায় আমরা বছরে একবার।
- রবার্ট কে আসতে দাও দেখি রিসার্চ করে রাখা ভেজাল বাদ দেওয়া খাবার গুলো ঠিক আছে নাকি নতুন করে একই রিসার্চ চালিয়ে খাবার বানিয়ে খেতে হবে?মানুষদের তো কিছুই হয়না ঐ সব খাবারে।আমাদের পেটের রোগ হতে পারে।
- এই যে রবার্ট এসে গেছো তুমি?তাহলে আর দেরি কিসের?
- কী ব্যাপারে বলছো বলতো মার্কার?
- ক্লিভের খিদে পেয়েছে।
- হ্যাঁ সেকি?এখনও চারদিন বাকি আছে।খিদে পেতে।
- না রবার্ট ওর তাড়াতাড়ি পেয়েছে।কি করা যায় ভাবো।
- রিসার্চ করা ভেজাল ছাড়া খাবার বানাতে হবে তারপর তো খাওয়া।
- কেন খাবার বানানো ছিল তো?
- হ্যাঁ ক্লিভ ছিল।বাট ওগুলো সব ফারমেনটেড হয়ে গেছে।ফাঙ্গাস হয়ে গেছে।বানানো ভুল ছিল তাই তোমার শরীর খারাপ হয়েছিল।মনে নেই তোমার।
- সে কি?না আমার কিচ্ছু মনে নেই।এক্ষুণি বানাও।- মার্কার প্লিজ হেল্প মি।
- ইয়েস রবার্ট।
- আগের বার ঘি
- এর খাবার ছিল।দ্যাট ইস কলড ডালডা।একটু বিদেশী জাতীয় ছিল।তাই রবার্টের অবস্হা শোচনীয় হয়ে গিয়েছিল।
- তাহলে এবারে কি করবে?
- একটু দেশী হবে।
- শুকনো লাল লঙ্কার গুঁড়ো থেকে ভেজাল সরাবো।
- অ্যাঁ সেটা কিভাবে হবে?
- ক্লিভ ইউ ডোন্ট ডিস্টার্ব।
- কিভাবে?হাউ?মার্কার জিজ্ঞেস করলো।
- ইঁটের গুঁড়ো মিশিয়ে।- হোয়াট ইস দিস?আর কিভাবে এটা কখন পেলে?- ‘ফরগিভ ক্লিভ’ লেখার সময় ইঁটের গুঁড়ো নিয়ে এসেছিলাম মার্কার।
হাইব্রিডের জিনিস চারিদিকে।
- বুঝলাম।
- কি বুঝলে কাজল।
- হাইব্রিডের জিনিস।সব্জি।
- হ্যাঁ……পেটের গণ্ডগোল……
- তবে কি খাবে?
- দুধ আর পাঁউরটি।
- ঐ খেয়ে আমাদের চলবে?
- হ্যাঁ কেন চলবে না।অনায়াসে চলে যাবে।
- তোমাকে আমি বললাম হাইব্রিড তো কি হয়েছে?তা বলে কি সব্জি খাবো না?তুমি সিরিয়াসলি নিয়ে নিলে !!! এই কথাটা তুমি এইভাবে বুঝলে।
- সিরিয়াসই তো খাদ্য?
- তুমি সৃষ্টি করবে সব্জি?
- হ্যাঁ,অক্সিন দিয়ে সব্জি হবে।
- ওটা হাইব্রিড !!!
- তাহলে কি চাষ করবো?
- আমি জানিনা !!! তুমি ভ্যাকসিন খাও।
- ভ্যাকসিন কেও খায় না।নেয়।
- তুমি বরং স্যান্ডউইচ খাও।
- হ্যাঁ ওতে একটু গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিও।ওতেও আবার ভেজাল আছে।
- ব্রেডে গোলমরিচ গুঁড়ো?তাও আবার ভেজাল বের করবে?
- হ্যাঁ,শুকনো পেঁপে বীজটা ভেজাল।
- তাহলে খেওনা।দুধ দিয়ে খেয়ে নাও।
- দুধেও তো ভেজাল আছে।রেগে যাবে না……..
- দুধে ভেজাল !!! হ্যাঁ আমি মিশিয়েছি জল দিয়ে।
- সেটাও একটু ভালো করে পরীক্ষা করে তবে খাবো।যেমন দেখো – একটা স্বচ্ছ কাচে যদি দুধের ফোঁটা ফেলা হয় তাহলে ফোঁটাটা কিছুক্ষণ স্হির থেকে সাদা দাগ ধীরে – ধীরে গড়িয়ে যাবে।জল মেশানো দুধটা পড়েই যাবে।কোনো দাগ থাকবে না।তবে শোনো মাখন তোলা দুধে এটা করতে যেও না। কোনো ঘন জিনিস মেশালে এই পরীক্ষা কিন্তু হবে না।
- কে করবে?এই সব?তুমি দুধ খাবে কি বলো।ভেজাল বের করা দুধ…….
- না,না পরীক্ষাটা করা অবশ্য কর্তব্য।
তিন দুনিয়ার খাদ্যদ্রব্যাদি বিষয়ক মানসিকতা আর তাদের আবিষ্কার সত্যিই আশ্চর্যজনক।মানুষের মস্তিষ্ক যে কত উন্নত সেটা বাকি দুনিয়াকে হার মানিয়েছে।মানুষের কাছ থেকেই ধার করছে।পৃথিবীর বুক থেকেই বস্তু সামগ্রী নিয়ে গিয়ে ভেজাল দূরীকরণ ঘটাচ্ছে।যেখানে দেবতারাও পক্ষপাত করছে।জ্বালানি আবিস্কার মানুষই করেছে কোনো দেবতা নয়।তাহলে দেবী পার্ব্বতী জানলো কি প্রকারে জ্বালানি জিনিসটা কি?মর্ত্যবাসীদের কাছে আগমনে দেবীর বুদ্ধি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।অপরদিকে এ্যালিয়ানরা নিজেদের দোষ – এূটি নিজেরাই ধরে ফেলছে।কিভাবে ফাঙ্গাস হল খাবারে।সেটা কিভাবে পরিশুদ্ধ করা যায়।এই সবই।ইঁটের গুঁড়ো নিতে সেই তো পৃথিবীর বুকেই পা ফেলতে হলো।মানুষের থেকে খেতে শিখলো।আর একদিকে পড়ে থাকে মানুষ।এই তুচ্ছ মানব প্রজাতি বুদ্ধির শিরোপায় সবার প্রথমে জায়গা দখল করে আছে।যত কিছু ভেজাল দূরীকরণের পদ্ধতি সবই তৈরি করা মানুষের।মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব।বাকি দুই জীব মানুষের নকল করে। তবে একপক্ষ মেনে নিতে নারাজ।সেটা হল দেবতা গণ।
মানুষই যে আসল তার একটা উদাহরণ — ও আই সি !!!
- মিস্টার সব্যসাচী (সানু) কনগ্র্যাচুলেশন।
- থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।
- তাহলে তোমার রিপোর্ট অনুযায়ী ওটা কি ঐ এ্যালিয়ানটাই ছিল?
- অনুমান ভিত্তিক রিপোর্টে সেটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে।বাট আমি ক্লিয়ার নই।
- ওহ্ ইউ আর সো ইনটেলিজেন্ট।ব্রেভো।
- নো স্যার এই ব্রেভো টা তুলে রাখুন।আমার গবেষণা এখনও শেষ হয়নি।
- তাহলে তুমি কি তোমার রিসার্চ এখনও চালিয়ে যেতে চাও।
- ইয়েস স্যার।আমি চাই এটা সিকরেট থাকুক আপনার আর আমার মধ্যে।
- ওকে মাই চাইল্ড।অ্যাস ইউ উইশ।
- থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।
- আমাকে কি তোমার নেক্স্ট স্টেপ বলা যেতে পারে?- ইয়েস স্যার হোয়াই নট?বাট টপ সিকরেট।
- তাহলে নাও টেল মি।
-‘ ফরগিভ ক্লিভ ‘ লেখাটা আমার মনে হয়না যে ক্লিভ ই লিখেছে। - তাহলে তোমার কি মনে হচ্ছে?
- ক্লিভ কে আমরা ধরতে পারিনি।ওর একটা সাথীকে ধরা গেছে।ওর ঐ সাথীটাই লিখে গেছে কথাটা।আমার তাই মনে হচ্ছে।
- ওহ্ আই সি।অন দ্য স্পট তুমি কিছু পেয়েছিলে।
- ইয়েস স্যার স্পটে আমি গিয়েছিলাম।বাট কিছু পাইনি।আমাকে আর একবার যেতে হবে ওখানে।
- ভেরি কেয়ারফুলি মাই চাইল্ড।
- ইয়েস ইউ ডোন্ট বি অ্যাফ্রেড স্যার।আই ক্যান ম্যানেজ মাইসেল্ফ।আমি শুধু ক্লিভকে ধরতে চাই।ওদেরকে আর একবার এই পৃথিবীর বুকে নিয়ে আসবো।ইউ ডোন্ট ওরি।
- টেক কেয়ার মাই চাইল্ড।গড ব্লেস ইউ।
- থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।
মানুষের মগজ আর বাকি দুই দুনিয়ার জীবের মগজের একটু হেরফের তো আছেই।সেই কারণেই জটাধারী শিবকেও আসতে হয়েছে এই মর্ত্যে।তেমনই মিথ গুলোতে কথিত আছে।এ্যালিয়ানরা সেদিক থেকে মানুষের কাছে মাথা নত করে নিজেদের সেফ পজিশনে রাখতে সমর্থ হয়েছে।
দুনিয়ার রকমফের সায়েন্স ফিকশন গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
স্বপ্নভঙ্গ
নতুন পৃথিবী
নক্ষত্রকন্যা