রক্ষে দে মা কালী রম্যরচনা – প্রদীপ দে
গিন্নি রান্নাঘর থেকে হাঁক পাড়লো,—- কিগো শুনছো?
আমি চুপ করে না শোনার ভান করলাম।
আবার চিৎকার, —- শুনতে পারছো?
আমি এখন চালাক হয়ে গেছি। শিবের মতন ভোলে বাবা হয়ে যেতে চাইছি। কাগজে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় নিবিষ্ট হয়ে লেপ্টে রয়েছি শুধু মুখমণ্ডলটাকে আড়ালের অভিসারে রেখে।
হুঙ্কার কাকে বলে! তীব্র থেকে তীব্রে,– বলি কানের মাথা খেয়েছো নাকি?… শয়তানের বাচ্চা?কায়দা ও ভালোই জানে। জানে কোন ফুলে কখন কি ভাবে কাজ হবে। আমারও তাই চালাকির ঘুম ভেঙ্গে গেল।
এবার সাড়া না দিলেই বিপদ! তাই সাড়া দিলাম, —- কি হল এত চেঁচামেচি কেন?
— পিরিত হয়েছে তাই। দয়া করে একটু নাড়িয়ে ঢেলে দাও !
মাথা ঘুরে গেল, কথা শুনে নয়, বউয়ের ভয়ে আর চিৎকারে। তাড়াতাড়ি লুঙ্গিতে গেঁট মেরে উঠে দাঁড়ালাম। কিন্তু গেলাম না। কারণ বন্ধুদের মানা মনে পড়ে গেল -গতকালের আড্ডার গৃহীত সিদ্ধান্ত। বালিশে কোমড় বেকিয়ে নিজেই নিজেকে শয়ন দিলাম।
আরে উচবুক শুয়ে পড়লে যে? বলছি তরকারি যে পুঁড়ে গেল ……
— আমি পারবো না।এবার আমি শিখে গেছি খেলতে। সব সময় সাড়া দিয়ে দিয়ে এদের লাই দিয়েছি। আর এরা মাথায় উঠে নেচেছে। এবার উল্টো কায়দা দেখো বাছা!
গিন্নি একেবারে রেগে চুড়!– আরে এ কোন হারহাবাদে রে? উঠেও যে শুয়ে পড়লো যে ?
আমিও কম যাই না, তেজে জানালাম, —- আমি পারবো না।হ্যাঁ এইবার থেকে এই প্ল্যানেই চলবো। সবেতেই না। না করে দেবো সব কাজে, সব হুকুমে, তাহলেই জব্দ হবে এরা।
আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে গতকাল এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এইবার থেকে এদের গুলামিতে আর কাজ করবো না, তাহলেই এরা জব্দ হবে কত লড়াই করবে করুক না!
মিনিট খানেক গেল, আমি মুচকে মুচকে মনে মনে হাসছি আর মজা করছি। চুলেতে এক টান খেলাম।হুঁড়মুঁড় করে কে যেন চুলের মুঠি ধরে টান মেরে একটা হ্যাঁচকা টান দিল আর অমনি আমি বিছানা থেকে ছিটকে মেঝেতে একেবারে উদোম নগ্ন হয়ে পড়লাম, লুঙ্গি খুলে একাকার!
মাথা কাজ করলো না সব ভুলে গিয়ে কোঁ কোঁ আওয়াজ করে মিউ মিউ শব্দে জানালাম — — আরে মজা করছি তাও বোঝো না? কি করতে হবে বলো আমি করে দিচ্ছি। আমি সব পারবো। স-ও-ও-ব!
বাপরে! রক্ষে দে মা কালী! যেমন চলছিল তেমনই চলুক, কাজ নেই খবরদারিতে!
রক্ষে দে মা কালী রম্যরচনা – সমাপ্তি
যে কেউ তাদের লেখা জমা দিতে চান। অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা জমা দিন পৃষ্ঠায় জমা দিন| এবং যারা লেখা জমা দিচ্ছেন। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
বাংলার রূপের সাত সতেরো
সাগর দেখার স্বপ্ন
বসন্ত ফেরে